গাজীপুরে ডিবি হারুনসহ ১৫ জনের নামে মামলা
জোরপূর্বক জমির মালিকানা ও দখল নিতে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগে গাজীপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার হারুন-অর রশীদ ওরফে ডিবি হারুনকে প্রধান আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী কাজল ফকির। মামলায় আরও দুজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। ১৬ অক্টোবর ভুক্তভোগী কাজল ফকির গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন।
মামলার অপর ২ আসামি হলেন রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার ৩নং সেক্টরের মৃত সৈয়দ আবুল হোসেনের ছেলে হুমায়ুন কবির এবং গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার চন্নাপাড়া (২নং সিঅ্যান্ডবি) এলাকার মৃত হাছেন আলীর ছেলে আবদুল মালেকসহ অজ্ঞাত ১০ থেকে ১২ জন।
ভুক্তভোগী কাজল ফকির গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার মাওনা চৌরাস্তা (কেওয়া পশ্চিমখণ্ড) এলাকার মৃত আবদুল বারেকের ছেলে। সে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের অঙ্গসংগঠন শ্রমিকদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং শ্রীপুর উপজেলা শিল্পাঞ্চল শ্রমিকদলের সাবেক সভাপতি।
অভিযোগের বিবরণ ও বাদীর ভাষ্যমতে, কাজল ফকির তার ব্যক্তিগত প্রয়োজনে কিছু জমি বিক্রির বিজ্ঞপ্তি প্রদান করেন। এরই জেরে অভিযুক্তরা শ্রীপুর উপজেলার ৭নং কেওয়া এবং মুলাইদ মৌজার বিভিন্ন খতিয়ানভুক্ত আনুমানিক ২০ একর জমি জবরদখলের উদ্দেশে গোপনে তৎপর হয়ে ওঠে।
আদালতে দায়ের করা মামলা সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০১৭ সালের ১ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কাজল ফকিরকে তার নিজ বাসা মাওনা চৌরাস্তা থেকে একটি মাইক্রোবাসে করে গাজীপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তৎকালীন পুলিশ সুপার ও মামলার প্রধান আসামি হারুন-অর রশীদ তার কক্ষে নিয়ে বাদীর কাছে মাওনা চৌরাস্তা তেলিহাটি মুলাইদ মৌজার সিএস-৫৮, এসএ-১৭৮, আরএস-১৯০ ও এসএ-৩৪০ আরএস-১৬৫১, শাইল ৩ দশমিক ২৯৬ একর জমি ২নং আসামি হুমায়ুন কবিরের নামে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। কাজল ফকির লিখে দিতে অস্বীকৃতি জানালে পুলিশি প্রভাবে জয়দেবপুর থানার একটি মামলা দেখিয়ে রিমান্ড আবেদন করে আদালতে হাজির করা হয় তাকে। পরে আদালত দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে নিয়ে কাজল ফকিরকে ২নং বিবাদীর অনুকূলে উল্লেখিত বিবরণ অনুযায়ী জমি রেজিস্ট্রি করে দিতে বলা হয়। এ থেকে মুক্ত হতে হলে ৭ কোটি টাকা প্রদান করতে হবে। অন্যথায় তাকে ক্রসফায়ারের হুমকি দেওয়া হয়।
মামলার বাদী কাজল ফকির বলেন, হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে আসামিরা পলাতক রয়েছেন। আমি আমার জমি দখলে নিয়েছি। এসপি হারুন এবং হুমায়ুন কবিরকে মামলার অন্যান্য অভিযুক্তরা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্টে সরকার পতনের পর থেকে গাজীপুরের সাবেক এসপি প্রকাশ ডিবি হারুন অর রশীদ আত্মগোপনে থাকায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরটিভি/এমকে-টি
মন্তব্য করুন