রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) পূর্ণাঙ্গ তফসিল ঘোষণাসহ ৯ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
রোববার (২৫ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরে ‘রাবি সংস্কার আন্দোলন’ ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।
লিখিত বক্তব্যে ৯ দফা দাবি উল্লেখ করেন রাবি সংস্কার আন্দোলনের মুখপাত্র ও রাবি শাখার সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার। দাবিগুলো হলো— রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ আবাসিকতার রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে; পরীক্ষায় রোলবিহীন খাতা মূল্যায়ন ও খাতা চ্যালেঞ্জের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে; ক্যাম্পাসে সপ্তাহে ৭ দিন, ২৪ ঘণ্টা কার্যকর নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারকে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল হিসেবে কার্যকর করতে হবে; প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম ডিজিটাল ও অনলাইনভিত্তিক করতে হবে (ক্যাশলেস ক্যাম্পাস); হল ডাইনিং-এ মানসম্মত খাবারের জন্য পর্যাপ্ত ভর্তুকি প্রদান করতে হবে; কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের অবকাঠামোগত ও প্রযুক্তিগত সংস্কার করতে হবে; পূর্ণাঙ্গ টিএসসিসি (টিএসসিসি) দ্রুত কার্যকর করতে হবে; রাকসুর পূর্ণাঙ্গ তফসিল অনতিবিলম্বে ঘোষণা করতে হবে।
৯ দফা দাবি আদায় না হলে পরবর্তী কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, জুলাই বিপ্লবের প্রায় ১০ মাস অতিক্রান্ত হলেও প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আকাঙ্ক্ষা পূরণে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। তবুও, আমরা আমাদের দাবি আদায়ের আন্দোলনকে শৃঙ্খলাবদ্ধ ও যৌক্তিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। সে লক্ষ্যে আজ ২৫ মে থেকে আগামী ২০ জুন পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিচ্ছি। এই সময়ের মধ্যে যে দাবিগুলো পূরণ করা সম্ভব সেই দাবি পূরণ এবং যেগুলোর জন্য সময় প্রয়োজন সেগুলোর জন্য নির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রশাসনের সদর্থক সাড়া না পেলে আমরা আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি অর্থাৎ ২১ জুন থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করব, যার মধ্যে থাকবে প্রতিটি হলে, প্রতিটি বিভাগে জনসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ এবং দেয়ালিকা লিখন। সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে, ২৯ জুন ২০২৫ থেকে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ‘মার্চ ফর রাইটস’ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবে, যা হবে আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপ। এই কর্মসূচির আওতায় থাকবে সকল প্রকার ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন এবং দাবি আদায়ের স্বার্থে বিভিন্ন মাঠ পর্যায়ের চুড়ান্ত কর্মসূচি।
সালাউদ্দিন আম্মার আরও বলেন, আমরা এই ন্যায্য আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। ‘রাবি সংস্কার আন্দোলন’ আজকের এই ৯ দফা দাবির ঘোষণার মধ্য দিয়ে কার্যক্রম শুরু করছে এবং দাবি বাস্তবায়নের আগ পর্যন্ত আমাদের ধারাবাহিক কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত এক মাসে প্রায় ৫০টি-এর বেশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাইকেল হারানো গিয়েছে। ৩টি ছিনতাই হয়েছে, যার মাধ্যমে একজন গুরুতর আহত হয়েছে। এ ছাড়াও রাকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হলেও সে অনুযায়ী কোনো কাজ হচ্ছে না।
আরটিভি/এএএ/এস
