ঢাকাবুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

বেগম যতই বুদ্ধিমতি হোক, সিদ্ধান্ত আমার: আসিফ আকবর

বিনোদন ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

শুক্রবার, ০৯ জুলাই ২০২১ , ০৫:৩০ পিএম


loading/img
স্ত্রীর সঙ্গে আসিফ আকবর

বাংলা গানের যুবরাজ আসিফ আকবর। ১৯৯২ সালের ১০ জুলাই মাত্র উনিশ বছর বয়সে সালমা আসিফ মিতুর সঙ্গে ভালোবেসে ঘর বাঁধেন তিনি। দেখতে দেখতে দাম্পত্য জীবনের ৩০ বছরে পা দিয়েছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (৯ জুলাই) সকালে ‘বেগম’ এর সঙ্গে কাটানো দীর্ঘ ২৯ বছরের নানা স্মৃতি নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন আসিফ আকবর। তার সেই স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

কত আগে কত ছোট ছিলাম! তারপর উনিশ বছর তিন মাস বয়সে ডেসপারেড ভালবাসার ফলশ্রুতি হিসেবে বেগমের সাথে এক ছাদের নিচে থাকা শুরু। আমি সবসময়ই ক্যাজুয়াল যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে। শুধু রাগের উপর নিয়ন্ত্রণটা রাখার চেষ্টায় থাকি। বিয়ের পর কঠিন সময়গুলোকে জয় করেছি কখনো হেরে, কখনো জিতে। একজন সাবেক ক্রিকেটার হিসেবে আমার কাছে স্পোর্টসম্যানশিপটাই আসল। দেখতে দেখতে আমাদের দাম্পত্য জীবন ত্রিশ বছরে মাথা ঢুকিয়েছে। অথচ মনে হচ্ছে সেদিনকার কথা। তিনিও ছোট ছিলেন আমিও ছোট ছিলাম। ছোট বয়সেই আমরা বাবা-মা হয়েছি। ঘোরের মধ্যেই ঘটে গেছে সব।

অপমান আর তুচ্ছতাচ্ছিল্যের মগজে কামড় দিয়ে এখনো একই কাঁথার নিচে থাকি। ঝড়ের প্রকারভেদ নিয়ে মাথা ঘামাই না, জোর বাতাসে পাল হাওয়ার পক্ষে মেলে দিয়ে আমরা এখনো একসাথে ভেসে আছি। বেহিসেবী জীবনে আমার নিয়ন্ত্রণ একটা জায়গায় আটকে রেখেছি, সেটা হচ্ছে পরিবারের প্রতি দায়িত্ববোধ। চেষ্টা করেছি নিজের মতো, হয়তো ভাইবোনসহ কাউকেই হ্যাপী রাখতে পারিনি। অন্তর থেকে আন্তরিক ছিলাম সবসময়, বোঝাতে পারিনি। বিশেষ করে শো-বিজের পেশাদার কর্মী হিসেবে যেভাবে নিজেকে পরিচালিত করেছি, তাতে অনেকেই কষ্ট পেয়েছেন। আমি ক্ষমা চাচ্ছি না কারো কাছে, কারণ আমাকে ভুল বোঝার কারণগুলো নিয়ে নিত্যই ভাবি।

সংসার আর কাজ আমার হিসেবে একসূত্রে গাঁথা, সক্ষমতাই আসল আনন্দ। ছেলেরাও বড় হয়ে গেছে যথেষ্ট, তাদের আর বোঝানোর কিছু নেই। আবার আমাকে তারা বোঝাবে সেই ম্যাচুরিটি আসতে দিবও না। বাবা-মা সন্তানের মধ্যে বোঝাপড়া হয় না কখনোই, শুধুই দায়িত্ববোধ কাজ করে। এখানে উভয়পক্ষের স্মার্টনেস প্রয়োজন যেন ভবিষ্যতে আক্ষেপ করতে না হয়।

বিজ্ঞাপন

আমি কাজের ব্যাপারে যথেষ্ট অর্গানাইজড। সব শুনেও নিজের সিদ্ধান্তে এক সুতা ছাড় দেই না। সফলতার সঙ্গে উচ্ছৃঙ্খলতাও আমার জীবনে এসেছে। বারবার সংযত হয়ে প্রতিবারই নিজের ইচ্ছায় ব্যারিকেড ভেঙেছি। অভ্যাস বদলাতে পারবো না, আমার সরল চলার পথটা মেজাজী হাইওয়েতে গিয়ে মিশেছে। কেউ মানুক আর না মানুক, বেগম ঠিকই মেনে নেয়। নিতেই হবে কারণ আমি এরকমই। ত্রিশ বছরের দাম্পত্য জীবনটা আমার কাছে স্নেহের মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের কামব্যাক শতরানের মতই।

নিজেকে চিনি রগে রগে, আমি যে খুব ভাল মানুষ সেটা কখনোই দাবি করিনি। প্রেম শেষে বিয়ে আর সংসার কোন ঘানি টানা নয়। এটা জীবনের নিয়মিত একটা রুটিন মাত্র। মৃত্যু ছাড়া এই খেলা সাঙ্গ হবার নয়। বেগম যতই বুদ্ধিমতি বা স্মার্ট হোক, সিদ্ধান্ত আমার। আমার টেরিটোরিতে আমি স্বৈরাচার, বেগম পছন্দ না করলেও বিরোধিতা করে না। বাকি জীবনও একসাথে কাটাবো ইনশাআল্লাহ, জীবনযুদ্ধে সফল আমরা। ব্যর্থতাগুলো থাকুক সংসদীয় মহিলা আসনের মতো অলঙ্কার হয়ে। বেগম ধন্যবাদ নিতে চায় না, তাই দিলাম না। শুধু দোয়া করি সুস্থ থাকো আর আমার উপর নজরদারী চালু রাখ। তোমার মতো ভালবাসাবাসির এক্সপ্রেশন আমার আসে না, তবুও ভালবাসি এটাই সত্য। মৃত্যু ঘুরছে চারপাশে, এটাই হয়তো শেষ বর্ষাবসন্ত উদযাপন আমাদের। ভালো থেকো নিজের মতো। বিয়ে বার্ষিকীর শুভেচ্ছা। ভালোবাসা অবিরাম…

এনএস/পি

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |