• ঢাকা সোমবার, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১
logo

মুক্তিপণ দিয়ে ৪ ঘণ্টা পর ছাড়া পেলেন ঢামেক চিকিৎসক 

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:২৪
ছবি : আরটিভি

আপনি অপহরণ হয়েছেন। আমাদের কাজই হচ্ছে এটা। আপনার কোনো ক্ষতি করা হবে না। টাকা দিলে ছেড়ে দেব। এটা করে আমরা খাই। শ্রীপুরে মাওনা চৌরাস্তা থেকে চিকিৎসক আমিনুর রহমানকে (৩৯) ধাক্কা দিয়ে প্রাইভেটকারে ওঠানোর পর আমাকে (চিকিৎসক) চিনেন কি না জিজ্ঞেস করতেই অপহরণকারীরা এসব কথা বলে। চোখে স্কচটেপ পেঁচিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে ৪ ঘণ্টা পর রাত সাড়ে ১১ টায় গাজীপুর মহানগরীর সালনা এলাকা থেকে এক কিলোমিটার ভেতরে এক লাখ ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা মুক্তিপণ নিয়ে আমাকে ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা।

রোববার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে এ প্রতিনিধির কাছে মুঠোফোনে চিকিৎসক আমিনুর রহমান এসব কথা বলেন। এর আগে শনিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তা উড়াল সেতুর দক্ষিণ পাশ থেকে ওই চিকিৎসককে সিলভার কালার প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে অপহরণ করা হয়।

চিকিৎসক আমিনুর রহমান টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার কচুটি গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগে কর্মরত। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী (শনির আখড়া) এলাকায় পরিবারসহ বসবাস করেন ওই চিকিৎসক।

এদিকে, চিকিৎসক অপহরণের ঘটনায় স্থানীয়ভাবে চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হলে ২১ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুব আলী এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান।

আজ দুপুর দেড়টায় চিকিৎসক আমিনুর রহমান জানান, শনিবার বিকেল ৪টা থেকে ৭টা পর্যন্ত মাওনা চৌরাস্তা লাইফ কেয়ার হাসপাতালে চেম্বার করছিলেন। ওইদিনই তিনি শ্রীপুরের মাওনায় প্রথম চেম্বার করেন। তিন ঘণ্টা চেম্বার শেষে ঢাকার বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে ওই হাসপাতাল থেকে বের হয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তা উড়াল সেতুর দক্ষিণ পাশে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ওই স্থানে ১০ থেকে ১২ জন যাত্রী বাসের জন্য অপেক্ষা করছিল।

এ সময় সিলভার কালারের একটি প্রাইভেটকার এসে দাঁড়ায়। তখন চালক প্রাইভেটকারের পেছনের দরজা খুলে অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদেরকে ঢাকা যাওয়ার জন্য আহ্বান করে। আমি চালকের কথায় কোনো সাড়া দেয়নি। এসময় পেছন থেকে তিনজন (১৮ থেকে ২৫ বছর বয়স) যুবক আমাকে ধাক্কা দিয়ে প্রাইভেটকারের ভেতরে তুলে নেয়। তখন তাদেরকে জিজ্ঞাসা করি আমাকে চিনেন কি না। অপহরণকারীরা বলেন, আপনি কিডন্যাপ (অপহরণ) হয়েছেন। আমাদের কাজ’ই হচ্ছে এটা। আপনার কোনো ক্ষতি করা হবে না। টাকা দিলে ছেড়ে দিব। এটা করে আমরা খাই। পরে আমার চোখ স্কচটেপ দিয়ে পেঁচিয়ে ফেলে। গাড়ীর ভিতরে তাদের সঙ্গে থাকা হাতুড়ি দিয়ে আমার হাঁটুতে আঘাত করে এবং বুকে কিল ঘুষি দেয়।

একপর্যায়ে গলায় রশি পেঁচানোর চেষ্টা করলে আমি হাত দিয়ে বাধা দেই। তারা প্রথমে আমার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবী করেছিল। পরে বলেছে ৩ লাখ টাকা দিলেই হবে। তারা আমার সঙ্গে থাকা নগদ সাড়ে ৯ হাজার টাকা এবং আমার মোবাইল দিয়ে স্ত্রীর কাছে ফোন করে আমার নগদ নাম্বারে ৪৫ হাজার, বিকাশ নাম্বারে ৫০ হাজার এবং অপহরণকারীদের বিকাশ নাম্বারে ৩০ হাজার টাকা নেয়। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে যাওয়ায় কেউ তাদেরকে ফলো করতেছে কি’না, এসব ভেবে বলে আর লাগবে না। চার ঘণ্টা পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর সালনা এলাকা থেকে এক কিলোমিটার ভেতরে আমাকে নামিয়ে দিয়ে তারা চলে যায়।

তিনি আরও জানান, অপহরণকারীরা ছেড়ে দেওয়ার আগে আমার সঙ্গে থাকা ক্রেডিট কার্ড, দুইটি স্মার্টফোন (নগদ-বিকাশ নাম্বার খোলা) এবং একটি ল্যাপটপ নিয়ে যায়। পরে তিনি সালনা মহাসড়কে গিয়ে একটি দোকান থেকে মুঠোফোন নিয়ে বাসায় ফোন করে জানান তিনি ছাড়া পেয়েছেন এবং বাসায় চলে যান। এ ঘটনায় শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করবেন বলে জানান তিনি।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, মৌখিক খবর পেয়ে আমরা মুঠোফোনের নাম্বারে লোকেশন ট্রাক করি। পরবর্তীতে চিকিৎসকের বাসা থেকে জানানো হয় তিনি বাসায় চলে গেছেন। এ বিষয়ে এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরটিভি/এএএ

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খুঁটির সাঙ্গে সিএনজির ধাক্কা, নিহত ১
সড়ক বিভাজকে উঠে গেল ট্রাক, যেভাবে উদ্ধার হলেন চালক 
শ্রীপুরে পোশাক শ্রমিককে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৩
গাজীপুর কারাগারে শ্রমিক লীগ নেতার মৃত্যু