রাজনৈতিক সুবিধা পেতে আ.লীগ প্রবৃদ্ধিকে অতিরঞ্জিত দেখিয়েছে: ড. দেবপ্রিয়
দেশের অর্থনীতির শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, রাজনৈতিক সুবিধা নিতে আওয়ামী লীগ সরকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে অতিরঞ্জিত দেখিয়েছে। তাই জিডিপির প্রকৃত আকার জানতে একটি কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে কসমস ফাউন্ডেশন আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
জাতীয় উন্নয়নের নির্ভরযোগ্য তথ্য-উপাত্ত নিশ্চিতে পরিসংখ্যান প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীন কমিশনে রুপান্তরের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, গত ১৫ বছরের বেশিরভাগ সময় উচ্চ প্রবৃদ্ধির হিসাবে দেশের অর্থনীতির আকার ছাড়িয়েছে সাড়ে ৪০০ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু অর্থনীতিবিদরা প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বেসরকারি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের মত সংশ্লিষ্ট সূচকের ভারসাম্য খুঁজে পাননি।
শ্বেতপত্র কমিটি দেখেছে রাজনৈতিক সুবিধা পেতে উন্নয়নকে অতিরঞ্জিত করা হয়েছে। এসব বিবেচনায় দেশের অর্থনীতির প্রকৃত আকার বের করা জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, দেড় দশকে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমাদের যে উন্নয়ন পরিসংখ্যান আছে তাকে আরেকটি আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে হবে। আমাদের যেমন একটি কর্ম কমিশন আছে এমন একটি কমিশন করে রাষ্ট্রপতির কাছে নিয়ে সংসদের কাছে জবাবদিহি করার একটা সুরক্ষার কথা আমরা প্রস্তাব করেছি।’
সরকারি কেনাকাটা ও প্রকল্পে ৪০ শতাংশ অর্থ লোপাট হয়েছে বলে মনে করেন আলোচকরা। আর এজন্য ই-জিপি পদ্ধতি আরও স্বচ্ছ করতে হবে। টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে বিদ্যুৎ-জ্বালানি, সামাজিক কর্মসূচি, ব্যাংকখাত ও গ্রামীণ শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল সংস্কার দরকার। জনগণের করের টাকায় ভর্তুকি কমাতে রাষ্ট্রায়ত্ত নাজুক শিল্পগুলো বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শও দেন বক্তারা।
অর্থনীতির বিশ্লেষক পারভেজ করিম আব্বাসী বলেন, ‘আওয়ামী সরকার জনপ্রশাসনে কর্মরতদের সুযোগ সুবিধা ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে। এভাবে তাদের নীরব সমর্থন আদায় করে রেখে শাসনকাল দীর্ঘায়িত করেছে। এখন কার্যকর পরিকল্পনা নিতে হবে যে, জনগণের অর্থে কতবড় জনপ্রশাসন বহাল রাখবো। আমার মতে, সরকারি চাকরিতে দক্ষতা, পেশাদারিত্ব বাড়াতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগও হতে পারে।’
মতবিনিময় সভায় বলা হয়, প্রবাসী আয়ের ওপর ভর করেই অনেকদিন ধরে মন্দা এড়িয়ে চলছে অর্থনীতি। এমন অবস্থায় এলডিসি উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রপ্তানিপণ্য ও বাজারে বৈচিত্র্য আনতে গুরুত্ব দেন বিশ্লেষকরা।
আরটিভি/এআর
মন্তব্য করুন