• ঢাকা শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১
logo

ভরা মৌসুমেও পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ কম, দামও বেশি

স্টাফ রিপোর্টার (চাঁদপুর), আরটিভি নিউজ

  ২২ জুন ২০২৪, ২২:৪৫
ভরা মৌসুমেও পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ কম, দামও বেশি
ছবি : আরটিভি

ভরা মৌসুমেও পদ্মা-মেঘনা নদীতে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। তুলনামূলক দামও অনেক বেশি। দিনে ও রাতে নদীতে চষে বেড়ালেও জ্বালানি খরচ উঠছে না জেলেদের। স্থানীয় রূপালী ইলিশের আমদানি না থাকায় নদী উপকূলীয় অধিকাংশ আড়তের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ দিকে এক শ্রেণির লোক অনলাইনে ইলিশ বিক্রি করে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করে চাঁদপুরের সুনাম নষ্ট করছেন বলেও জানান স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীরা।

পদ্মা-মেঘনা নদীর চাঁদপুর নৌ সীমানার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত অর্ধলক্ষাধিক জেলে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ আহরণ করে জীবীকা নির্বাহ করছেন। তবে সরকারি তালিকাভুক্ত ৪৪ হাজার জেলে বছরে দুটি সময় প্রণোদনা পেয়ে থাকেন।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, জাটকা এবং মা ইলিশ সংরক্ষণ সময়ে জেলেদের প্রণোদনা দেওয়া হয়।

এ ছাড়া এসব জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্যে প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করা হচ্ছে।

কয়েকজন মৎস্য ব্যবসায়ী জানান, চাঁদপুরের সর্ববৃহৎ মৎস্য আড়ৎ বড় স্টেশন মাছ ঘাটে এ সময় যেখানে ইলিশ মাছ আমদানি হতো ৫০০-৬০০ মণ, সেখানে আমদানি হচ্ছে ৭-৮ মণ ইলিশ। এতে করে চাঁদপুরের চাহিদাই মেটাতে পারছেন না মৎস্য ব্যবসায়ীরা। তার ওপর দামও বেশি। নদীর নাব্যতা, নদীর পানি দূষণ ও অভিযানের সময় কারেন্ট জাল দিয়ে প্রচুর পরিমাণ জাটকা ধরার কারণে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ মিলছে না বলে জানান মৎস্য ব্যবসায়ীরা।

রাজশাহী, মুন্সীগঞ্জ থেকে আসা কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, চাঁদপুরের বৃহৎ মৎস্য আড়তে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে এবং দাম বেশি হওয়ার কারণে হতাশ তারা।

ক্রেতারা বলছেন, চাঁদপুরের ইলিশ কিনতে এসে বরিশাল কিংবা চট্টগ্রামের ইলিশ কিনে নিতে হচ্ছে। যা চাঁদপুরের ইলিশ বলে বিক্রি করা হচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, অন্যান্য স্থান থেকে এখানে ইলিশের প্রচুর দাম।

সদর উপজেলার হরিণা ও আখনেরহাট মাছঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, অধিকাংশ ইলিশের আড়ৎ বন্ধ। ইলিশের আমদানি না থাকায় অনেক আড়তে ব্যবসায়ীরা অবসর সময় কাটাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ আড়তেই ঘুমিয়ে আছেন।

আখনের হাটের আড়তদার শহীদ সরদার বলেন, ইলিশের আমদানি না থাকায় ১১ আড়তের ৬টি বন্ধ। সঠিকভাবে জাটকা সংরক্ষণ না হওয়ায় নদীতে ইলিশ মাছ কমেছে। আবার জেলেরা নদীতে নামলে জালের প্রকারভেদ নিয়ে নৌ পুলিশের হয়রানি তো আছেই।

চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি মানিক জমাদার বলেন, নদীতে নাব্যতা সংকটসহ নানা কারণে নদীতে ইলিশের বিচরণ কম। একই সঙ্গে সঠিকভাবে জাটকা সংরক্ষণ না হওয়ায় ইলিশ মাছ নদীতে কমছে। এসব সমস্যা সমাধানে এগিয়ে না আসলে ইলিশের প্রাপ্যতা কমতে থাকবে। গত কয়েক বছর স্থানীয় ইলিশের উৎপাদন ক্রমাণ্বয়ে কমে আসছে।

চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. তানজিমুল ইসলাম বলেন, ‘পদ্মা-মেঘনা নদীতে আমরা বছরজুড়ে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধিতে কাজ করছি। বিশেষ করে জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষায় আমরা জেলেদের সচেতন করে আসছি। এ বছর জাটকা সংরক্ষণ সফল হয়েছে। আগামী মৌসুমে এটির সুফল পাবেন জেলেরা। তারপরেও নদীতে চর জেগে উঠা, নদীর পানি দূষণ ও ইলিশের খাদ্য হ্রাস পাওয়ায় মিঠা পানিতে ইলিশের বিচরণ কম। তবে নদীতে পানি বাড়লে ভরা মৌসুমে ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

মন্তব্য করুন

Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
মা ইলিশ সংরক্ষণ, জেলেরা নদীতে নামলে ব্যবস্থা
২৬ হাজার টাকায় বিক্রি হলো ৩ ইলিশ 
ইলিশের ডিমের মজাদার রেসিপি
দুর্গাপূজার সঙ্গে ইলিশের কী সম্পর্ক