ঢাকামঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ২৫ চৈত্র ১৪৩১

ব্রাজিলে বাণিজ্য মানে দক্ষিণ আমেরিকার বাজারে ঢোকার সুযোগ

আরটিভি নিউজ

সোমবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৪ , ০১:৫৭ পিএম


loading/img

তৈরি পোশাক ও পাট রপ্তানির জন্য ব্রাজিলে ডিউটি ফ্রি অ্যাকসেস অর্থাৎ শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়েছে বাংলাদেশ। এখন ৩০-৩৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ব্রাজিলের বাজারে যেতে হয়। তবে বিশ্লেষক, কর্মকর্তা ও অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, এই দুটি বিষয়ে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্ভাবনা অনেক বেশি। তারা বলছেন, ব্রাজিলের মার্কেটে ঢোকা মানে দক্ষিণ আমেরিকার অন্য বাজারে ঢোকার সুযোগ তৈরি হওয়া।

বিজ্ঞাপন

গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্রাজিল থেকে ২ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। আর রফতানি করেছে মাত্র ১৭৮ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। এর মধ্যে ব্রাজিল থেকে তুলা আমদানিতে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। 

রোববার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ  জানিয়েছেন, বৈঠকে তিনি তুলা আমদানি বাড়ানো ছাড়াও ব্রাজিলে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর কথা বলেছেন। এছাড়া স্পেশাল ইকনোমিক জোনে ব্রাজিলের বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করতে আহবান জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, এখন ৩০-৩৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাককে ব্রাজিলের বাজারে যেতে হয়।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা সফররত ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরোর সাথে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর বৈঠকে হয়েছে। ব্রাজিল বাংলাদেশে গরুর মাংস রপ্তানিতে আগ্রহী হলেও বাংলাদেশ চাইছে জীবন্ত গরু আমদানির সুযোগ। পাশাপাশি ব্রাজিল যেন তাদের বাজারে তৈরি পোশাক ও পাটের শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা দেয়, বাংলাদেশ সেই দাবিও জানিয়েছে। ব্রাজিল আগে থেকেই বাংলাদেশে স্বল্পমূল্যে মাংসজাত পণ্য, বিশেষ করে গরুর মাংস রপ্তানির জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে আসছিল।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, ‌‘ব্রাজিল কম দামে মাংস উৎপাদন ও রপ্তানি করতে পারে। সে বিষয়ে তারা বলেছে। কোরবানি সামনে রেখে আমি বলেছি সস্তা হলে লাইভ ক্যাটল (জীবন্ত গরু) আনার ব্যবস্থা করা যায় কি না। তারা দেখবে বলেছে।’

ব্রাজিলের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করা গেলে দক্ষিণ আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি দেশের বাজারে বাংলাদেশ প্রবেশের সুযোগ পাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ব্রাজিলে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত জুলফিকার রহমান বলেন,  ‘ব্রাজিল অনেক বড় অর্থনীতির দেশ এবং এর বিশাল বাজারে ঢোকার সুযোগ পেলে বাংলাদেশ লাভবানই হবে। এটি এতদিন উপেক্ষিতই ছিলো।’

বিজ্ঞাপন

আর অর্থনীতিবিদ ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলছেন, ‘দূরত্বজনিত কারণে বাণিজ্যে খরচ বৃদ্ধিসহ কিছু চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও ব্রাজিলের বাজারের মাধ্যমে দক্ষিণ আমেরিকার অন্য বাজারগুলোতেও যেতে পারবে বাংলাদেশ। এছাড়া বাংলাদেশে সরকার যে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করছে সেখানে ব্রাজিল বিনিয়োগ করলে দূরত্ব জনিত পরিবহন খরচ অনেকাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।’

ব্রাজিল-সহ দক্ষিণ আমেরিকার আরও কয়েকটি দেশের সাথে বাংলাদেশ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদন করতে আগ্রহী এবং এটি হলে বাংলাদেশের জন্য ভালো হবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ব্রাজিলে কিছু পণ্যের ওপর ট্যারিফ বিধিনিষেধ আছে। প্রেফারেন্সিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট করা গেলে শুল্ক সমস্যার সমাধান হবে। আর মনে রাখতে হবে যে ব্রাজিলের মার্কেটে ঢোকা মানে দক্ষিণ আমেরিকার অন্য বাজারে ঢোকার সুযোগ তৈরি হওয়া।’

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |