এমন জানলে ছেলেকে বুয়েটে পাঠাতেন না আবরারের মা
দেশের বহুল আলোচিত বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। হত্যার সঙ্গে জড়িত ২৫ জন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশ নেয় বলে চার্জশিটে উল্লেখ করে আজ বুধবার দুপুরে আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
এদিকে এই খবর টেলিভিশনে দেখে কুষ্টিয়ায় আবরার ফাহাদের মা ও স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই রোডে আবরার ফাহাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় দুচোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে আবরারের মা রোকেয়া খাতুনের। থেমে থেমে বিলাপ করছিলেন তিনি। টিভিতে খবর দেখে মা রোকেয়া খাতুন তখন দুহাতে বুকে চাপড়ে কাঁদতে থাকেন। কাছের দুজন স্বজন সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষাও পাচ্ছিলেন না। পাশেই বসে থাকা আবরারের ছোট ভাইও স্তব্ধ।
এ সময় আবরারের বাবা বরকতউল্লাহ কর্মস্থলে ছিলেন।
আবরারের মা রোকেয়া খাতুন ছেলের নৃশংস হত্যার ঘটনার পর টিভির সামনে যান না। খুনিরা ছেলের নিথর দেহ তুলে নিয়ে যাচ্ছে এই দৃশ্য দেখলে তিনি নিজেকে ঠিক রাখতে পারেন না। তবু আজ বুধবার দুপুরে নিজ বাড়িতে বসে ছেলে হত্যার মামলার অভিযোগপত্র দেওয়ার খবর দেখেন তিনি। এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে দ্রুত অভিযোগপত্র দেওয়ায় পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান তিনি। তিনি বলেন, যেভাবে দ্রুত সময়ে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। তেমনিভাবে বিচার কাজ দ্রুত সময়ে সম্পন্ন করা হয় এবং প্রত্যেকের ফাঁসি দাবি করে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে রায়ও দ্রুত কার্যক্ররের দাবি জানান। বিলাপের সঙ্গে মা রোকেয়া খাতুন বলেন, আগে জানলে ছেলেকে বুয়েটে পাঠাতাম না। জমি চাষ, ব্যবসা করিয়ে ছেলেকে কাছে আগলে রাখতাম। ওরা কেন মারলো আমার ছেলেকে ? বলেন, যারা সরাসরি এবং বাইরে থেকে ছেলেকে মেরেছে তাদের প্রত্যেকের শাস্তি ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে।
এছাড়াও সহযোগিতা করার জন্য পুলিশকে ধন্যবাদ দিয়ে আবরার ফাহাদের ছোট ভাই ফাইয়াজ আবরার বলেন, যে চারজন আসামি পলাতক রয়েছে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হোক। বুয়েটের গাফিলতির জন্য এমন ঘটনা ঘটেছে অভিযোগপত্রে তার উল্লেখ আছে এ বিষয়ে আগামীতে সতর্ক হোক বুয়েট, যেন আর এমন ঘটনা না ঘটে।
উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার দুপুরে মিন্টু রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম ২৫ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে বলে জানান।
জেবি
মন্তব্য করুন