সরকার পতনের বিজয় মিছিলে গুলিতে নিহত আয়াতুল্লাহ, লাশ গেল বাড়িতে
গত ৫ আগস্ট লংমার্চ টু ঢাকার মিছিল থেকে নিখোঁজ মাদরাসাছাত্রের মরদেহ ১১ দিন পর পৌঁছে দেওয়া হয়েছে গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জে মধ্যনগর উপজেলার চামরদানী ইউনিয়নের জলুষায়। ১৫ আগস্ট রাতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে মর্গে মাদরাসাছাত্র আয়াতুল্লাহর (২০) মরদেহের সন্ধান পাওয়ার পর ১৭ আগস্ট মধ্যরাতে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে করে স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা।
আয়াতুল্লাহর মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছার পর এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। শোকের ছায়া নেমে আসে স্বজনদের মধ্যে। মা, বোন ও পরিবারের সদস্যদের আহাজারিতে ভারী হয় চারপাশের পরিবেশ। রাতেই আয়াতুল্লাহর মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করে গ্রামবাসী।
প্রসঙ্গত, জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উত্তাল সময়ে নিয়মিত আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতেন আয়াতুল্লাহ। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হওয়ার পর তার বড় ভাই সোহাগ মিয়ার সঙ্গে গাজীপুরের কালিয়াকৈর মৌচাক এলাকা থেকে আনন্দ মিছিল নিয়ে সফিপুর আনসার ভিডিপি একাডেমির দিকে যান আয়াতুল্লাহ। মিছিলটি আনসার ভিডিপি একাডেমির সামনে যাওয়া মাত্রই গুলিবর্ষণ করে আনসার বাহিনীর সদস্যরা।
এতে করে মিছিলে অংশ নেওয়া অনেক ছাত্র-জনতা গুলিবিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। মিছিলে অংশ নেওয়া সোহাগ মিয়া হারিয়ে ফেলে তার ভাই আয়াতুল্লাহকে। এরপর থেকে আর খোঁজ মেলেনি তার। গাজীপুর ও রাজধানীর বেশ কয়েকটি হাসপাতাল মর্গসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান মেলেনি আয়াতুল্লাহর। নিখোঁজের দীর্ঘ ১১ দিন পর শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে খোঁজ মেলে আয়াতুল্লাহর মরদেহের।
আয়াতুল্লাহ সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার চামরদানী ইউনিয়নের জলুষা গ্রামের মো. সিরাজুল ইসলামের ছেলে। সে তার বড় ভাই সোহাগের সঙ্গে কালিয়াকৈরের জামতলা এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকত। আয়াতুল্লাহ কালিয়াকৈরের ভান্নারা বাজার এলাকায় মাখলাজুল ইমান নামে একটি মাদরাসায় পড়াশোনা করার পাশাপাশি একটি টেক্সটাইল মিলে কাজ করত।
এ বিষয়ে আয়াতুল্লাহর বড় ভাই সোহাগ মিয়া বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন হওয়ার পর আনন্দ মিছিলে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিখোঁজ হয় আয়াতুল্লাহ। বহু জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে তার মরদেহের সন্ধান মিলেছে। আমি ও আমার পরিবার এই হত্যার বিচার চাই।
মন্তব্য করুন