ভিন্ন গ্রুপের রক্ত পুশ, সেই রোগীর কিডনি ফুলে গেছে

আরটিভি নিউজ

সোমবার, ১০ জুন ২০২৪ , ১০:১৭ পিএম


ভিন্ন গ্রুপের রক্ত পুশ, সেই রোগীর কিডনি ফুলে গেছে
ছবি: সংগৃহীত

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে এক বৃদ্ধার শরীরে দেওয়া হয়েছে অন্য গ্রুপের রক্ত। ভিন্ন গ্রুপের রক্ত দেওয়ায় হাসপাতালের শয্যায় মৃত্যুর প্রহর গুনছেন ৭৭ বছর বয়সী সালেহা বেগম। নতুন করে বোনম্যারো, কিডনি ও হার্টের সমস্যা দেখা দিয়েছে। ঘটনাটি গত ২০ মে ঘটলেও সোমবার (৩ জুন) সকালে নতুন করে রক্ত দিতে গেলে বিষয়টি জানাজানি হয়। 

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১০ জুন) যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন সালেহার স্বজনরা। সালেহা বর্তমানে জেনারেল হাসপাতালের মহিলা পেয়িং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার বাড়ি যশোরের মনিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া ইউনিয়নের খড়িঞ্চা হেলাঞ্চি গ্রামে।

এদিন দুপুরে হাসপাতালে দেখা যায়, রোগী কথা বলতে পারছেন না। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছেন। মৃত্যু পথযাত্রী সালেহা বেগমকে দেখতে আসছে স্বজনরা। তাদের অনেকেই বৃদ্ধাকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করছেন।  

বিজ্ঞাপন

সালেহা বেগমের মেয়ে নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, ‘মা কিছু খেতে পারছেন না। ভুল রক্ত দেওয়ার আগে তার কিডনির রেঞ্জ ছিল ১ দশমিক ৫। এখন তা ফুলেফেঁপে ২ দশমিক ২২ হয়েছে। প্রস্রাবের নালীতে ইনফেকশন দেখা দিয়েছে।’

আরেক মেয়ে শিরিনা আক্তার বলেন, ‘হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকের ভুলের কারণে আমার মা এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তিনি খুব অসুস্থ। ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিচার চাই।’ 

এদিকে গত ৬ জুন সালেহার শরীরে ভিন্ন গ্রুপের রক্ত পুশের ঘটনায় হাসপাতালের চার সদস্যের তদন্ত কমিটি করে হাসপাতাল প্রশাসন। কমিটিকে আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

বিজ্ঞাপন

তদন্ত কমিটির প্রধান গৌতম কুমার আচার্য বলেন, ‘রোগী শঙ্কামুক্ত নয়। নিয়মিত চিকিৎসা চলছে।  তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না।’

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হারুন আর রশিদ বলেন, ‘রোগীর যাবতীয় চিকিৎসা হাসপাতাল থেকেই হচ্ছে। রোগীর রক্তে হিমোগ্লোবনের সঙ্গে রক্তের কিছু উপাদানও কম রয়েছে। এ কারণে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করতে বেগ পেতে হয় কর্মীদের। কারও গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, বাধর্ক্যজনিত রোগে ২০ মে যশোর মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক গৌতম কুমার আচার্য্যের পরামর্শে সালেহা বেগমকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রক্তশূন্যতার কারণে রক্ত দেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। হাসপাতালের ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগ থেকে সালেহার রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করা হয়। রক্তের গ্রুপ আসে ‘বি পজিটিভ’।

পরে সালেহার শরীরে ‘বি পজিটিভ’ রক্ত দেওয়া হয়। তিন ব্যাগ রক্ত দেওয়ার পরে দুদিন পর সালেহাকে বাড়িতে নেওয়া হয়। এই অবস্থায় তার শরীরে জ্বালাপোড়া, বমিসহ খিঁচুনি শুরু হয়। সোমবার আবারও তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার সকালে শরীরে রক্ত দিতে গেলে সেই ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তারাই জানান তার রক্তের গ্রুপ ‘এ পজিটিভ’।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission