• ঢাকা মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
logo

লাগামহীন নিত্যপণ্যের দাম

কমছে বাজার মনিটরিং, সিন্ডিকেটের পোয়াবারো

আরটিভি নিউজ

  ২২ আগস্ট ২০২৩, ০১:৩৭
বাজার সিন্ডিকেট
ফাইল ছবি

নিত্যপণ্যের লাগামহীন দাম, আর বাজারে অসাধু সিন্ডিকেটের তৎপরতায় যখন সাধারণ মানুষ দিশেহারা, ঠিক সেই সময় জনবল সঙ্কটের অজুহাতে কমানো হচ্ছে বাজার মনিটরিং। তদারকি কমানোয় বাজারে মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে সিন্ডিকেট।
ভোক্তাদের জিম্মি করে হাতিয়ে নিচ্ছে শত শত কোটি টাকা। ভোক্তাদের নাভিশ্বাস আর সিন্ডিকেটের পোয়াবারো।

গত বছর ৭৫৯ বাজার পরিদর্শন করে মন্ত্রণালয়। এ বছর তা কমিয়ে ২৫০ এ আনা হয়েছে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বার্ষিক কর্মপরিকল্পনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

যার ফলে বাজারে আরো সক্রিয় হচ্ছে অসাধু সিন্ডিকেট। ইতোমধ্যে বিভিন্ন পণ্যে সিন্ডিকেট থাবা বসাতে শুরু করেছে। হু হু করে নিত্যপণ্যের দাম। বিশেষ করে ডিম ও পেয়াজের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। গত সপ্তাহে একাধিকবার ডিমের দাম বাড়ছে, আবার কমছে। আর বেড়েছে পেয়াজসহ সব পণ্যের দাম।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, নিত্যপণ্যের বাজারে সর্বত্রই সিন্ডিকেটের থাবা বিরাজমান। তৃণমুলে পণ্যমূল্য ও সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং কার্যক্রম আরো জোরদারের সুপারিশ আসছে।

বাজার সংশ্ষ্টিরা বলছেন, এ সময়ে সরকারের দায়িত্বশীল মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তরকে আরো কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে। সাধারণ মানুষের স্বার্থে তাদের কার্যক্রম আরো বাড়াতে হবে। লোকবল অভাব দেখিয়ে উল্টোপথে হাঁটছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তার সঙ্গে যোগ দিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর। বাজার মনিটরিং কার্যক্রম ছাড়াও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৯টি অতিনিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বেঁধে দেয়ার ঘোষণা দিলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।

সূত্র জানায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং কর্মসূচির আওতায় সারা বছর নিত্যপণ্যের বাজার পরিদর্শনের সংখ্যা ৭৫৯ থেকে কমিয়ে ২৫০ করা হয়েছে। ফলে আগের অর্থবছরের তুলনায় পরিদর্শনের সংখ্যা কমছে ৫০৯টি। আর জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর গত অর্থবছর ১১ হাজার ৭৮৫টি বাজার তদারকি করে। কিন্তু চলতি অর্থবছরে তা ১০ হাজারে নামিয়ে আনা হয়। অর্থাৎ গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে বাজার পরিদর্শন কমিয়ে আনা হয়েছে ১ হাজার ৭৮৫টি।
ইতোমধ্যে এই পরিকল্পনা নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু হয়েছে বলেও সুত্র নিশ্চিত করে।

সূত্র আরও জানায়, দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ রাখতে ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত ৩১ হাজার ৯২৩টি বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময়ে ৫২ হাজার ৩৯০টি অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়। যার মাধ্যমে জরিমানা আদায় করা হয় ৪৮ কোটি টাকা। এত অভিযান পরিচালনার পরও বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। সেখানে তদারকি কমানো হলে বাজারে সিন্ডিকেট মাথা চাড়া দিয়ে উঠার শঙ্কা রয়েছে।

সূত্র বলছে, অনেক পণ্যের দাম বিশ্ববাজারে কমলেও দেশে দাম উল্টো বেড়েছে। ডলার সংকট, বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম ওঠানামা, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিসহ বৈশ্বিক সংকট প্রভাবের কথা বলে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল করে তোলা হয়েছে। তবে এসব প্রভাবে মূল্য যতোটা বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি বেড়েছে সিন্ডিকেটের কারসাজিতে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, শুধু এক ডিমের বাজার ঘিরে এক সপ্তাহে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বাজারে অভিযান চালিয়েও নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। শুধু ডিম নয়, সবজি, মাছ, মাংস, চিনি, ভোজ্যতেলসহ অধিক প্রয়োজনীয় প্রতিটি পণ্যের বাজারে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে।

বিদ্যমান বাজার পরিস্থিতিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেলকে আরো শক্তিশালী করার কথা বলেন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান।

এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য (আইআইটি) অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন গণমাধ্যমকে জানান, মন্ত্রণালয়ের বাইরে জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরসহ অন্যান্য সংস্থা মনিটরিং কাজটি করছে। ওসব সংস্থা সঠিকভাবে করছে কিনা তা কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আর প্রতিদিন বাজার পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করতে আরও জনবল প্রয়োজন। মন্ত্রণালয়ের যে লোকবল আছে তা দিয়ে সেটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে গেলে কর্মকর্তারা অন্য কাজ করতে পারবেন না। তাই মনিটরিং কার্যক্রম কমিয়ে আনা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • অর্থনীতি এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
সরবরাহ বাড়িয়ে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
নিত্যপণ্যের দাম সহনশীল করতে ২-৩ বছর লাগবে: গভর্নর
টাঙ্গাইলে দুই কেজি চালের দামে এক কেজি বেগুন!
সরকারকে বিপদে ফেলতে নিত্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে সিন্ডিকেট: সমন্বয়ক রাসেল