ঢাকাবুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২

আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনিয়ম-অবহেলায় চরম ভোগান্তি

আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫ , ০৬:১৬ পিএম


loading/img
ছবি: আরটিভি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকদের দেরিতে আসা, ওষুধ ও জনবলের সংকট এবং দায়িত্বে অবহেলার কারণে সাধারণ রোগীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার কথা থাকলেও বেশিরভাগ চিকিৎসক সময়মতো উপস্থিত হন না। এমনকি জরুরি বিভাগেও পর্যাপ্ত সেবা পাওয়া যায় না। অভিযোগ উঠেছে, জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়ার দায়িত্ব পালন করছেন পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা।  

বিজ্ঞাপন

ভুক্তভোগী রোগী ও তাদের স্বজনরা জানান, সকালে হাসপাতালে আসার পরও চিকিৎসকদের ১১টার পর আসতে দেখা যায়। আবার অনেক চিকিৎসক দুপুরের আগেই ব্যক্তিগত চেম্বার বা ক্লিনিকে চলে যান। ফলে সরকারি সেবা পাওয়ার আশায় আসা রোগীরা হতাশ হয়ে ফিরে যান।  

চিকিৎসা নিতে আসা ইয়াকুব নামের এক অসুস্থ রোগী বলেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ডাক্তার পাই না। শেষে বাধ্য হয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে যেতে হয়, যা গরিব মানুষের জন্য কষ্টদায়ক।অনেক রোগী অভিযোগ করেন, প্রেসক্রাইব করা ওষুধও পর্যাপ্ত পরিমাণে দেওয়া হয় না, বিশেষ করে অ্যান্টিবায়োটিকের অভাবে চিকিৎসা বাধাগ্রস্ত হয়।  

বিজ্ঞাপন

এছাড়া, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে কিছু চিকিৎসকের অস্বাভাবিক সম্পর্কের অভিযোগ রয়েছে। ফলে নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের ওষুধ লিখে দেওয়ায় রোগীরা সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।  

হাসপাতাল পরিদর্শন করে দেখা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হিমেল খান প্রতিদিন ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রাম অভিমুখী মহানগর প্রভাতী ট্রেন যোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আখাউড়া আসেন। উনার সাথে একই ট্রেনে আসেন আয়ুর্বেবেদীক ডাক্তার মো. আয়ুব চৌধুরী। যদিও আয়ুর্বেবেদীক ডাক্তার তবে তিনি দেখেন চর্ম রোগী।

আরও পড়ুন

রোগীদের ভিড় থাকলেও অনেক চিকিৎসক ও কর্মচারী সময়মতো দায়িত্বে নেই। জরুরি বিভাগে ডাক্তারের পরিবর্তে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছেন, যা গুরুতর ঝুঁকির কারণ।  

হাসপাতালে সূত্রে জানাজায়, জরুরি বিভাগে একজন মেডিক্যাল অফিসার, একজন উপ-সহাকারী মেডিক্যাল অফিসার ও একজন সহায়তাকারী থাকার কথা থাকলেও সব সময় থাকেন আউটসোর্সিং এর একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী ও সাকমো। বেশিরভাগ চিকিৎসা দেন পরিচ্ছন্ন কর্মীই।

এ বিষয়ে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হিমেল খান বলেন, চিকিৎসক সংকটের কারণে সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে।১৬ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৫ জন। যারা দেরিতে আসেন বা দায়িত্বে অবহেলা করেন, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জন ডা. নোমান মিয়া বলেন,আখাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অভিযোগগুলো আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি। চিকিৎসকদের শৃঙ্খলাভঙ্গ ও সেবা সংকট তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেকোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।


আরটিভি/এএএ   

 

 

 

 

 

 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |