ঢাকাশনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

যে কারণে এনআইডি সেবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নেয়ার বিরোধিতা করছে ইসি

আরটিভি নিউজ

বৃহস্পতিবার, ২৪ জুন ২০২১ , ০২:১১ পিএম


loading/img
নির্বাচন ভবন

বাংলাদেশে জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডির নিয়ন্ত্রণ নির্বাচন কমিশনের হাত থেকে সরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নেয়ার সিদ্ধান্তের আবারো বিরোধিতা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বলেছেন এনআইডি সরিয়ে নিলে কমিশন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বিজ্ঞাপন

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, জাতীয় পরিচয়পত্র সেবার নিয়ন্ত্রণ নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে সরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেয়ার আগে কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে, কারণ তারা মনে করেন এটি নির্বাচন কমিশনের হাতছাড়া হলে তাদের কার্যক্রমের অসুবিধা হবে।

একজন নির্বাচন কমিশনার বলছেন, এনআইডি নিয়ে যে বিশাল কর্মযজ্ঞ কমিশন করছে তা হুট করে তৈরি করা অসম্ভব, তাই এটি কমিশন থেকে সরিয়ে নিলে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এনআইডির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গত প্রায় এক মাস ধরে নির্বাচন কমিশন তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছে। তবে এর মধ্যেই জাতীয় পরিচয়পত্র আইন সংশোধন করে এর নিয়ন্ত্রণ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের আওতায় নেয়ার প্রাথমিক কার্যক্রমও সরকার শুরু করেছে।

বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য এবং বিভিন্ন ধরণের নাগরিক সুবিধা পাওয়ার জন্য এনআইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র দরকার হয়।

বিজ্ঞাপন

প্রক্রিয়াটি কিভাবে হবে তা নিয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব মন্ত্রীপরিষদ বিভাগে পাঠানো হবে। একই সাথে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন কাজ পরিচালনার জন্য বিদ্যমান অবকাঠামো ও জনবল নির্বাচন কমিশন থেকে সুরক্ষা বিভাগে হস্তান্তরের ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে। ইতোমধ্যেই নির্বাচন কমিশনকে এক চিঠি পাঠিয়ে সরকার তার সিদ্ধান্ত জানিয়েও দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তবে কমিশন বারবারই সরকারের এ ধরণের উদ্যোগের বিরোধিতা করে এনআইডি তাদের হাতেই রাখাকে যৌক্তিক বলে দাবি করছে। কিন্তু এনআইডি কার্যক্রম নির্বাচন কমিশন থেকে সরিয়ে সরকার নিজেদের হাতে নেয়ার ক্ষেত্রে কমিশন আপত্তি করছে কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের বিশাল কর্মযজ্ঞ নতুন করে করতে গেলে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন তারা। পরিচয়পত্রের বিশাল কর্মযজ্ঞ যেখানে ঠিক মতো চলছে সেখান থেকে সরিয়ে নতুন করে তৈরিটা বাস্তবসম্মত চিন্তা নয় বলেও মনে করেন তিনি।

তিনি বলেন, আমরা বিরোধিতা করছিনা। বাস্তবতা তুলে ধরছি। এটা ম্যানেজ করতে যে জনবল, দক্ষতা ও প্রযুক্তিগত সুবিধা লাগবে সেটা একদিনে বা অল্প সময়ে তৈরি করা সম্ভব না।

ভোটার তালিকার উপজাত হিসেবে কিছু তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি হয়। আমাদের নির্বাচন কমিশনের লোকদেরই আমরা তৈরি করেছিলাম, নতুন রিক্রুট করিনি। নির্বাচনের বাইরে এটাকে ম্যানেজ করার যে দক্ষতা-টেকনিক্যাল ও ম্যানেজারিয়াল-সেটা একদিনে হবে বলে মনে করিনা। যদি না হয় তাহলে উপকারভোগীরা ঝামেলায় পড়বে।

যদিও নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা তৈরি করে আবার জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য সেই ডাটাবেজ দরকার হবে- সেক্ষেত্রে দুটি আলাদা প্রতিষ্ঠান কাজটি করলে সমন্বয়হীনতা তৈরি হবে বলেও অনেকে সংশয় প্রকাশ করছেন। বিষয়টি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, তার মন্ত্রণালয়ের অধীনে এলে সেবা নিয়ে কোন জটিলতা বা নির্বাচন কমিশনের সাথে কোন সমন্বয়হীনতার আশংকা থাকবে না। সঙ্গত কারণেই এটা সরকার যথাস্থানে আসার নির্দেশনা দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের কাজ সাধারণত ভোটার তালিকা তৈরি করা। সেটা তৈরির যত ধরণের সহযোগিতা এখান থেকে পাওয়ার-সেটা তারা পাবেন। কাজেই এ নিয়ে সমন্বয়হীনতার প্রশ্নও আসে না।

তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে যাই বলা হোক নির্বাচন কমিশন বলছে সরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে সচিব পর্যায়ে আলোচনার সময়েও তারা এনআইডির নিয়ন্ত্রণ কমিশনের হাতে রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টাই চালাবেন।

সূ্ত্র-বিবিসি

এমএন

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |