জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আদলে হচ্ছে ডাকসুর আচরণবিধি
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আদলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের খসড়া আচরণবিধি তৈরি করেছে প্রশাসন। ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোকে আচরণবিধির ওই খসড়া দিয়ে এ ব্যাপারে তাদের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে। আজ শনিবারের মধ্যে এ ব্যাপারে ছাত্র সংগঠনগুলোর মতামত লিখিত আকারে প্রক্টর অফিসে জমা দিতে বলা হয়েছে। রোববার অথবা সোমবার সিন্ডিকেট মিটিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট খসড়াটি চূড়ান্ত করবে।
খসড়া আচরণবিধিতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নিজ হলের বৈধ পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভোট দেওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আচরণবিধির খসড়াপত্রের সঙ্গে প্রেরণ করা হলো৷
খসড়াটি সম্পর্কে কোনও মতামত বা সুপারিশ থাকলে তা আজকের (২৬ জানুয়ারি) মধ্যে প্রক্টর কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
আচরণবিধিতে বলা হয়েছে, কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা, প্রত্যাহার বা নির্বাচনী প্রচারণায় কোনও ধরনের যানবাহন, মোটরসাইকেল ও মোটরযান সহকারে শোভাযাত্রা, শোডাউন বা মিছিল করা যাবে না, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিলের সময় কোনও মিছিল বা শোভাযাত্রা করা যাবে না। প্রার্থী পাঁচজনের বেশি সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন না।
প্রার্থী-তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার দিন থেকে নির্বাচনের দিনের ২৪ ঘণ্টা আগে পর্যন্ত প্রচার চালানো যাবে। দৈনিক নির্বাচনী প্রচারের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত নির্বাচনী বিধি রাখা হয়। ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটার বা প্রার্থী ছাড়া অন্য কেউ কোনোভাবেই কোনো প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রচার চালাতে পারবেন না।
কোনও প্রার্থী বা তার পক্ষে কেউ কোনও সভা-সমাবেশ-শোভাযাত্রা করতে চাইলে দিন, সময় ও স্থান উল্লেখপূর্বক সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নেওয়ার কথা বলা হয় আচরণবিধিতে। এ ধরনের অনুমতি লিখিত আবেদন প্রাপ্তির সময়ের ক্রমানুসারে দেওয়া হবে। সভা-সমাবেশ-শোভাযাত্রা করার অনুমতি অন্তত ৪৮ ঘণ্টা আগে নেওয়ার কথা বলা হয়। কোনও প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনও ছাত্রসংগঠন হলের ভেতরে বা ক্যাম্পাসে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা বা রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমোদিত স্থান ছাড়া অন্য কোথাও কোনও সভা-সমাবেশ-শোভাযাত্রা করতে পারবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে এমন সড়কে জনসভা-পথসভা বা সমাবেশ এমনকি কোনও মঞ্চ তৈরি করা যাবে না। পাঠদান বা পরীক্ষা-কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে এমন কোনও স্থানে সভা-সমাবেশ বা নির্বাচনী প্রচারণা করা যাবে না। এক প্রার্থী বা একটি প্যানেলের পক্ষে প্রতিটি হলে একটি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩টি প্রজেকশন মিটিং করা যাবে।
আচরণবিধিতে শ্রেণীকক্ষের ভেতর ও বারান্দায় মিছিল না করার নির্দেশনা রয়েছে। কোনও ধর্মীয় উপাসনালয়ে কোনও প্রকার নির্বাচনী প্রচার চালানো যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এবং আবাসিক হলে কেবল মিলনায়তনে বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মাইক ব্যবহার করা যাবে। প্রতিপক্ষের সভা-সমাবেশ-শোভাযাত্রা এবং অন্যান্য প্রচারাভিযান ব্যাহত বা পণ্ড হতে পারে বা গোলযোগ সৃষ্টি হতে পারে এমন কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে না। নির্বাচনী প্রচারে কোনও প্রার্থী নিজের ছবি ছাড়া অন্য কারও ছবি বা প্রতীক লিফলেট বা হ্যান্ডবিলে ব্যবহার করতে পারবেন না।
আগামী ১১ মার্চ এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওইদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলবে। বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের গঠনতন্ত্রের ৮ (ই) ধারা অনুযায়ী ডাকসুর সভাপতি হিসেবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান নির্বাচনের এ তারিখ ও সময় নির্ধারণ করেন।
এমসি/পি
মন্তব্য করুন