‘আমার ছেলের লাশটাও আনতে দেয়নি ওরা’

আরটিভি নিউজ

মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪ , ১০:০৭ পিএম


‘আমার ছেলের লাশটাও আনতে দেয়নি ওরা’
ছবি: সংগৃহীত

আমার ছেলে মো. রাকিবের (২৩) লাশটাও গ্রামে আনতে দেয়নি ওরা। আমার বাবাকে (রাকিব) কারা এভাবে দুনিয়া থেকে নিয়ে গেল, তাদের কি বিচার হবে না। এ কথা বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সংঘর্ষে নিহত নির্মাণশ্রমিক রাকিবের মা সুইটি আক্তার।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার কামারখোলা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চলছে মাতম।  

সুইটি আক্তার বলেন, প্রায় ২০ বছর আগে স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র চলে যান। সন্তানদের আঁকড়ে ধরেই জীবন চলছিল তার। তিন ছেলে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। নিরুপায় হয়ে গাজীপুরে এসে কখনো পোশাকশিল্পে আবার কখনো প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে ছেলেদের ভরণপোষণ করে জীবন চালাচ্ছিলেন তিনি। রাকিব তার দ্বিতীয় সন্তান। রাকিবের অনুরোধেই কয়েক বছর আগে তিনি চাকরি ছেড়ে দেন। রাকিবই ছিল তার সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম। তার (রাকিব) উপার্জনেই সংসার চলত তাদের।

বিজ্ঞাপন

১৯ জুলাই রাকিবের গলায় গুলিবিদ্ধ হলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ নিয়ে যান। সেখানে তার লাশ ফেলে রাখা হয়। পরের দিন ২০ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ক্যান্টনমেন্ট থানা সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্ত করে। এর ২ দিন মো. রাকিব ১৯ জুলাই সাভারে কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে মারা যান। এরপর ২২ জুলাই পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। এ সময় পুলিশ লাশ নিয়ে তাদের দ্রুত চলে যেতে বলেন। ৩০ মিনিটের মধ্যে লাশ দাফনের জন্য বলা হয়। নিরুপায় হয়ে লাশ আর নবাবগঞ্জ আনতে পারেননি। গাজীপুরের সফিপুরেই তাড়াহুড়া করে লাশ দাফন করা হয়।

রাকিব ঢাকা জেলার সাভার নর্দা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি গ্রিল কারখানায় নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। ১৯ জুলাই বিকেলে কাজ শেষে সহকর্মীদের সঙ্গে ভাড়া বাসা সফিপুরে ফিরছিলেন রাকিব। এ সময় পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের ছোড়া গুলিতে মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি।

নিহতের ছোট ভাই মো. সাকিব বলেন, আমাদের কেউ নাই। ওপরে আল্লাহ ও আমার মা-ই ভরসা। আমার ভাইকে যারা গুলি করেছে, তাদের বিচার চাই। আমার ভাই তো কোনো অপরাধ করেনি।

বিজ্ঞাপন

নিহত রাকিবের সহকর্মী মো. উজ্জ্বল হোসেন বলেন, ওই দিন কাজ শেষে আমরা বাসায় যাচ্ছিলাম। এ সময় রাকিবের গলায় এসে গুলি লাগে।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission