গাজীপুরের সাফারি পার্কে ঘটেছে রহস্যজনক চুরির ঘটনা। কয়েক মাস আগে দুটি ম্যাকাও পাখি চুরি ও একটি নীলগাই পালিয়ে যাওয়ার পর এবার তিনটি আফ্রিকান লেমুর চুরির ঘটনা ঘটেছে। গত ২৩ মার্চ রাতে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ২৪ মার্চ শ্রীপুর থানায় পার্ক কর্তৃপক্ষ একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। তবে চুরির পর ১৫ দিন পার হলেও লেমুর পরিবারের তিন সদস্যের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, ২৩ মার্চ রাতে পার্কে থাকা তিনটি লেমুর (দুটি শাবক ও একটি প্রাপ্তবয়স্ক) চুরি হয়ে যায়। লেমুর তিনটি উদ্ধারের জন্য পার্কের ওয়ার্লেট সুপারভাইজার আনিছুর রহমান বাদী হয়ে ২৪ মার্চ শ্রীপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। লেমুর পরিবারের সদস্যদের উদ্ধারে পুলিশ তৎপরতা চালাচ্ছে।
তিনি জানান, ২০১৮ সালের ৬ আগস্ট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাচারকালে লাভবার্ড, কাকাতুয়া, ম্যাকাও, ময়ুর, দুটি লেমুরসহ ২০২ জোড়া বিপন্ন পাখি ও বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ ও ঢাকা কাস্টমস হাউস। উদ্ধার হওয়া প্রাণীগুলো পরবর্তীতে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের মাধ্যমে সাফারি পার্কে হস্তান্তর করা হয়। ওই লেমুর জোড়া পার্কে প্রথমবারের মতো দুটি বাচ্চা দেয়। ২০২২ সালে একটি লেমুর মারা গেলে বাকি তিনটি লেমুর পার্কে ছিল। সর্বশেষ এই তিনটি লেমুর চুরি হওয়ার পর পার্কের লেমুর বেষ্টনী এখন শূন্য।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, পার্ক থেকে তিনটি লেমুর চুরির ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি তদন্তাধীন এবং থানায় মামলা করা হয়েছে।
পার্ক সংশ্লিষ্টরা জানান, ৫ আগস্টের পর থেকেই সাফারি পার্কে নানা ধরনের অব্যবস্থাপনা বিরাজ করছে। একের পর এক মূল্যমান প্রাণী চুরির ঘটনায় বন বিভাগের কিছু কর্মচারীর সম্পৃক্ততার সন্দেহ করা হলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এখনো কাউকে জবাবদিহিতার আওতায় আনেনি।
গত বছরের নভেম্বরে দুটি ম্যাকাও পাখি চুরি হয় এবং চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি একটি নীলগাই পার্কের সীমানা প্রাচীর টপকে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়; যা এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
শ্রীপুর থানার ওসি মো. জয়নাল আবদীন মণ্ডল জানান, তিনটি লেমুর চুরির ঘটনায় পার্ক কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে লেমুরগুলো উদ্ধারে আমরা তৎপরতা চালাচ্ছি।
আরটিভি/এফএ-টি