ঢাকাবুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১

দৌলতদিয়ায় কাউন্টারে দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ের অভিযোগ

রাজবাড়ী প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

রোববার, ৩০ মার্চ ২০২৫ , ০৭:৫৯ পিএম


loading/img
ছবি: আরটিভি

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে ব্যানার টাঙিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করছেন যাত্রীরা। স্থানভেদে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া গুণতে হচ্ছে ঘরমুখো যাত্রীদের, এমন অভিযোগ তাদের।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৩০ মার্চ) বিষয়টি স্বীকার গণমাধ্যমের কাছে এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন রাজবাড়ী জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক সুকুমার ভৌমিক।

তিনি বলেন, দৌলতদিয়া-কুষ্টিয়া ও দৌলতদিয়া-ফরিদপুর রুটে প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ গাড়ি চলছে। ঈদের সময় গাড়িগুলো যাত্রী নিয়ে গিয়ে খালি আসে। এই একমুখো যাত্রীর কারণে বাসের মালিকদের প্রচুর লস হয়। এজন্য গত বছরের যে ভাড়া আমরা ঈদে নিয়েছিলাম। এ বছরও সেই ভাড়া আমরা প্রশাসনকে অবহিত করেই নিচ্ছি।
 
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ঘাটের টার্মিনালে রাস্তার পাশে বাস কাউন্টারের সামনে একটি হলুদ রঙের ব্যানার টানানো রয়েছে। সেখানে লেখা রয়েছে- পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে একমুখী যাত্রী হওয়ায় দৌলতদিয়া থেকে রাজবাড়ীর ভাড়া ১০০ টাকা, দৌলতদিয়া থেকে কালুখালীর ভাড়া ১৫০ টাকা, দৌলতদিয়া হতে পাংশার ভাড়া ১৮০ টাকা এবং দৌলতদিয়া হতে কুষ্টিয়ার ভাড়া ২৮০ টাকা। 

বিজ্ঞাপন

রাজবাড়ী জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দৌলতদিয়া থেকে রাজবাড়ীর দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার। দূরত্ব অনুযায়ী টার্মিনাল টোলসহ এখানকার লোকাল বাসের ভাড়া সাধারণত ৫৫ টাকা, দৌলতদিয়া থেকে পাংশার দূরত্ব ৫২ কিলোমিটার। তাই পাংশার ভাড়া ১১২ টাকা। দৌলতদিয়া থেকে কুষ্টিয়ার দূরত্ব ৯০ কিলোমিটার। আর এখানকার ভাড়া ভাড়া ১৯৫ টাকা। দৌলতদিয়া হতে ফরিদপুর রুটের দূরত্ব ৩৩ কিলোমিটার। এই অংশের ভাড়া ৭২ টাকা। 

অথচ দৌলতদিয়া থেকে রাজবাড়ীর লোকাল বাসের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ১০০ টাকা। যা নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ৪৫ টাকা বেশি। দৌলতদিয়া থেকে পাংশাগামী যাত্রীদের ভাড়া দিতে হচ্ছে ১৮০ টাকা। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ৬৮ টাকা বেশি। ফরিদপুরগামী যাত্রীদের অতিরিক্ত গুণতে হচ্ছে ২৮ টাকা এবং কুষ্টিয়াগামী যাত্রীদের অতিরিক্ত গুণতে হচ্ছে ৮৫ টাকা। এ ছাড়া এই নির্দিষ্ট দূরত্বের মাঝে যদি কেউ যেতে চায় তাহলে পরের স্ট্যান্ডের ভাড়া তাকে গুণতে হচ্ছে। 

সরেজমিনে আরও দেখা যায়, দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের দৌলতদিয়া ঘাট বাস টার্মিনাল এলাকায় নারীর টানে ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভিড়। টার্মিনাল এলাকায় এসে সুবিধা অনুযায়ী যাত্রীরা যানবাহনে উঠছেন। প্রতিটি বাসে অতিরিক্ত যাত্রী উঠানোর কারণে বাধ্য হয়ে কেউ কেউ তিন চাকার মাহিন্দ্র ও ইজিবাইকে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। 

বিজ্ঞাপন

নাদিয়া আফরিন নামে এক যাত্রী ঢাকা থেকে লঞ্চ পারাপার হয়ে ফরিদপুর যাবার জন্য বাস টার্মিনাল এসেছেন। তিনি বাসের টিকিট সংগ্রহ করতে চাইলে তার কাছে ১০০ টাকা ভাড়া চাওয়া হয়। পরে তিনি বাসে না গিয়ে মাহিন্দ্রায় (থ্রি হুইলার) ওঠেন।

তিনি বলেন, ঘাট থেকে ফরিদপুরে ভাড়া ৬৫ টাকা। সেখানে ভাড়া নিচ্ছে ১০০ টাকা। এটা তো এক প্রকার ডাকাতি। যেখানে যে যেমন পারছে সে সেভাবেই অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে। আমাদের পরিবারের টানে আসাই লাগবে। তাই বাধ্য হয়েই আমাদের এই বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছে।

শাহাদৎ হোসেন নামে আরেক যাত্রী বলেন, আমি কুষ্টিয়া যাবো। তিনি একজন হাফেজ। স্বাভাবিক সময়ে সাধারণত ঘাট থেকে কুষ্ঠিয়ায় বাসের ভাড়া নেয় ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। কিন্তু এখন ঈদ উপলক্ষে ভাড়া নিচ্ছে ২৮০ টাকা। আমার বাড়ি যাওয়া লাগবে। যাত্রীও বেশি। তাই অতিরিক্ত ভাড়া না দিয়ে কোনো উপায় নেই।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাহিদুর রহমান বলেন, ভাড়ার বিষয়ে সকল দপ্তর নিয়ে একটি সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই সভায় গত বছর ঈদের সময় বাসের যে ভাড়া ছিল এবার সেই তালিকা অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। ঈদের সময় বাস একবার যাত্রী নিয়ে গেলে আসার সময় খালি আসে। তাদের যাতে লোকসান না হয় এ কারণে ভাড়া সমন্বয় করা হয়েছে। সারা বাংলাদেশেই এটা নেওয়া হচ্ছে।

আরটিভি/এমকে

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |