বিরামপুরে শিশু ও গৃহিণীকে দিয়ে জেএসসি খাতা মূল্যায়ন করা হচ্ছিল
দিনাজপুরের বিরামপুরে গৃহিণী ও শিশুদের দিয়ে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের সময় প্রশাসন ১০০টি খাতা জব্দ করেছে।
গতকাল সোমবার উপজেলার বিরামপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে জিয়াউর রহমান নামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর আলম ও যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জামিল উদ্দিন ওই খাতাগুলো জব্দ করেন। খাতাগুলো বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের।
বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুর রহমান জানান, বেলা ১২ টার দিকে তিনি জানতে পারেন যে, বিরামপুর পৌর শহরের আদর্শ বিদ্যালয় জনৈক জিয়াউর রহমান নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে গৃহিনী এবং শিশুদের দিয়ে জেএসসি পরীক্ষার খাতা দেখা হচ্ছে। খবর পেয়ে ইউএনও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর আলম ও যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জামিল উদ্দিনসহ পুলিশকে পাঠানো হয়।
তিনি আরও জানান, দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে এসব খাতা থানায় রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
তবে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য শিক্ষক সাহানুর রহমান ও তার স্ত্রীকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও রিসিভ করেননি তিনি। পরে মোবাইলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
প্রশাসনের লোকজন জিয়াউরের বাড়িতে গেলে জিয়াউর রহমানের স্ত্রী দিলরুবা বেগম জানান, প্রতিবেশী শিক্ষক সাহানুর রহমান ২৫০টি খাতা দিয়ে গিয়েছিলেন। যার মধ্যে মূল্যায়ন করা ১৫০টি খাতা নিয়ে গেছেন তিনি। বাকি ১০০টি খাতা ছিল। এই খাতাগুলো এবার জেএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা তার ছেলে অনিক মূল্যায়ন করেছে বলেও স্বীকার করেছেন তিনি।
শুধু তাই নয়, বাকি ১০০টি খাতা মূল্যায়ন হয়ে গেলে সাহানুর রহমানের স্ত্রী শাহানাজ বেগমের খাতা দিয়ে যাওয়ার কথা ছিল।
সাহানুর রহমান ফুলবাড়ি উপজেলার জয়নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক আর তার স্ত্রী শাহনাজ বেগম বিরামপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। জিয়াউর রহমান একটি চাকরি করেন। সেই চাকরির সূত্রে অন্যত্র থাকেন। তার স্ত্রী দিলরুবা বেগম গৃহিণী। তাদের দুই ছেলের মধ্যে একজন অনিক যে এবার জেএসসি পরীক্ষা দিয়েছে আর একজন আবরার। সে নার্সারিতে পড়ে।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সদ্য শেষ হওয়া জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট-জেএসসি পরীক্ষার বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের ২৫০টি খাতা মূল্যায়নের জন্য দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ড থেকে গ্রহণ করেন শিক্ষক সাহানুর রহমান।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তোফাজ্জুর রহমান জানান, এ ঘটনায় তিনি অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলার পরামর্শ দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার তিনি সরেজমিনে ঘটনাস্থলে যাবেন। এরপর অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন। খাতাগুলো অন্য পরীক্ষককে দিয়ে দেখানো হবে।
জেবি
মন্তব্য করুন