টিভি চুরির অপবাদে যুবককে ঝুলিয়ে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল
একটি কাঁঠাল গাছ ঘিরে সাধারণ মানুষের হৈ হুল্লোড়। উৎসুক জনতার ভিড়। কয়েকজন যুবক ছোটাছুটি করছে রশি নিয়ে। তারা এক কিশোরের হাতে ও পায়ে দড়ি বেঁধে মাথা নিচু করে কাঁঠাল গাছটির সাথে ঝুলাচ্ছে। এর কিছুক্ষণ পরে নীল পেন্ট কালো কোর্ট পরা এক লোক মোটা এক লাঠি নিয়ে কিশোরকে বেধড়ক পেটাচ্ছে।
টেলিভিশন চুরির অপবাদ দিয়ে এক যুবককে গাছে ঝুলিয়ে এভাবেই নির্যাতন করা হয়। যা মুঠো ফোনে তুলে নেয় কেউ একজন। শুক্রবার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয় থেকে টেলিভিশন চুরির অপবাদ দিয়ে এক যুবককে গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতন করেন স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা। তার নাম শাহীনুর রহমান তুহিন (৬০)। তিনি উপজেলার তাহেরহুদা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
হরিণাকুণ্ডু থানার ওসি আসাদুজ্জামান জানান, রানাকে গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতনের এ ঘটনায় তার বাবা ওমর আলী শাহীনুর রহমান তুহিনসহ অজ্ঞাত তিন-চারজনকে আসামি করে শুক্রবার রাতে মামলা করেছেন। পরে এ মামলায় রাতেই শাহীনুর রহমান তুহিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
হরিণাকুন্ড ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মঞ্জের আলী বলেন, এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গেল ২৭ ডিসেম্বর তাহেরহুদা ইউনিয়নের শ্রীপুর বাজারে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয় থেকে টেলিভিশন চুরি হয়। পরদিন সকালে ওই গ্রামের কৃষক ওমর আলীর ছেলে রানাকে (২৫) চোর সন্দেহে মাঠ থেকে ধরে আনেন শাহীনুর রহমান। পরে তাকে শ্রীপুর বাজারের একটি কাঁঠাল গাছে হাত-পা বেঁধে উল্টো করে ঝুলিয়ে পেটানোর পর পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। পুলিশ তাকে হাসপাতালে না নিয়ে টিভি উদ্ধার অভিযানে গেলেও পায়নি। পরে রানাকে তার পরিবারের জিম্মায় দিয়ে দেওয়া হয়। রানা গুরুতর অসুস্থ হয়ে গেলে তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। শুক্রবার সকালে ওই নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি করেছেন ভুক্তভোগীর স্বজন ও এলাকাবাসী।
আরও পড়ুন :
এমসি/এমকে
মন্তব্য করুন