জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, এখন পর্যন্ত ভারতের যে আচরণ বাংলাদেশের সঙ্গে, তা সন্তোষজনক নয়। এই আচরণ দিয়ে যদি ভারত মনে করে বাংলাদেশের কাছে প্রতিবেশীর মতো সম্পর্ক তারা পাবে, সেটা তারা কখনও পাবে না।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার চৌরাঙ্গী মোড়ে এক পথসভায় তিনি এ কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, ২৪ এর অভ্যুত্থানে রক্তাক্ত করা হয়েছে যার নির্দেশে, সেই খুনি হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে। যতদিন পর্যন্ত শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রিত থাকবে, ততদিন বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না।
তিনি আরও বলেন, সম্পর্ক স্বাভাবিক যদি তারা (ভারত) করতে চায়, তাহলে প্রতিবেশীর মতো অতটুকু শ্রদ্ধা ও সম্মানের সম্পর্ক হতে হবে, সমতার সম্পর্ক হতে হবে। আগের মতো ওই রকম দাসত্বের সম্পর্ক আর বাংলাদেশের মানুষ মানবে না।
জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের এই মুখ্য সংগঠক বলেন, আমাদের বিজিবি অকুতোভয় সীমান্তরক্ষী। তাদেরকে আওয়ামী লীগ জিম্মি করে রেখেছিল। তাদের যতটুকু শক্তিমত্তা, সেটুকু প্রকাশ করতে দেয়নি। তাদেরকে বিএসএফের কাছে ছোট করে রেখেছিলো।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি পৃথিবীর যে কোনো সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে বাংলাদেশের বিজিবির টেক্কা দেওয়ার সক্ষমতা আছে। সক্ষমতা মানে শুধুমাত্র অস্ত্রের সক্ষমতা নয়, কলিজার সক্ষমতা থাকতে হবে। কলিজার সক্ষমতা বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ছিলো বলে ৭১-এ তাদের অস্ত্র না থাকার পরেও স্বাধীনতা অর্জন করে এনেছিল।
সারজিস আলম বলেন, আমি অন্তবর্তী সরকারকে অনুরোধ করব, দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে বিন্দুমাত্র আপস নয়। যে কোনো ধরনের পুশিং, এজেন্ট পাঠানো এগুলো আমাদের দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত মনে করি। এগুলোর বিরুদ্ধে সরকার, প্রশাসন ও জনগনকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারি, তাহলে এটার কোনো সুযোগ থাকবে না বলে বিশ্বাস করি।
তিনি আরও বলেন, পুরো বাংলাদেশ নাকি বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ। পরিকল্পনা হচ্ছিলো আগামীতে বাইরে বিদ্যুৎ পাঠাবে। কিন্তু প্রকল্পের নামে বাংলাদেশ থেকে টাকা লুটপাট করা হয়েছে আর ভারতের আদানির পকেট ভারী করা হয়েছে। বিদ্যুৎ প্রকল্পের নামে এই বাংলাদেশ থেকে খুনি হাসিনার পরিবার ভারতের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে নেগোসিয়েশন করে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা পার্সেন্টেজ নিয়েছে। এভাবে তারা চুরি করে আমাদের টাকাগুলো নিয়ে দেশে এবং দেশের বাইরে থেকে বড় বড় চক্রান্ত করে। যদি তারা চুরি না করে থাকে, তাহলে আওয়ামী লীগের খুনি দালালরা দেশের বাইরে থেকে কিভাবে আলিশান জীবন যাপন করে?
দুর্নীতি প্রসঙ্গে এই এনসিপি নেতা বলেন, যদি কেউ সেবা দেওয়ার আগে ঘুষের টাকার জন্য হাত বের করে দেয়, সেই হাতে আপনারা থুথু দেবেন। কোনো থানায় ঘুষখোর পুলিশ থাকবে না। ভালো পুলিশকে সম্মান করবেন। কোনো ধরনের দুর্নীতি অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না।
তিনি বলেন, পাটগ্রামে পাথর উত্তোলন করে কেউ কেউ টাকা কামাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। নয়তো কোনো একদিন হঠাৎ পাটগ্রাম ডুবে যাবে।
এ সময় এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা বিনা, কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) রাসেল আহমেদ, এনসিপি লালমনিরহাট জেলা কমিটির সমন্বয়ক রকিবুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরটিভি/আইএম