ঢাকাসোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২

৫ বছর আটকে ছিলেন গৃহকর্মী, যেভাবে উদ্ধার হলেন 

আরটিভি নিউজ

সোমবার, ১৯ মে ২০২৫ , ০৯:৫০ পিএম


loading/img
ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের ঝিলটুলী মহল্লা এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে মরিয়ম বিবি (৬৫) নামে এক গৃহকর্মীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

বিজ্ঞাপন

আটকে রেখে নির্যাতন ও জোর করে পাঁচ বছর ধরে গৃহকর্মীর কাজ করানো হচ্ছে বলে মরিয়ম বিবির ছেলে অভিযোগের প্রেক্ষিতে রোববার (১৮ মে) বিকেলে সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ।

মরিয়ম বিবি ফরিদপুর শহরের আলীপুর মহল্লার রাজ্জাকের মোড় এলাকার মৃত রহিম উদ্দিনের স্ত্রী। তার একমাত্র ছেলের নাম আবদুল মতিন (৩৮)। মতিন পেশায় মুদি দোকানি।

বিজ্ঞাপন

রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ফরিদপুর শহরের অনাথের মোড় এলাকায় ১০ তলা ‘গনি ভবন’-এর তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে মরিয়ম বিবিকে উদ্ধার করে পুলিশ। ওই অভিযানে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদ তালুকদার।

উদ্ধারের পর গতকাল ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মরিয়ম বেগম সাংবাদিকদের বলেন, তাকে বিভিন্ন সময় নির্যাতন করা হতো। ঘর মোছাসহ বাড়ির সব কাজ তাকে করতে হতো। ঠিকমতো খাবার দেওয়া হতো না।

মরিয়ম বিবির ছেলে আবদুল মতিন বলেন, অনেক ছোট বয়সে তিনি বাবাকে হারিয়েছেন। পাঁচ বছর আগে তার মা সিঙ্গাপুরপ্রবাসী আবদুল কাদেরের বাসায় থেকে গৃহকর্মীর কাজ শুরু করেন। আগে তার আর্থিক অবস্থা খারাপ ছিল। এখন তিনি কিছুটা সচ্ছল হয়েছেন। তার মাকে বাড়িতে আনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আবদুল কাদেরের স্ত্রী তাকে আটকে রেখেছিলেন। তাকে নির্যাতন করা হতো। তার মা পাঁচ বছর কাজ করলেও কোনো বেতন দেওয়া হয়নি। মায়ের সঙ্গে দেখা করতে গেলে ওই সময় বাড়ির লোকজন ঘরে উপস্থিত থাকত। মা তাকে সত্যি কথা বলতে পারেননি। মাকে ফিরে পেতে গতকাল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করেন। ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে পরে পুলিশ তার মাকে উদ্ধার করে আনে।

বিজ্ঞাপন

আবদুল কাদেরের বড় মেয়ে জানান, তার বাবা, মা ও ছোট বোন সিঙ্গাপুরে। বর্তমানে বাসায় তারা তিন বোন। বড় মেয়ে দাবি করে, ‘মরিয়ম বিবি তার ছেলের কাছে যেতে চাইতেন না। তিনি আমাদের সঙ্গে থাকতে পছন্দ করতেন। তার ছেলে মাঝেমধ্যে বাসায় এসে মায়ের সঙ্গে দেখা করে যেতেন। মরিয়ম বিবিকে আটকে রাখা কিংবা নির্যাতন করার কোনো ঘটনা ঘটেনি।

বিজ্ঞাপন

গণি ভবনে প্রহরী হিসেবে কাজ করেন শহরের কমলাপুর মহল্লার বাসিন্দা শেখ লোকমান (৬২)। তিনি বলেন, মরিয়ম বিবি দোকান থেকে জিনিসপত্র কিনতে কিংবা ময়লা ফেলতে বাড়ির বাইরে যেতেন। তাকে আটকে রাখা হয়েছে, এ রকম কথা তিনি কখনো শোনেননি। তবে তার ছেলে মাকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।

সোমবার (১৯ মে) দুপুরে পুলিশ মরিয়ম বিবিকে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে। ছেলে আবদুল মতিনের জিম্মায় তার মা মরিয়ম বিবিকে দেওয়ার নির্দেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুর রহমান।

আরটিভি/এমএ-টি

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |