‘উড়লে আকাশে প্রজাপতি, প্রকৃতি পায় নতুন গতি’ স্লোগানে এবারও প্রজাপতি সংরক্ষণ ও গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ‘প্রজাপতি মেলা-২০২৩’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সকাল দশটায় জহির রায়হান মিলনায়তনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত দিনব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় আমরা মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের চেষ্টা করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃতি রক্ষায় একটি বায়োডাইভারসিটি প্ল্যান ও একটি একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। প্রজাপতি মেলা সবার কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রজাপতি মেলায় প্রজাপতির আদলে যে সকল প্রদর্শনী হচ্ছে তা শিশুদের মনেও মনে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে।’
মেলার আহ্বায়ক ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একসময় ১১০ প্রজাতির প্রজাপতির দেখা মিলতো। কিন্তু ক্যাম্পাসে নগরায়নের ফলে প্রজাপতি তার আবাসস্থল হারাচ্ছে। কমছে এর সংখ্যা। ফলে এখন ক্যাম্পাসে মাত্র ৫৭ প্রজাতির দেখা মিলে। আমরা বৃক্ষরোপণের ফলে হয়তো বড় বড় গাছ লাগাই, কিন্তু গাছে নিচের ঝোঁপঝাড় হচ্ছে প্রজাপতির আবাসস্থল। সেটা একবার নষ্ট হয়ে গেলে আর লাগানো হয় না। এই প্রজাপতিদের সংরক্ষণে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তার রঙিন ডানায় সংরক্ষণের অঙ্গীকার নিয়েই আমাদের কাজ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাই প্রাণ-প্রকৃতি সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠবে এটাই সবচেয়ে বড় প্রত্যাশা।
এ ছাড়া এ সময় অন্যান্য বক্তারা প্রজাপতি সংরক্ষণের উপর জোর দেন। এ ছাড়া জনসাধারণের মাঝে প্রজাপতি সংরক্ষণে ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এই মেলা আয়োজনের অঙ্গীকার করেন।
এবারের আসরে পরিবেশ সংরক্ষণে বিশেষ অবদানের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলামকে বাটারফ্লাই অ্যাওয়ার্ড-২০২৩ প্রদান করা হয়।
প্রজাপতি নিয়ে গবেষণা কর্মের জন্য চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জহির রায়হানকে বাটারফ্লাই ইয়াং ইনথুসিয়াস্ট অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়। এছাড়া প্রথমবারের মতো মেলায় তিনজন সাংবাদিককে ‘বাটারফ্লাই মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়।
মেলা উপলক্ষে প্রজাপতি পার্ক ও গবেষণা কেন্দ্র জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল। দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্যে ছিল শিশু-কিশোরদের জন্য প্রজাপতি বিষয়ক ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা এ প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন বয়সী প্রায় একশ শিশু অংশগ্রহণ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছবি চত্বরে ও জহির রায়হান অডিটোরিয়ামে আয়োজন করা হয় প্রজাপতির আলোকচিত্র প্রদর্শনী। এতে বিভিন্ন প্রজাতির প্রজাপতির নির্বাচিত ছবিগুলো স্থান পায়। এ ছাড়া অন্যান্য আয়োজনের মধ্যে ছিল প্রজাপতির আদলে ঘুড়ি উড্ডয়ন, বারোয়ারি বিতর্ক প্রতিযোগিতা, প্রজাপতি চেনা প্রতিযোগিতা, প্রজাপতিবিষয়ক ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী, পুরস্কার বিতরণী।