ঢাকাবৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

শহীদকন্যাকে ধর্ষণে ডাক্তারি প্রতিবেদনে চাঞ্চল্যকর তথ্য, ৩ জনের সংশ্লিষ্টতা

আরটিভি নিউজ 

সোমবার, ২৬ মে ২০২৫ , ০৭:৪৫ পিএম


loading/img
ছবি: আরটিভি

পটুয়াখালীর দুমকিতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহীদের কলেজছাত্রী মেয়ের (১৭) ডাক্তারি পরীক্ষার প্রতিবেদনে তিন জনের ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে।

বিজ্ঞাপন

পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডা. সায়মা সুলতানা বলেন, ওই কলেজছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষার প্রতিবেদনে তিন জনের ধর্ষণের আলামত রয়েছে। ভুক্তভোগী ছাত্রী হাসপাতালে আসার দুদিন পর গত ২২ মার্চ মেডিকেল প্রতিবেদন পুলিশকে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে এখনো ন্যায়বিচার নিয়ে শঙ্কিত শহীদকন্যা লামিয়ার মা। দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দাবি করেছে পরিবার।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুরে ওই কলেজছাত্রীর বাবা গুলিবিদ্ধ হন। ১০ দিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার শহীদ বাবাকে দুমকি উপজেলার বাড়িতে দাফন করা হয়। ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় বাবার কবর জিয়ারত করে নানাবাড়িতে ফেরার পথে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন কলেজশিক্ষার্থী। 

গত ৬ মে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে পুলিশ অভিযোগপত্র দাখিল করলে সামনে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশের তদন্তে বেড়িয়ে আসে আরও এক কিশোরের নাম। মামলায় দুজনের নাম উল্লেখ থাকলেও ভিকটিমের ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট ও আসামিদের জবানবন্দি অনুযায়ী তিনজন জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে।

পুলিশ জানায়, ফরেনসিক পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত ও অভিযুক্তদের ডিএনএ মিলেছে। এমনকি, গাছের শুকনা পাতার ওপরও ছিল অভিযুক্তের নমুনা।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে পটুয়াখালী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাজাদুল ইসলাম স্বজল জানান, তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ভুক্তভোগী প্রথম ধর্ষণের শিকার হন তারই ঘনিষ্ঠ সহপাঠী ইমরান মুন্সীর হাতে। এরপর ঘটনাস্থলে আসে সাকিব মুন্সী ও সিফাত মুন্সী। ঘটনা ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তারা পালাক্রমে ধর্ষণ করে লামিয়াকে। ঘটনাটি ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

ধর্ষণের এক মাস আট দিন পর, ২৬ এপ্রিল ঢাকার শেখেরটেকের একটি বাসা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় লামিয়ার মরদেহ।

স্বজনরা জানান, মানসিকভাবে ভেঙে পড়া লামিয়া আত্মহননের পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়—সমাজের চাপ, লজ্জা আর বিচার না পাওয়ার ভয়ে। ন্যায়বিচার নিয়ে আজও সংশয়ে লামিয়ার মা রুমা বেগম। তার আশঙ্কা, বয়সের অজুহাতে আসামিরা শাস্তি থেকে পার পেতে পারে।

তাই লামিয়ার মায়ের দাবি, মেডিকেল পরীক্ষার মাধ্যমে প্রকৃত বয়স নিরূপণ এবং সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দেওয়া হোক আসামিদের।

পটুয়াখালী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটরের অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন সিকদার জানান, গ্রেপ্তার তিন অভিযুক্তকে ২৫ মে হাজির করা হয় আদালতে। আদালত পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন ২৮ মে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ মামলার বিচারকার্য শেষ করে ন্যায় বিচার নিশ্চিতের আশ্বাস রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবীর।

আরটিভি/এমএ

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |