ঢাকারোববার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২

ছেলের আবদার পূরণে দুইশত কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে বাড়িতে বাবা 

আরটিভি নিউজ

মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫ , ০৩:৪৭ এএম


loading/img
বগুড়ায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা রিকশাচালক রাজু মিয়া সঙ্গে কথা বলছেন। ছবি: সংগৃহীত

রিকশাচালক রাজু মিয়ার অভাবের সংসার। তার উপর সন্তানদের পড়াশুনার খরচ। সব মিলিয়ে স্বপ্ন পূরণে গাইবান্ধা থেকে ঢাকায় পাড়ি জমান। ছেলের আবদার ছিল একটি সাইকেল। 

বিজ্ঞাপন

সেই আবদার পূরণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শত শত কিলোমিটার বাইসাইকেল চালিয়ে ঢাকা থেকে গাইবান্ধায় নিজ বাড়িতে পৌঁছেছেন রিকশাচালক রাজু মিয়া। 

ঈদের দিন ছেলের মুখে হাসি ফোটাতে তিন দিনে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে সন্তানের হাতে সাইকেল তুলে দিতে পেরে আনন্দে আত্মহারা এই বাবা। গর্বিত বাবা রাজুর এই গল্প সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। 

বিজ্ঞাপন

রাজু মিয়ার বাড়িতে শুক্রবার (৬ জুন) থেকেই বইছে উৎসবের আমেজ। গ্রামের মানুষ ও আত্মীয়-স্বজন মিলে উপভোগ করছেন ঈদের আনন্দ। বাড়িতে চলছে ভালো খাবারের আয়োজন, আর রাজু মিয়ার সাহসিকতায় আপ্লুত হয়ে পড়েছেন সবাই।

জানা গেছে, গাইবান্ধা শহর থেকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার উত্তরে পলাশবাড়ী উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের তালুকজামিরা গ্রামে রাজু মিয়ার বাড়ি। দিনমজুর এই বাবা তিন সন্তানের জনক। 

ঢাকায় নাখালপাড়ার শাহীনবাগ এলাকায় একটি রিকশাগ্যারেজে থেকে রিকশা চালানো শুরু করেন। সেখানকার সামান্য আয়ে নিজের খরচ চালিয়ে স্ত্রীর কাছে পাঠান কিছু টাকা- যাতে সন্তানদের পড়াশোনা ও খাবার চলে।

বিজ্ঞাপন

তবে রাজু মিয়ার ছেলে রেদোয়ান হোসেন হৃদয় দীর্ঘদিন ধরে একটি সাইকেলের আবদার করছিল। এবারের ঈদে ছেলেকে সাইকেল উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন রাজু। কথা রেখেছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

গত বৃহস্পতিবার রাজু মিয়া ঢাকায় বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে জানতে পারেন, সাইকেলসহ বাড়ি ফিরতে পাঁচ হাজার টাকা ভাড়া লাগবে। সেই টাকা ছিল না রাজুর কাছে। তাই এক মুহূর্ত দেরি না করে ছেলের জন্য কেনা সাইকেলে চড়ে নিজেই রওনা হন গাইবান্ধার উদ্দেশে।

তবে বাইসাইকেল চালিয়ে শুক্রবার রাত তিনটার দিকে বগুড়ায় পৌঁছান ক্লান্ত রাজু। সেখানকার সেনাবাহিনীর সদস্যরা রাজুকে দেখে এগিয়ে আসেন, তার সাহসিকতার কথা শুনে খাবার ও বিশ্রামের সুযোগ করে দেন। তাদের সহায়তায় অবশেষে শুক্রবার সকালেই  নিজ বাড়িতে পৌঁছে যান।

ছেলের হাতে সাইকেল তুলে দিতে পেরে রাজু মিয়া বলেন, আমি ঢাকা থেকে সাইকেল চালিয়ে ছেলের হাতে সাইকেল তুলে দিতে পেরেছি, এর চেয়ে বড় আনন্দ আর কিছু নেই। সন্তানের হাসি দেখে সব কষ্ট ভুলে গেছি। 

আরটিভি/কেএইচ

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |