দৃশ্যমান হচ্ছে ফেনীর ক্ষতচিহ্ন
ফেনীতে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুটে উঠেছে রাস্তাঘাটের ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। পানির স্রোতে ভেঙে গেছে মাইলের পর মাইল সড়ক।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে ফেনীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ফুলগাজীর জগৎপুর গ্রামের একটি সড়কের দেড় কিলোমিটার রাস্তায় ভেঙেছে ১৩ স্থানে। প্রতিটি ভাঙায় পরিমাণ লম্বায় ১৫ ফিট গভীরতা ১০ ফিটের বেশি। ফলে বির্পযস্ত জনজীবন। পানির স্রোতে সরে গেছে পাকা সড়কের কনক্রিট ও সলিং। সড়ক ভাঙা থাকায় বন্যা আক্রান্ত পরিবারগুলোতে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছাতে বেগ পেতে হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীসহ সরকারি বেসরকারি সংস্থাকেও।
জানা যায়, ফেনীর পাঁচশ কিলোমিটার রাস্তা মেরামতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০০ কোটি টাকার বেশি। জেলায় এলজিইডি ও সড়ক বিভাগের আওতাধীন সড়কের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আনুমানিক ১৪০ কোটি ৪৮ লাখ ৪৭ হাজার টাকা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, অতি সত্তর নদী বাঁধের দুপাশে ভাঙন না মেরামত করা হলে আবারও বন্যার কবলে পড়বে ফেনীর মানুষ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত সমাধান করতে হবে।
এ বিষয়ে ফেনী এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ আল ফারুক বলেন, ‘জেলায় স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় ৪ হাজার ৩০০ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে পানিতে ডুবেছিল ৩ হাজার ৩০০ কিলোমিটার। পানির স্রোতে ৩৪২টি সড়কে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫০০ কিলোমিটার। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে মেরামত ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। স্বল্প মেয়াদী সড়ক ২ মাসের মধ্যে, আর দীর্ঘমেয়াদী সড়কগুলো পৌনে ২ বছরের মধ্যে মেরামত কাজ সম্পন্ন করবে স্থানীয় সরকার বিভাগ। তাই বরাদ্দের জন্য অর্থের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ে।’
ফেনী সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী বিনয় কুমার পাল বলেন, ‘আমাদের আওতাধীন কিছু সড়কে এখনও পানি রয়েছে। চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। সরেজমিনে ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত পরিমাণ নিরূপণ করা হবে।’
উল্লেখ্য, দুদফা বন্যায় মুহুরী-কহুয়া-সিলোনীয়া নদীর দুপাশে ১২২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ৮৯টি স্থানে ভাঙন মেরামত করা না গেলে আবারও বন্যার কবলে পড়তে পারে ফেনীর এ জনপদ। দ্রুত সময়ে সবকিছু স্বাভাবিক হবে বলেই প্রত্যাশা স্থানীয় বাসিন্দাদের।
মন্তব্য করুন