ঢাকাবৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দক্ষিণ এশিয়ার অত্যাধুনিক ডাটা সেন্টার বাংলাদেশে

আরটিভি অনলাইন ডেস্ক

সোমবার, ০৪ নভেম্বর ২০১৯ , ০৬:৩৪ পিএম


loading/img

পরবর্তী প্রজন্মের ওয়্যারলেস প্রযুক্তি নিয়ে চলছে নানা উদ্ভাবন। ধারণা করা হচ্ছে, এ প্রযুক্তি আমাদের প্রতিদিনকার জীবনযাত্রার ধরনকেই বদলে দিবে। স্বয়ংক্রিয় গাড়ি চালনা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), ভার্চুয়াল রিয়ালিটি (ভিআর), বিগ ডাটা, ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি), স্মার্ট সিটি ও নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে ফাইভ জি। আর প্রযুক্তির অগ্রযাত্রার সাথে সাথে পৃথিবীজুড়ে বেড়ে চলেছে ডাটার গুরুত্ব। ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে এর চাহিদা। আর এই ডাটা প্রসেসিং- এ সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বিষয় হচ্ছে ডাটা সেন্টার। বিনোদন, কর্মসংস্থান, উদ্ভাবন থেকে শুরু করে আধুনিক অর্থনীতিতেও ডাটা সেন্টারের রয়েছে সক্রিয় প্রভাব।  

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই এক্ষেত্রে। ২০০৯ সালে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ডিজিটালকরণে তাঁর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ প্রয়াস ব্যক্ত করেন। ২০১৯ সালে এসে এখন আমরা এর সুফল উপভোগ করতে পারছি। বিগত দশক ধরে চিকিৎসা, শিক্ষা, সরকার ব্যবস্থা ও অর্থনীতি সহ সবক্ষেত্রেই প্রবৃদ্ধির অন্যতম কারণ এই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’। নাগরিক সেবা সহজ ও সুবিধাজনক করার পাশাপাশি সরকার ব্যবস্থাকে প্রযুক্তিভিত্তিক করতে বাংলাদেশ সরকার নিয়েছে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে দেশের অর্থনীতিকে ‘ডিজিটাল ইকোনমি’তে রূপান্তরের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একে ‘নলেজ-বেজড ইকোনমি’তে রূপান্তরের প্রয়াস নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে গেছে ইন্টারনেট আর আমাদের জনসংখ্যাও অনেক দ্রুতগতিতে ডিজিটাল জীবনব্যবস্থায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে।  

ডাটার এই উঠতি চাহিদা নিয়ন্ত্রণে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে হাই-টেক পার্কে দেশের প্রথম জাতীয় টায়ার ফোর ডাটা সেন্টার স্থাপন করেছে বাংলাদেশ। দুই পেটাবাইটের সক্ষমতার এ ডাটা সেন্টার নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৫শ’ কোটি টাকার বেশি (এক পেটাবাইট সমান হচ্ছে ১০ লাখ গিগাবাইট)। এ ডাটা সেন্টারটি নির্মাণে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছে চীনভিত্তিক আন্তর্জাতিক শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান জেডটিই।  

বিজ্ঞাপন

এ নিয়ে জেডটিই করপোরেশন বাংলাদেশের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা (সিএমও) প্যাং উই বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম টায়ার ফোর জাতীয় ডাটা সেন্টার নির্মাণে বাংলাদেশ সরকার আমাদের নির্বাচন করেছে। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের একইসাথে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী এ ডাটা সেন্টার নির্মাণের অংশ হতে পেরে আমরা আনন্দিত। আমার বিশ্বাস, ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে এ ডাটা সেন্টার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে।’

আমাদের জাতীয় ডাটা সেন্টারটি নির্মিত হয়েছে আপটাইম ইনস্টিটিউটের টায়ার ফোর স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী। এ মানদ- নির্ধারণে বিবেচনায় ছিলো ডিজাইন, কনস্ট্রাকশন, অপারেশন ও পারফরমেন্স। টায়ার ফোর ডাটা সেন্টারের বৈশ্বিক মানদ- অনুযায়ী ডাটা সেন্টারটি ৯৯.৯৯৫ শতাংশ সময় সচরাচর থাকবে। 
আপটাইম ইনস্টিটিউটের সনদপ্রাপ্ত টায়ার ফোর ডাটা সেন্টারটি অ্যাভাইলেবিলিটি, পারফরমেন্স ও রিসাইলেন্স অনুযায়ী সর্বাধুনিক টায়ার ফোর ডাটা সেন্টার। এ ডাটা সেন্টারটি দেশের প্রথম জাতীয় ডাটা সেন্টার যার আপটাইম টায়ার ফোর ডিজাইন সার্টিফিকেশন ও ফ্যাসিলিটি সার্টিফিকেশন রয়েছে। এবং ডাটা সেন্টারটি দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম ডাটা সেন্টার যার আপটাইম টায়ার ফোরের ফ্যাসিলিটি সার্টিফিকেশন রয়েছে। আমাদের জাতীয় ডাটা সেন্টারটি ‘ফল্ট টলারেন্ট’, যার মানে ডাটা সেন্টারের কোনো একটা অংশে ত্রুটি ধরা পড়লে বা কোনো যান্ত্রিক প্রতিবন্ধকতা হলে খুব দ্রুতই এটা বন্ধ হবে এবং ডাটা সেন্টারের মূল কার্যক্রমে এর কোনো প্রভাব পড়বে না।

এ ডাটা সেন্টারটি নির্মাণের মধ্য দিয়ে জেডটিই সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত ডিসিডি (ডাটাসেন্টারডায়নামিকস) এশিয়া প্যাসিফিক অ্যাওয়ার্ডস ২০১৯- এ ‘ডাটা সেন্টার কনস্ট্রাকশন টিম অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার জিতে নিয়েছে। ডাটা সেন্টারটি নির্মাণে জেডটিইকে অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে যার মধ্যে ছিলো পরিবহনের অসুবিধা, পাওয়ার সাপ্লাইয়ে বিঘ্ণ ঘটা এবং খারাপ আবহাওয়া প্রভৃতি। 

বিজ্ঞাপন

ভোক্তা, ক্যারিয়ার এবং সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য টেলিযোগাযোগ, মোবাইল ডিভাইস ও এন্টারপ্রাইজ সেবা প্রদানে বৈশ্বিকভাবেই শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান জেডটিই করপোরেশন। প্রতিষ্ঠানটি এর গ্রাহকদের ইন্টিগ্রেটেড এন্ড-টু-এন্ড ইনোভেশন সেবা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশ্বের ১৬০টিরও বেশি দেশে প্রযুক্তি-সংশ্লিষ্ট পণ্য বিক্রি ও সেবা প্রদান করে আসছে জেডটিই। এখন পর্যন্ত ইউরোপ, এশিয়া প্যাসিফিক ও মধ্যপ্রাচ্য সহ বিশ্বের প্রধান প্রধান ফাইভ জি মার্কেটে বাণিজ্যিকভাবে ফাইভ জি সেবা প্রদানের কার্যক্রম পরিচালনা করছে প্রতিষ্ঠানটি।  

এসজে

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |