নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের জনগণের উদ্দেশে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির বলেছেন, আপনারা এমন যোগ্য নেতা নির্বাচন করবেন, যিনি সংসদে গিয়ে আপনাদের সমস্যা সমাধানে জোরগলায় কথা বলবেন।
রোববার (৮ জুন) বিকেলে সুবর্ণচরের চরজুবিলী রব্বানিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসায় এক রাজনৈতিক সভায় তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় জনগণের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে নাছির উদ্দিন নাছির বলেন, গত বিশ বছরে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মধ্যে কেউ কি আপনাদের সমস্যা নিয়ে সংসদে জোরগলায় কথা বলেছেন?
উপস্থিত বিএনপি নেতাকর্মীরা সমস্বরে তখন ‘না, না, বলেননি’ বলে তার প্রশ্নের উত্তর দেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে গত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর ইতিবাচক ধারার রাজনীতি শুরু হয়েছে। এখন জনগণ তারুণ্যনির্ভর নেতৃত্ব প্রত্যাশা করে।
নানা সমস্যা তুলে ধরে ছাত্রদলের এই কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, নোয়াখালী সদর এবং সুবর্ণচরের সাধারণ মানুষ ভালো কোনো ট্রিটমেন্ট পাচ্ছেন না। সরকারি হাসপাতালে শুধু বিল্ডিং হয়েছে, কিন্তু সেখানে কোনো ভালো চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, আমার তো মনে হয় সেখানে সাধারণ মানুষ সামান্য চিকিৎসাটুকুও পান না। যার জন্য মানুষকে প্রাইভেট হাসপাতালমুখী হতে হচ্ছে। আগামীতে নোয়াখালীতে এমন চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যেন সাধারণ মানুষ সরকারি হাসপাতাল থেকেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা পেতে পারেন।
সুবর্ণচরের তীব্র বিদ্যুৎ সমস্যার কথা তুলে ধরে নাছির উদ্দিন নাছির বলেন, আমার মনে হয়, পুরো দেশের মধ্যে সবচেয়ে অবহেলিত উপজেলা হচ্ছে সুবর্ণচর, যেখানে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎও থাকে না। রাত কিংবা দিন যখন ইচ্ছা তখন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপ এবং ভোলাতে দৈনিক সতেরো-আঠারো ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে, সেখানে আমাদের সুবর্ণচর উপজেলায় দৈনিক পাঁচ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকে না।
উপস্থিত নেতাকর্মীদের প্রতি প্রশ্ন রেখে এ সময় তিনি বলেন, সুবর্ণচরে বড় একটি রাস্তা ছাড়া আর কোনো রাস্তা ভালো আছে? বলেন?
তখন উপস্থিত নেতাকর্মীরা ‘নেই, নেই’ বলে নাছিরের বক্তব্যকে সমর্থন জানান। এরপর নাছির আবার বলেন, বছরের পর বছর এসব রাস্তাঘাটের অবস্থা খারাপের চেয়ে খারাপ হচ্ছে। দেখার কেউ নেই।
ছাত্রদলের এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের দল বিএনপির পক্ষ থেকে ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানানো হয়েছে। এই দাবিটি খুবই যৌক্তিক। কারণ, বাংলাদেশে নির্বাচন আয়োজনের যে সংস্কৃতি, সেখানে দেখেছি সব সময় জানুয়ারি বা ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে। কারণ, এই সময় আবহাওয়া উপযোগী থাকে।
তিনি বলেন, এপ্রিলে নির্বাচন হলে রমজান মাসের যে আবহ রয়েছে, সেটি স্বাভাবিকভাবে ক্ষুণ্ন হবে। কারণ, রমজানে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা খুবই জটিল কাজ এবং তখন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বোর্ড পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীরা নির্বাচনী আমেজ এবং উৎসব থেকে বঞ্চিত হবে। গত পনের বছর ধরে বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। যার কারণে এই তরুণ প্রজন্ম তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সুতরাং এই প্রজন্মকে কোনোভাবেই নির্বাচনী উৎসব থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।
আরটিভি/আইএম