চুরির উদ্দেশ্যে ঘরে প্রবেশ করেন তারা। বাতির আলোতে দুজনকে চিনে ফেলেন গৃহবধূ। তাতে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়। হাতের ছাপ চিহ্নিত হওয়ার ভয়ে মৃতদেহ ফেলে দেওয়া হয় পুকুরে। ঘটনার এক সপ্তাহ পর হত্যায় জড়িত রাব্বী নামে একজনকে আটক করলে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে। চঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে নোয়াখালী হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপে।
এই ঘটনায় আটক দুজন হলেন ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার চরমাইনকা ইউনিয়নের আব্দুল মন্নান মাঝীর ছেলে ফজলে রাব্বী ও হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপের ১ নং ওয়ার্ডের মো. মাধুর ছেলে আলাউদ্দিন। তাদের মধ্যে রাব্বিকে গত শনিবার রাতে নিঝুমদ্বীপ থেকে আটক করে স্থানীয়রা। রাব্বীর দেওয়া তথ্য মোতাবেক ভোলার দৌলতখা থেকে আটক করা হয় আলাউদ্দিনকে।
এদিগে আটক রাব্বীকে রোববার বিকালে হাতিয়া থানায় নিয়ে আসা হলে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তাতে সে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য দেয় বলে জানান পুলিশ। অন্যদিকে ভোলার দৌলতখায় আটক আলাউদ্দিনকে নিয়ে হাতিয়া থানা পুলিশের একটি টিম হাতিয়া রওনা হয়েছেন।
হাতিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম আজমল হুদা বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে রাব্বী বেশ কিছু তথ্য দিয়েছে। হত্যার সাথে তারা তিনজন জড়িত ছিল। মূলত চুরির উদ্দ্যেশে তারা গৃহবধূর ঘরে প্রবেশ করে। প্রতিবেশী হওয়ায় মহিলা আলাউদ্দিনসহ দুজনকে চিনে ফেলে। পরে তারা জবাই করে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। প্রথমে তারা ঘরে থাকা স্বর্ণালংকার টাকা পয়সা লুট করে। পরে দুজন মহিলার হাত ও পা চেপে ধরে একজন মহিলাকে গলাই চুরি দিয়ে জবাই করে দেয়। মহিলার শরীরে আংগুলের ছাপ পাওয়া যাবে তাতে খুনি চিহ্নিত হওয়ার ভয়ে তারা মৃতদেহ পাশে পুকুরে ফেলে দেয়।
তিনি জানান, ভোলায় আটক আলাউদ্দিনকে নিয়ে আসা হলে দুজনকে সামনাসামনি জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাতে সত্য উদঘাটন আরও সহজ হবে। সোমবার যেকোনো সময় তাদেরকে আদালতে পাঠানো হবে। আটক রাব্বীর বাড়ি ভোলার চরফ্যাশন হলেও তিনি সরকার পরিবর্তনের পর থেকে নিঝুমদ্বীপে অবস্থান করছেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আলাউদ্দিন সম্পর্কে রাব্বীর বোন জামাই হয় বলে জানা যায়। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে রাব্বী ও আলাউদ্দিন দুজন বিভিন্ন ক্রাইমের সঙ্গে জড়িত।
উল্লেখ্য, হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নে ঘরে ঢুকে সবকিছু লুট করে আমেনা বেগম নামে নারীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৮ মে) রাত ১০টার দিকে উপজেলার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের শতফুল গ্রামের আশ্রয়কেন্দ্র সংলগ্ন মো.এমরান উদ্দিনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে একই দিন দিবাগত রাত সোয়া ২টার দিকে নিঝুমদ্বীপ পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা মরদেহ উদ্ধার করে। নিহত আমেনা (৫০) বেগম একই গ্রামের মো.এমরান উদ্দিনের স্ত্রী। তিনি ৪ মেয়ে এবং দুই ছেলের মা ছিলেন।
আরটিভি/এফএ