ঢাকাসোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২

পঞ্চগড়ে আদালত চত্বরে বিক্ষোভের ঘটনায় বিচারকরা আতঙ্কগ্রস্ত

পঞ্চগড় প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ 

বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫ , ১১:২৩ পিএম


loading/img
ছবি: আরটিভি

সম্প্রতি পঞ্চগড়ের জজ কোর্ট চত্বরে বিক্ষোভের ঘটনায় বিচারকরা আতঙ্কগ্রস্ত। মামলার রায় কিংবা আদেশের পর যদি তাদের সম্মানহানি হয় তাহলে তো সমস্যা। এজন্য জেলার আইনজীবীদের হস্তক্ষেপ ও কামনা করেছেন বিচারকরা। 

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে পঞ্চগড় জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট আদম সুফি তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময় সভায় এসব কথা বলেন। 

এ সময় জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এডভোকেট এম এ বারী, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এডভোকেট নাজমুল ইসলাম কাজল, সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন, আইনজীবী সমিতির আহ্বায়ক এডভোকেট মাহাবুবুবল ইসলাম, আহ্বায়ক সদস্য এডভোকেট গোলাম হাফিজ, পঞ্চগড় প্রেস ক্লাবের আহ্বায়ক সরকার হায়দার সহ জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিল।  

বিজ্ঞাপন

এডভোকেট আদম সুফি সাংবাদিকদের জানান দেশের প্রান্তিক জেলা পঞ্চগড়ে চাকরি করতে এসে বিচারকরা সম্মান ক্ষুণ্ণ করতে চাইছেনা। এজন্য বিচারকগণ আমাকে ডেকে নিয়ে এসব কথা বলেছেন। এ কারণে আইনজীবী সমিতিতে গতকাল সাধারণ সভা করেছেন। সভায় গত ২০ এপ্রিলের মামলার রায়কে কেন্দ্র করে যে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে তা নিয়ে আলোচনার পর আমরা আদালতের আইনজীবীদের সতর্ক করেছি। স্বস্ব আইনজীবীরা যেন তাদের মামলার আসামি এবং বাদীপক্ষকে নিয়ন্ত্রণ করেন। সেই সঙ্গে মিডিয়ার সামনে আইনজীবীদের বুঝে শুনে যৌক্তিক কথা বলার আহ্বান জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ এবং মিডিয়ায় বক্তব্য দেওয়ার ঘটনায় এডভোকেট আইবুল আলম আঙ্গুরকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আইনজীবী সমিতিতে দাখিলের কথা বলা হয়েছে। 

তিনি আইনজীবী সমিতির পক্ষে বলেন, বিচারকরা আমাকে জানিয়েছেন একটি মামলায় রায় প্রদান করার পর বিচার না মানলে উচ্চ আদালতে আপিলের সুযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে জেল দেওয়া, খালাস প্রদান করা, জামিন দেওয়া, জামিন না দেওয়া এসবের ক্ষেত্রে যদি আমরা দোষী হই তাহলে আমরা কি বিচার করবো। এমন একটা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আইনজীবী সমিতির হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বিচারকগণ। 

আদালতের এই পিপি বলেন আমি এই জেলার বিচারপ্রার্থী সহ আইনজীবী এবং বিচারকাজ সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য সাংবাদিকদের সহযোগিতা চাই।

বিজ্ঞাপন

এ সময় এডভোকেট নাজমুল ইসলাম কাজল বলেন, আইনজীবী সমিতি আদালত চত্বর একটি সংবেদনশীল এলাকা। এখানে মব তৈরি করা ঠিক নয়। যদি দাবী থাকে তাহলে বিক্ষোভ মানববন্ধন মিছিল এগুলো রাস্তায় করতে হবে। সাংবাদিকরা বলেন আদালতের অভ্যন্তরে যদি মানববন্ধন মিছিল হয় তাহলে আমাদের সংবাদ পরিবেশনের অধিকার রয়েছে।

প্রসঙ্গত জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে মারামারির ঘটনায় হত্যা মামলার আসামীকে খালাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে গত ২০ এপ্রিল বাদীপক্ষের লোকজন আদালতে বিক্ষোভ করেন। এ সময় বাদী পক্ষের লোকজন আদালতে ন্যায় বিচার পায়নি দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পরে বেশ কিছুক্ষণ চেষ্টার পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। 

এর আগে, বৈষম্য বিরোধীরা নিয়োগ বাণিজ্য সহ নানা দাবিতে চার বিচারকের পদত্যাগ দাবি করলে আইন মন্ত্রণালয় জেলা ও দায়রা জজ গোলাম ফারুক, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদি হাসান মণ্ডল, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আশরাফুজ্জামান এবং আবু হেনাকে বদলির আদেশ দেন। চার বিচারক একসঙ্গে চলে যাওয়ায় বিচারকাজ কিছুটা ব্যাহত হয়েছিল বলেও জানান পিপি এডভোকেট আদম সুফি।

আরটিভি/এএএ 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |