ঘাটাইলের সেই ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার, এলাকায় আনন্দ মিছিল
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মো.হাবিবুল্লাহ্কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশ তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। ছাত্র-জনতার অন্দোলনের সময় মারধরের ঘটনায় মধুপুর থানায় ২ অক্টোবর একটি মামলা হয়। সেই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলে প্রেরণ করে মধুপুর থানা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতে টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশের একটি দল ঘাটাইল থানা পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে হাবিবুল্লাহর নিজ বাড়ি সাগরদিঘীর হাতিমারা গ্রামে অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বরাবরের মতো ফেসবুক লাইভে আসেন তিনি। পরে ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে মধুপুর থানায় নিয়ে যায়। ছাত্র-জনতার অন্দোলনের সময় মারধরের ঘটনায় মধুপুর থানায় ২ অক্টোবরের একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলে প্রেরণ করে মধুপুর থানা পুলিশ।
এদিকে হাবিবুল্লাহ্ গ্রেপ্তার হওয়ায় তার নিজ এলাকা সাগরদিঘীতে শুক্রবার রাতে আনন্দ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। খুশিতে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। ঘাটাইল কলেজমোড় এলাকায় প্রায় দুই শতাধিক লোকের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করেন উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক সুফী সিদ্দিকী। গারোবাজার এলাকায়ও মিষ্টি বিতরণ করা হয় বলে জানান রাজিবুল ইসলাম রিয়াজ নামে একজন।
স্থানীয়রা জানায়, চেয়ারম্যান হাবিবুল্লাহ্ শুধু সাগরদিঘীতে নয় পুরো ঘাটাইলে একজন বিতর্কিত ব্যক্তি। বিভিন্ন সময় অসংযত আচরণের জন্য তিনি সমালোচিত হয়েছেন। বন কর্মকর্তাকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিককে হুমকি এবং সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভ করতে দেখা যায় তাকে।
চেয়ারম্যান হাবিবুল্লাহ্ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি সাগরদিঘী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬ নং ওয়ার্ডের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক। ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর রাতারাতি লেবাস পাল্টিয়ে জামায়াত ইসলামীর একটি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায় তাকে। তবে উপজেলার জামায়াত ইসলামের আমীর মো. রাসেল মিয়া বলেন, হাবিবুল্লাহ্ তাদের দলের কেউ নন। জামায়াত ইসলামের সঙ্গে হাবিবুল্লাহ্ কোনো সম্পৃক্তা নেই।
ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম বলেন, টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশের একটি দল চেয়ারম্যান হাবিবুল্লাহ্কে গ্রেপ্তার করতে ঘাটাইল থানা পুলিশের সহযোগিতা চায়। থানা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে গ্রেপ্তার করে মধুপুরের একটি মামলায় তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলে প্রেরণ হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বরাদ্দের অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত হলে সমকালের ঘাটাইল প্রতিনিধি ও ঘাটাইল প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাসুম মিয়াকে হুমকি দেন তিনি। এ নিয়ে থানায় একটি জিডি করেন সমকাল প্রতিনিধি।
আরটিভি/এএএ/এস
মন্তব্য করুন