ভাইস চেয়ারম্যান হতে ৩ বার জন্ম, পপির বিরুদ্ধে ইসিতে অভিযোগ
দেশের সর্বকনিষ্ঠ নারী ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন রাজশাহীর পবা উপজেলার মোসা. পপি খাতুন। তবে ভাইস চেয়ারম্যান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে তাকে ৩ বার জন্ম নিতে হয়েছে।
জানা গেছে, মোসা. পপি খাতুন ২০১১ সালে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় পাশ করেন। সেখানে তার জন্মতারিখ ২০০৩ সালের ১২ জানুয়ারি। ২০১৭ সালে তিনি দারুশা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পাস করেন। সেখানে তার জন্মতারিখ ২০০২ সালের ১২ জানুয়ারি। এটিই তার ৮১০৮১৩০০০১৮৮ নম্বরের সর্বশেষ ভোটার তালিকাতেও রয়েছে। বর্তমানে তিনি রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজে অধ্যয়নরত। তবে ভোটে দাঁড়ানোর উদ্দেশ্যে রহস্যজনক কায়দায় তিনি তার জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) বয়স বাড়িয়েছেন। নির্বাচনের আগে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে পপি তার সব সনদে জন্মতারিখ পরিবর্তন করে ১৯৯৮ সালের ১২ জানুয়ারি লেখার আবেদন করেন। গত ২৩ এপ্রিল শিক্ষা বোর্ডের নাম ও বয়স সংশোধন কমিটির সভায় তা পাস হয়। সর্বশেষ সংশোধিত বয়স অনুযায়ী, কাগজে-কলমে তার তিনটি জন্মতারিখ পাওয়া যায়।
উপজেলা পরিষদ আইন-১৯৯৮ অনুযায়ী, নির্বাচনে দাঁড়াতে প্রার্থীর বয়স অন্তত ২৫ বছর পূর্ণ হতে হবে। কিন্তু শিক্ষা-সংক্রান্ত কাগজপত্র অনুযায়ী পপির বয়স ২২বছর।
এবার ভাইস চেয়ারম্যান মোসা. পপি খাতুনের বিরুদ্ধে প্রধান নির্বাচন কমিশন (সিইসি) বরাবর অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) নির্বাচনে পরাজিত অপর ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মোসা চেনবানু এ অভিযোগ দেন। এতে চার বছর বয়স বাড়ানোর অভিযোগটির সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়ী হওয়া পপি খাতুনের নজিরবিহীন জালিয়াতির আশ্রয় ও অবৈধ ক্ষমতা ব্যবহার করে বয়স বাড়িয়ে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। পপি খাতুনের প্রকৃত বয়স ২২ বছর হলেও নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার উদ্দেশ্যে শেষ মুহূর্তে তড়িঘড়ি করে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে ভুয়া ভোটার পরিচয়পত্র তৈরি এবং সনদপত্র জালিয়াতি করে বয়স বাড়িয়ে ২৫ বছর করার তথ্য প্রতিবেদনটিতে উঠে আসে।
এতে আরও বলা হয়, জালিয়াতির মাধ্যমে প্রার্থী হয়ে পপি খাতুন নির্বাচিত হওয়ায় উপজেলা নির্বাচন আইনের লঙ্ঘন করেছেন এবং এতে নির্বাচন কমিশন ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি জনসাধারণের আস্থাহীনতার সংকট সৃষ্টি করেছে।
অভিযোগের অনুলিপি রাজশাহীর সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শাহিনুর ইসলাম প্রামাণিক, পবা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সরকার অসীম কুমারকে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার শাহিনুর ইসলাম প্রামাণিক বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর একটি আবেদনের অনুলিপি আমি পেয়েছি। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। কারণ, অভিযোগটি প্রধান নির্বাচন কমিশন বরাবর করা হয়েছে। তা ছাড়া নির্বাচন পরবর্তী কোনো অভিযোগ করতে হলে নির্বাচন আইন অনুযায়ী, ট্রাইব্যুনাল কিংবা আপিল ট্রাইব্যুনালে করতে হয়।’
মন্তব্য করুন