২০০৬ সালের ৯ মে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়। আগামী ৯ মে বিশ্ববিদ্যালয়টির ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। দীর্ঘ ১৮ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মাত্র একবার সমাবর্তন হয়। ২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল প্রথম সমাবর্তনে ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত মোট পাঁচটি ব্যাচের ১ হাজার ৩৯৯ জন গ্র্যাজুয়েট অংশগ্রহণ করেন। সমাবর্তনে ২৯ শিক্ষার্থীকে ৩২টি স্বর্ণপদক দেওয়া হয়।
প্রায় অর্ধযুগ আগে প্রথম সমাবর্তন হয়েছে। এরপর এখন পর্যন্ত আরও অন্তত ৭টি ব্যাচের গ্র্যাজুয়েটরা সমাবর্তনের আশায় আছেন। সর্বশেষ স্নাতক ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের কয়েকটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা পাস করে সমাবর্তনের আশায় রয়েছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সমাবর্তনের আয়োজন করছে না।
যদিও প্রথম সমাবর্তন ঘিরেও ছিল সমালোচনা। সমালোচনার হয়েছিল সার্টিফিকেট নিয়ে। সেখানে ভুলভ্রান্তি নিয়ে অভিযোগ ওঠে। এরপর নতুন সার্টিফিকেট তৈরি হয়। তা নিয়েও রয়েছে সমালোচনা। নতুন ধরনের সার্টিফিকেট ‘এক পাতার দুই পাশে’ নিয়েও বিতর্ক চলে। বিষয়টি নিয়ে আরটিভি নিউজ ‘নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট : এক পাতার দুই পাশে’ শিরোনামে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি সংবাদ প্রকাশ করে।
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী রাশেদ খান জানান, সমাবর্তন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নিকট অত্যন্ত গৌরব ও সম্মানের। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ষোড়শ আবর্তনের শিক্ষার্থীরা এ বছর ভর্তি হয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠাকাল থেকে মাত্র একটি সমাবর্তন আয়োজিত হয়েছে। সমাবর্তনের অপেক্ষা এখন আক্ষেপে রূপ নিচ্ছে।
একই শিক্ষাবর্ষের আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী জায়েদ বিন খলিল জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে প্রত্যাশা থাকবে, প্রতি বছর সমাবর্তন আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের স্বপ্নের পরিপূর্ণতা দিতে।
সিএসই বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সুদর্শন আইচ বর্তমানে জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার (আইটি)। তার দাবি, দেশের অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় সমাবর্তন হচ্ছে। করোনা মহামারির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আন্তরিক ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তারা আয়োজন করতে পারেনি। আশা করি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরবর্তী সমাবর্তন আয়োজনে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী এবং লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের প্রভাষক তানজিল আহমেদ জানান, সমাবর্তনের প্রত্যাশা সবারই থাকে। সমাবর্তন হলে শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতি বাড়বে।
ছাত্র উপদেষ্টা ড. তপন কুমার বলেন, দ্বিতীয় সমাবর্তন কেন হচ্ছে না, এর উত্তর আমার জানা নেই। তবে করোনা পরিস্থিতি একটা কারণ। এ ছাড়া সমাবর্তন আয়োজনের জন্যে ফান্ড গঠনসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা করার প্রয়োজন আছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর জানান, দীর্ঘদিন কেন সমাবর্তন হয়নি, তা আমার জানা নেই। সমাবর্তন যাতে হয়, সেই ব্যবস্থা করব। সমাবর্তন না হওয়ার লকটা আমরা ভাঙতে চাচ্ছি। আগামী মে মাসে আমরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে এ বিষয়ে সময় চাইব।