ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা নূতন। এফডিসিতে ছিল তার তুমুল কর্মব্যস্ততা। এখন অভিনয়ে নিয়মিত নন, এফডিসিতেও তেমন আসেন না। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ সরব তিনি। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বিষয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেন এ অভিনেত্রী।
সোমবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে ফেসবুক স্ট্যাটাসে নূতন লিখেছেন, আমি শুধু ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে পড়ে আছি। কোনো খবর দেখি না, শুনি না। আপনারা আমাকে একটু দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, বানিজ্যিক আর সামাজিক খবর জানিয়েন। আপনারাও রাইখেন, শুধু খেলা খেলা কইরেন না।
একই স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, এফডিসির খবর জানানোর দরকার নাই।
কেন এফডিসির কোনো খবর জানতে চান না নূতন? এ প্রসঙ্গে তিনি একটি গণমাধ্যমকে জানান, এত বছর এফডিসিতে কাজ করেছি, জীবনটাই কেটেছে সেখানে। কিন্তু এখন আমরা গুরুত্বহীন হয়ে গেছি।
নূতনের ভাষ্য, এটা শুধু আমার ক্ষেত্রে নয়। শাবানা আপা, সুচন্দা আপা, ববিতা আপা, অলিভিয়া আপা, শবনম আপা সবাই একসময় চলচ্চিত্রে রাজত্ব করেছেন। এ ছাড়া আমার সমসাময়িক অঞ্জনা, রোজিনা, সুচরিতা, চম্পা, অরুণা, অঞ্জুসহ অনেককেই এখন আর সিনেমায় দেখছি না। একজন শিল্পী তো মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কাজ করবে।
তিনি জানান, সবশেষ ২০২১ সালে ‘দেশ নায়ক’ সিনেমায় আমাকে নেওয়া হয়েছিল। তবে সিনেমাটি কি কারণে মুক্তি দেওয়া হয়নি, সেটা জানি না। এরপর আমাকে আর কোনো সিনেমায় ডাকা হয়নি। বিশ্বের অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রিতে সিনিয়রদের নিয়ে কাজ নয়। আমাদের এখানে সেটা হচ্ছে না। তবে কারও প্রতি আমার অভিমান নেই।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে মূল থেকে পার্শ্ব প্রায় তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন নূতন। সত্তর-আশির দশকে সুজাতা, সুচন্দা, কবরী, শাবানা, ববিতার ভিড়ে তিনিও এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে আলো ছড়িয়েছেন।
নূতনের অভিনীত সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘রাজনর্তকী’, ‘পাগলা রাজা’, ‘রাজলক্ষী শ্রীকান্ত’, ‘বসুন্ধরা’, ‘প্রাণসজনী’ ‘প্রেমবন্ধন’, ‘স্ত্রীর পাওনা’, ‘মানসী’, ‘রাজমহল’, অবিচার’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘বদলা’, ‘ননদভাবি’, ‘রাঙাভাবি’, ‘অলংকার’, ‘বদনাম’, ‘শাহজাদা’, ‘কন্যাবদল’, তাজ ও তলোয়া’, ‘কাবিন’, সোনার চেয়ে দামি, ‘ বাঁশিওয়ালা’, ‘সত্য-মিথ্যা’, পাহাড়ি ফুল, অশান্ত, ‘মালামতি’ ‘বাঁশিওয়ালা’, ‘আবদুল্লাহ’। প্রায় সব ছবিতেই বিশেষত্ব পেয়েছেন অপূর্ব নৃত্যশৈলীর কারণে। কীর্তনিয়া, শাস্ত্রীয়, কত্থক, ভারতনাট্যম, সর্পনৃত্য, বাউল, ফোক, আধুনিক, ওয়েস্টার্ন-চরিত্র অনুযায়ী নানা ধরনের নৃত্য সমাহারে তিনি আবির্ভূত হয়েছেন।