এক্সিম ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পারবেন পদ্মার আমানতকারীরা
শরিয়াহভিত্তিক এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হয়েছে পদ্মা ব্যাংক। এর ফলে দুর্দশাগ্রস্থ ব্যাংকটির সব দায় এখন থেকে এক্সিম ব্যাংকের। এতে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে একীভূত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক উদ্যোগের পর দুটি ব্যাংকের একীভূত হওয়ার এটিই প্রথম ঘটনা। আর এর মধ্য দিয়ে এখন থেকে এক্সিম ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পারবেন পদ্মা ব্যাংকের আমানতকারীরা।
সোমবার (১৮ মার্চ) বেসরকারি খাতের ব্যাংক দুটির মধ্যে একীভূত হওয়ার চুক্তি সই হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের উপস্থিতিতে এ সময় কর্মকর্তাদের পাশাপাশি দুই ব্যাংকের উদ্যোক্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, পদ্মা ব্যাংকের সব দায় নেওয়া হবে। ব্যাংকটি একীভূত হলেও এর কোনো কর্মী চাকরি হারাবে না। কোনো সমস্যা হবে না আমানতকারীদের, সবাই নিরাপদে থাকবেন। পদ্মা ব্যাংকের আমানতকারীরা এক্সিম ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পারবেন।
উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, পদ্মায় জাল ফেলেছে এক্সিম ব্যাংক। এখন ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরার পালা। এক বছরের মধ্যে পদ্মা ব্যাংক ভালো হয়ে যাবে। চাইলে পদ্মা ব্যাংকের যে কোনো ব্যক্তিগত আমানতকারী তার টাকা এক্সিম ব্যাংক থেকেই তুলে নিতে পারবেন। পদ্মা ব্যাংকের সকল দায়ভার এখন থেকে গ্রহণ করল এক্সিম ব্যাংক।
এর আগে ব্যাংক দুটির পরিচালনা পর্ষদ একীভূতকরণের প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়। তবে, কীভাবে এই একীভূত হওয়ার কার্যক্রম সম্পন্ন হবে, তা বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা ও পরামর্শক্রমে দুই ব্যাংকের আইনজীবীরা মিলে ঠিক করবেন। সমঝোতা চুক্তি হলে একীভূত হওয়ার কার্যক্রমের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ভালো ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংকের একীভূত কার্যক্রম সম্পন্ন করতে শিগগিরই একটি নীতিমালা প্রণয়ন করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেই নীতিমালার আওতায় একীভূত হওয়ার কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।
এর আগে গত ৪ মার্চ ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে গভর্নর জানান, চলতি বছরের মধ্যে ৭ থেকে ১০টি দুর্বল ব্যাংককে সবল বা ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা হতে পারে। এ সময়ের মধ্যে দুর্বল ব্যাংকগুলো নিজেদের ইচ্ছায় একীভূত না হলে আগামী বছর থেকে তাদের চাপ দিয়ে একীভূত করা হবে।
জানা গেছে, পদ্মা ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ রয়েছে, যা কিনে নেবে একটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি। ফলে যে কারণে ব্যাংকটির সম্পদের (ঋণ ও বিনিয়োগ) মান খারাপ হয়ে পড়েছে, তা আর থাকবে না। এরপর ভালো সম্পদগুলো নিয়ে কার্যক্রম শুরু করবে এক্সিম ব্যাংক। এর ফলে এক্সিম ব্যাংকের সূচক খারাপ হয়ে পড়ার কোনো শঙ্কা নেই।
মন্তব্য করুন