পার্সেল ট্রেনে পঞ্চগড়ের টমেটো যাচ্ছে বিভিন্ন জেলায়
প্রায় একযুগ ধরে দেশের সর্ব উত্তরের প্রান্তিক জেলা পঞ্চগড়ের পাঁচ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার চাষ করা হয়ে থাকে গ্রীষ্মকালীন টমেটো। আর জেলার মধ্যে সব চেয়ে বেশি টমেটো চাষ হয় সদর উপজেলায়। তবে এখানকার কৃষকরা সময়ে অসময়েও চাষ করে থাকে এই উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটো। তবে এবার ফলন ভালো হলেও করোনার পরিস্থিতির কারণে টমেটো বিক্রি নিয়ে বিপাকে ছিলেন কৃষকরা। এবার লাভ তো দুরের কথা পুঁজি বাঁচানো নিয়ে কৃষকের চিন্তা ভোর করেছিল। শেষ সময়ে হলেও কৃষকরা তাদের উৎপাদিত টমেটো প্রশাসনের সহযোগিতায় বিক্রি করতে পারছেন। তাই এখন লাভ না হলেও পুঁজি হারানোর ভয় নেই কৃষকদের।
এদিকে কৃষকের উৎপাদিত পণ্য ব্যবসায়ীরা যাতে কিনে স্বল্প মূল্যে বহন করতে পারে সে লক্ষ্যে একটি বিশেষ পণ্যবাহী পার্সেল ট্রেন চালু করেছে রেল মন্ত্রণালয়। বাইরে থেকে আসা ব্যবসায়ীরা তাদের ক্রয়কৃত টমেটোসহ বিভিন্ন সবজি খুব সহজে ও স্বল্প খরচে পার্সেল ট্রেনে সরবরাহ করতে পারায় তারাও উপকৃত হচ্ছে। পার্সেল ট্রেনটি মাঝে ২১ স্টোপেজে পণ্য নিয়ে ঢাকায় পৌঁছায়।
মৌসুমের শুরুতে করোনা পরিস্থিতির কারণে টমেটো বিক্রি হচ্ছিলো না, তাই লোকসান নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে ছিলো কৃষকরা। বর্তমান প্রশাসনের সহযোগিতায় স্থানীয় ও বাহিরের ব্যবসায়ীরা এসে আড়ৎদারের মারফতে কৃষকের উৎপাদিত টমেটো ক্রয় করা হচ্ছে , প্রতি বছরে দেড়’শ কোটি টাকার টমেটো বিক্রি হলে লাভ হয় দশ কোটি টাকা কিন্তু এবার পরিস্থিতির কারনে লাভ না হলেও পুঁজি উঠে আসবে বলে জানায় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। কিছু কিছু কৃষকের ফলন বিক্রি হবার আগেই ক্ষেতে নষ্ট হয়ে যায়।
পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু হানিফ জানান, করোনা পরিস্থিতির কারনে প্রথমে টমেটো বিক্রি হচ্ছিলো না পরবর্তীতে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বাহির থেকে ব্যবসায়ী এনে টমেটো ক্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলায় ৯৩০ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ হয়ে হয়েছে এবং এ জেলার টমেটো দেশের তৃতীয়াংশ জেলার চাহিদা পূরণ করে থাকে। তাই প্রতিবছর এই জেলা থেকে দেড়শ কোটি টাকার টমেটো দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন জানান, করোনা পরিস্থিতির কারনে পঞ্চগড়ে বাহিরের ব্যবসায়ীরা আসতে পারেনি, ফলে তাদের ফলন বিক্রি হচ্ছিল না। তাই কৃষকের লোকসানের কথা ভেবে বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীদের পঞ্চগড়ে এনে টমেটো চাষিদের ক্ষেতের ফলন বিক্রি করা ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে কৃষি পণ্যের বিক্রির ক্ষেত্রে মালামাল বহনে পরিবহনে যাতায়াতের কোন সমস্যা নেই, কারণ পার্সেল ট্রেনেই ব্যবসায়ীরা এখন পণ্য সর্বারহ করতে পারবে । কৃষকের পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে এবং ব্যবসায়ীদের মালামাল নিয়ে সড়ক পথে যাতায়াতের ক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসনের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা থাকবে বলে জানায় ।
এদিকে ব্যবসায়ীদের ট্রেন ব্যবহারের আহবান জানিয়ে রেল মন্ত্রী এ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, পঞ্চগড় থেকে কৃষকদের পণ্য এখন ব্যবসায়ীরা ট্রেনে ঢাকায় পাঠাতে পারবে এবং পরিবহন খরচও কম হবে । এতে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের অনেক সুবিধা হবে বলে জানান তিনি ।
জিএ
মন্তব্য করুন