হাওর, দ্বীপ ও চর অঞ্চলে অবস্থিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্থানীয় শিক্ষক ও কর্মচারীদের জন্য বড় সুখবর দিয়েছে সরকার। এসব স্থানীয় শিক্ষক ও কর্মচারীদের ভাতা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে অর্থ বিভাগের ২০২২ সালের একটি নির্দেশনা বাতিল করে অতিরিক্ত ৭ কোটি ৫১ লাখ ৫৯ হাজার ৬০০ টাকা বরাদ্দ দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
রোববার (২৫ মে) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয়-২ শাখা থেকে পাঠানো এক অফিস আদেশে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
যুগ্ম সচিব রেবেকা সুলতানা সই করা ওই স্মারকে বলা হয়, বর্তমানে হাওর/দ্বীপ/চর হিসেবে ঘোষিত ১৬টি উপজেলার শুধু অস্থায়ী (অস্থানীয়) শিক্ষক ও কর্মচারীরা ভাতা পাচ্ছেন। কিন্তু ওই অঞ্চলেরই শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে যারা নিজ উপজেলাতেই কর্মরত, তারা এই ভাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
২০১৯ সালের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী, শিক্ষকরা নিজ নিজ উপজেলাতেই নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ফলে হাওর, চর বা দ্বীপ এলাকার শিক্ষকরা পায়ে হেঁটে, কাঁচা রাস্তা পেরিয়ে কিংবা দুর্গম জলপথে বিদ্যালয়ে পৌঁছান, যা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষ করে নারী শিক্ষকদের জন্য এই পরিস্থিতি আরও কঠিন। ফলে এসব এলাকায় নিয়মিত শিক্ষক না থাকায় শিক্ষাদানে বিঘ্ন ঘটে।
এতে আরও বলা হয়, হাওর/চর/দ্বীপ হিসেবে ঘোষিত ১৬টি উপজেলার ১ হাজার ৩০৭টি শিক্ষক ও কর্মচারীর পদ শূন্য রয়েছে। এসব এলাকায় শিক্ষক স্বল্পতার প্রধান কারণ হিসেবে নারী শিক্ষকদের অন্যত্র বদলির প্রবণতা এবং ভাতা না পাওয়া দায়ী।
এর আগে, ২০১৯ সালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একটি এসআরও এর মাধ্যমে ১৬টি উপজেলাকে হাওর/চর/দ্বীপ উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর ২০২২ সালে অর্থ বিভাগের এক স্মারকে বলা হয়, এসব অঞ্চলের স্থায়ী বাসিন্দারা নিজ উপজেলায় কর্মরত থাকলে তারা ওই ভাতা পাবেন না। ফলে স্থানীয় শিক্ষকরা এর আওতা থেকে বাদ পড়ে যান।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অর্থ উপদেষ্টা ও অর্থ সচিবের সঙ্গে এ বিষয়ে পৃথক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আর্থিক বিবরণীসহ চূড়ান্ত প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়।
বর্তমানে রাজস্ব বাজেট থেকে অস্থায়ী শিক্ষক-কর্মচারীদের ভাতার জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৩০ কোটি ৩৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা বরাদ্দ রয়েছে। নতুনভাবে স্থানীয় বাসিন্দাদের অন্তর্ভুক্ত করতে হলে অতিরিক্ত ৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা প্রয়োজন হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।
আরটিভি/একে