ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে উত্তরাঞ্চলগামী ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঝুঁকি নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছে লোকজন। পরিবহনের সংকট, অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে সাধারণ যাত্রীদের ঠাঁই হয়েছে ট্রাক-পিকআপে।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) সকাল থেকেই মহাসড়কের গোড়াই, মির্জাপুর, রাবনা বাইপাস, এলেঙ্গা ও যমুনা সেতু পূর্ব এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মহাসড়কে উত্তরাঞ্চলগামী মানুষের ঢল নেমেছে। যানবাহনের চাপ থাকলেও গাড়ির অপেক্ষায় মোড়ে মোড়ে অস্থান করছে যাত্রীরা। গাড়ি থামলেই তাতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে লোকজন। কম ভাড়ায় খোলা ট্রাকে পরিবার পরিজন নিয়ে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে অনেককেই। ঝুঁকি থাকলেও চোখেমুখে তাদের আনন্দের বার্তা।
এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে সিরাজগঞ্জের শেখ ফরিদ বলেন, আমি প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে বাসের অপেক্ষায় বসে আছি। স্বাভাবিক সময়ে আমার বাড়ি যেতে ৩০ মিনিট লাগে কিন্তু তিন ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কোনো পরিবহন পাইনি। এখন যা পামু তাতেই চলে যাবো কি আর করার।
শেরপুরের সিয়াম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গাড়ির জন্য দুই ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি, কিন্তু পাচ্ছি না। যে দু-একটা বাস যাচ্ছে, তারা ২০০ টাকার ভাড়া ৫০০-৬০০ টাকা চাচ্ছে। দেখি বিকল্প কোন মাধ্যম আছে কি না।
পণ্যবাহী ট্রাকের গাইবান্ধা যাচ্ছেন গার্মেন্টস কর্মী রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাসে দ্বিগুণ তিনগুন ভাড়া চেয়েছিলো। ট্রাকের ভাড়া কম, তাই যাচ্ছি।
একই ট্রাকের আরেক গার্মেন্টস কর্মী হাসেম মিয়া বলেন, আমরা দিনমজুর মানুষ, বেশি ভাড়া দিতে পারি না। ঝুঁকি থাকলেও বাড়ি যেতেই হবে। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ করতে চাই।
হালিম নামের এক যাত্রী বলেন, আমার কাছে ৪ হাজার টাকা আছে, কিন্তু বাস ভাড়া চাচ্ছে ১ হাজার টাকা। বাধ্য হয়ে ২৫০ টাকায় পিকআপে উঠেছি। কষ্ট হলেও যেতে হবে। কেনো না কোনো ট্রাক-পিকআপই আমাদের মতো গরিবের শেষ ভরসা।
ট্রাক চালক কাদের মিয়া বলেন, এটা অন্যায় এবং ঝুঁকিপূর্ণ। তারপরও মানুষের অনুরোধে করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ঈদযাত্রাকে নির্বিঘ্ন করতে সাড়ে ৭০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। যানবাহনের চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ৪৭টি ব্রিগেড পয়েন্ট ও ২৭টি মোবাইল টিম ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে। এ ছাড়া দুর্ঘটনা ঘটলে দ্রুত যানজট নিরসনে একটি রেকার টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যাতে যাত্রীদের স্বস্তিদায়ক যাত্রা নিশ্চিত করা যায়।
আরটিভি/এমকে