ঢাকাশনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

ময়মনসিংহে বর্ষবরণে ডিসির নিমন্ত্রণ পায়নি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫ , ০২:৪৩ পিএম


loading/img
ছবি: আরটিভি

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর প্রথম উদযাপিত হলো বর্ষবরণ। আর ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের সেই অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ না পাওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটির পক্ষ থেকে। বিষয়টি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। 

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দ।

এর আগে, সারাদেশের মতো ময়মনসিংহে বিভাগীয় নগরীতে সোমবার সকাল ৮টায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নগরীর মহাবিদ্যালয় থেকে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করে জেলা প্রশাসন। বিশাল বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। 

বিজ্ঞাপন

এ সময় বিভাগীয় কমিশনার মোখতার আহমেদ, অতিরিক্ত রেঞ্জ ডিআইজি আবু বকর সিদ্দিক, জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম, পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমসহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা ও বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবাইকে সমন্বয় করে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান করা হয়েছে। অথচ তাদের কাউকেই বিষয়টি জানানো হয়নি। জেলা প্রশাসনের দাওয়াত না পেয়ে পরে আলাদাভাবে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান পালন করেন তারা। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ময়মনসিংহ মহানগরের সদস্য সচিব আল নূর আয়াস বলেন, জেলা প্রশাসন বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে অথচ আমাদের নিমন্ত্রণ করার প্রয়োজনীয়তাবোধ করেনি। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। জুলাই-আগস্টে আমাদের রক্তের বিনিময়ে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা আমাদের বাদ দিয়ে সবাইকে নিয়ে অনুষ্ঠান করেছেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছি। 

বিজ্ঞাপন

জেলার মুখ্য সংগঠক সাজ্জাদ হোসেন সজীব বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অন্তত পক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা ও মহানগর কমিটির কমপক্ষে ৪ জন নেতাকে নিমন্ত্রণ করতে পারতো। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমাদের কাউকেই বিষয়টি জানানো হয়নি। এতে আমরা অপমাণিত হয়েছি। বিপ্লবের পর প্রকৃত বীরেরা সম্মান পায় না, তাদেরকে ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে ফেলা হয়। এখানে এমনটিই হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসনের ডাক না পেয়ে পরে জয়নুল আবেদিন পার্কের তেঁতুলতলায় আমরা আমাদের মতো করে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান করেছি। আমাদের আয়োজনের মধ্যে অন্যতম ছিল ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের ছবি প্রদর্শন, পথচারীদের জন্য ফ্রি বিশুদ্ধ পানি সরবরাহসহ অন্যান্য জনসেবামূলক কর্মসূচি। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ময়মনসিংহ জেলা শাখার সদস্য সচিব আলী হোসেন বলেন, যখন বন্দুকের নলের মুখে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছিলাম, তখন আমাদের পাশে কেউ ছিল না। বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের কাউকেই আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কিছু জানানো হয়নি। অনুষ্ঠানটি কীভাবে হবে এটা জানতে আমি স্বপ্রণোদিতভাবে জেলা প্রশাসককে ফোন দিলে তিনি আমাদেরকে অনুষ্ঠানে আসতে বলেন। কিন্তু আমাদের সহযোদ্ধারা এভাবে নিমন্ত্রণ পেয়ে আরও অপমাণিত বোধ করেছেন। তাই তারা কেউ অনুষ্ঠানে যাননি। 

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) আবুল বাশার বলেন, জুলাই বিপ্লবীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা যাবে না। গায়ে কাফনের কাপড় পড়ে রাজপথে ছাত্র-জনতা নেমেছিল বলেই আজকে অনেকে বড় বড় দায়িত্ব পেয়েছেন। বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে অবশ্যই দায়িত্ব নিয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। সামনের আইনশৃঙ্খলা মিটিং এবং আমাদের কেন্দ্রীয় ফোরামে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে একাধিকবার জেলা প্রশাসক মফিদুল ইসলামের মুঠোফোনে কল দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।  

আরটিভি/এমকে/এস

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |