ঢাকাবুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১

পোলট্রি শিল্পে অ্যান্টিবায়োটিকের বিকল্প উদ্ভিজ্জ নির্যাস: বাকৃবির গবেষণা

বাকৃবি প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ০৩:০৮ এএম


loading/img

অ্যান্টিবায়োটিক রেসিস্ট্যান্স শব্দটির সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। অ্যান্টিবায়োটিকের যাচ্ছেতাই ব্যবহারই এর অন্যতম কারণ। বাংলাদেশে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি দেখা যায় পোলট্রি শিল্পে। ফলস্বরূপ এই অ্যান্টিবায়োটিক দেহে সৃষ্টি করছে নানা রকমের বিরূপ প্রভাব।

বিজ্ঞাপন

আর এই অ্যান্টিবায়োটিক নির্ভরশীলতা কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম ও তার গবেষক দল বাউসেফ-ভেট নামে এক ধরনের উদ্ভিজ্জ নির্যাস বা সল্যুশনের উদ্ভাবন করেছেন। গবেষণাটি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের অর্থায়নে টানা সাত বছর ধরে পরিচালিত হয়েছে। অধ্যাপক ড. শফিকুলের নেতৃত্বে পরিচালিত এই গবেষণা দলে ছিলেন স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী মো. আবু রায়হান পারভেজ, শাকিল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, তানভীর হাসান, নাজিবুল হক এবং আশরাফুল আলম।

গবেষণাটি নিয়ে ড. শফিকুল বলেন, ‘বাউসেফ-ভেট এক ধরনের সল্যুশন বা উদ্ভিজ্জ নির্যাস যা পোল্ট্রি শিল্পে অ্যান্টিবায়োটিক-মুক্ত ব্রয়লার উৎপাদনের ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা করতে সক্ষম। নিম পাতার গ্রোথ প্রোমোটিং ইফেক্ট, ইমিউনো স্টিমুলেন্ট, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল প্রভাবসহ ৫টি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এখানে শনাক্ত করা হয়েছে এবং সেই উপাদান দিয়ে এই সল্যুশন বা নির্যাস তৈরি করা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

ড. শফিকুল বলেন, ‘আমরা এখন এটা পেটেন্ট করার চেষ্টা করছি। তাছাড়া আমরা এটার ল্যাব ট্রায়াল শেষ করেছি। দিনাজপুর ও গাজীপুরে ফিল্ড ট্রায়ালও সম্পন্ন হয়েছে। দিনাজপুরে ফিল্ড ট্রায়ালে এর ব্যবহারে আমরা দেখেছি প্রতিটি মুরগির ওজন প্রায় ৩৫০ থেকে ৫০০ গ্রাম বেড়েছে, যা প্রতিটি মুরগির দেহের ওজনের প্রায় ৩০ শতাংশ। এর স্বাদ সাধারণ ব্রয়লারের তুলনায় বেশি। পাশাপাশি মাংসের গুণগত মানও অনেক ভালো।’

সল্যুশনটির দাম সম্পর্কে এই গবেষক বলেন, ‘১০০ মুরগি পালন করতে প্রায় ২ লিটার সল্যুশন লাগে। যার দাম প্রায় ৪০০০ টাকা। কিন্তু মুরগির ওজন বাড়ায় এই দাম কয়েক গুণ লাভসহ উঠে আসে।’

তিনি বলেন, ‘এটি ব্রয়লার এর জন্য ১০০ শতাংশ নিরাপদ। এটি দেওয়ার পর দেখা গেছে কোন রোগের উদ্ভব হয়নি অর্থাৎ এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া একদমই নেই। সতর্কতা স্বরুপ মুরগিকে ভ্যাকসিন দেওয়া হলেও আর কোন ওষুধ লাগে না, কারণ এ সময় পোলট্রি কোন রোগেও আক্রান্ত হয় না।’

বিজ্ঞাপন

গবেষণাটির অর্জন নিয়ে ড. শফিকুল বলেন, ২০২৫ সালে ৩১তম বাংলাদেশ ভেটেরিনারি শিক্ষা ও গবেষণা সমিতি (বিএসভিইআর) কর্তৃক আয়োজিত বার্ষিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে এই গবেষণার পোস্টার ‘High Performance Liquid Chromatography Analysis of Azadirachta in a Pathway to Drug Discovery for Safe Poultry Production in Bangladesh’ নামে সেরা পোস্টার উপস্থাপনা পুরস্কার অর্জন করেছে যা আমাদের গবেষণাকে আন্তর্জাতিক পরিসরে স্বীকৃতি প্রদান করেছে।

তাছাড়া বাউসেফ-ভেট বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের পোলট্রি শিল্পকে তুলে ধরবে বলেও জানান এ অধ্যাপক।

আরটিভি/এমকে

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |