ঢাকাবৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

ওসির চেষ্টায় বাকপ্রতিবন্ধী চাঁদনী ফিরে গেল পরিবারে

অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ 

বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫ , ১০:১১ পিএম


loading/img
ছবি: আরটিভি

বাকপ্রতিবন্ধী চাঁদনী আক্তার বাবা-মার সঙ্গে অভিমান করে বাড়ি ছেড়ে ১৭ কিলোমিটার পায়ে হেটে হাজির হন মিঠামইন থানার ওসির কক্ষে। কোন প্রশ্নের উত্তর না দেওয়ায় ডেকে আনা হয় দুই প্রতিবন্ধী সহায়ককে। দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে হস্তান্তর করা হয় পরিবারের নিকট। এনিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন ওসি শফিউল আলম।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাতে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন থানা প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।  

বাকপ্রতিবন্ধী চাঁদনী আক্তার (১৫) ইটনা উপজেলার সদর ইউনিয়নের এরশাদ নগর গ্রামের মো. জসিম মিয়া ও মোছা. বেগম আক্তার দম্পতির মেয়ে।

বিজ্ঞাপন

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত মঙ্গলবার দুপুরে চাঁদনী ইটনা থেকে একা একা হেঁটে মিঠামইন থানায় গিয়ে ওসির কক্ষে ঢুকে। তখন ওসি শফিউল আলম তার নাম, ঠিকানা জিজ্ঞেস করলে কোনো উত্তর দিতে পারেনি।

পরে দেখা যায় চাঁদনী বাকপ্রতিবন্ধী। ওসি তখন চাঁদনীকে মহিলা পুলিশের মাধ্যমে নিরাপদ স্থানে খাওয়া-দাওয়া ও থাকার ব্যবস্থা করেন।

এ সময় চাঁদনীর অভিভাবকের খোঁজে বিভিন্ন থানা ও ফেসবুকে তার ছবি দিয়ে প্রচার প্রচারণা চালানো হয়। তারপরও যখন চাঁদনীর পরিবারের সন্ধান মেলেনি, তখন বাজিতপুর উপজেলা থেকে বাক প্রতিবন্ধীদের কথা বুঝতে পারেন এমন দুইজন বাক প্রতিবন্ধী সহায়ককে এনে চাঁদনীর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

চাঁদনীর হাতের ইশারা ইঙ্গিতে ধারণা করা হয় তার বাড়ি ইটনার দিকে, তারপর চাঁদনীকে নিয়ে ওসি শফিউল আলম ইটনার পথে রওনা হন।

ইটনায় কয়েক ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পরে চাঁদনীর বাড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের এরশাদ নগর গ্রামে সনাক্ত করেন।

পরে মিঠামইন থানার ওসি শফিউল আলম ও ইটনা থানার ওসি মো. জাফর ইকবালের উপস্থিতে চাঁদনীর পরিবারের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়।

বাকপ্রতিবন্ধী চাঁদনীর বাবা মো. জসিম উদ্দিন জানান, আমার মেয়ে অভিমান করে বাড়ি থেকে লুকিয়ে চলে গিয়েছিল। আমরা সকল আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে খোঁজখবর নিয়েছি। কোথাও পায়নি। 

এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশংসায় ভাসছেন মিঠামইন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শফিউল আলম।

এই বিষয়ে ইটনা উপজেলার সংস্কৃতিকর্মী ও সাংবাদিক আজাদ হোসেন বাহাদুল বলেন, এমন মমত্ববোধের মাধ্যমে একজন প্রতিবন্ধীর প্রতি পেশাদারিত্ব দায়িত্ব পালন করা ওসি সত্যি বিরল। কোন শব্দই এই কাজের যথার্থ প্রশংসা নয়, তবু সাধুবাদ জানাই। 

মিঠামইন থানার ওসি শফিউল আলম বলেন, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া মেয়েটাকে তার পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি। মেয়েটা আমার রুমে যাওয়ার পর যখন দেখলাম বাকপ্রতিবন্ধী তখন খুব চিন্তায় পড়ে গেছিলাম। বাজিতপুর থেকে বাকপ্রতিবন্ধীদের কথা বুঝতে পারে এমন দুজনকে এনে তারপর অনেক পরিশ্রম করে খোঁজখবর নিয়ে তার পরিবারের সন্ধান পেয়ে তাদের হাতে তুলে দিয়েছি।


আরটিভি/এএএ 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |