• ঢাকা বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১
logo

যে কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় চাইলেন কবীর সুমন 

বিনোদন ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

  ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:৫৭
কবীর সুমন
কবীর সুমন

দুই বাংলার জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কবীর সুমন। নিজের শেষ জীবনটা ভালোবেসে বাংলাদেশেই কাটাতে চান এই গায়ক। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি নিজের ফেসবুকে একটি আবেগঘন পোস্টে এমনটাই জানিয়েছেন সুমন।

শুধু তাই নয়, বাংলাদেশে থাকার জন্য আশ্রয়ও চেয়েছেন সুমন। এই গায়কের ইচ্ছা, তিনি মারা গেলে তার মরদেহ যেন বাংলাদেশেরই কোনো হাসপাতালে কাজে লাগানো হয়।

পাঠকদের সুবিধার জন্য সুমনের স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো—

এই কথা আমি আগেও অনেক বার বলেছি। তাও ফের বলছি কারণ আমার কথায় কোনো কাজ হচ্ছে না। এমন নয় যে সনাতনধর্মীয় নামধারী কোনো বঙ্গজ আমাকে সম্মান করেন না। অধিকাংশ সনাতনধর্মীয় বঙ্গজ আমাকে ঢাক পিটিয়ে ঘৃণা করেন, এবং সেটা জাহির করে সনাতনী সুখ পান। আর এক শ্রেণীর সনাতন-বঙ্গজ আছে যারা আমাকে কবীর নামে ডাকতে চায় না। যা দেখেছি এরা ‘বামপন্থী’। ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে আমার নাম ভারতের সংবিধান মোতাবেক, ঘোষিতভাবে কবীর সুমন। ফার্স্ট নেম কবীর। সার্নেম সুমন।

আমার আয়কর ফাইল, র‍্যাশন কার্ড, পাসপোর্ট, ভোটার আইডি, আধার কার্ড সর্বত্র এই নামটাই আছে। এই নামে আমি ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে লড়ে মাননীয় সিপিআইএম সদস্য ডক্টর সুজন চক্রবর্তীকে হারিয়ে দিয়ে লোকসভার সাংসদ হয়েছিলাম। ভারতের অন্তর্ভুক্ত পশ্চিম বাংলায় সেটা সকলের জানার কথা। তা সত্ত্বেও সিপিআইএম করা বঙ্গজরা আমায় আমার বর্জিত নামে ডাকেন। শুধরে দিলেও শুধরে নেন না। আর নকশালপন্থী দলের বঙ্গজ নেতাও (নামে সনাতনধর্মীয়) আমাকে ভুলেও কবীর সুমন বলেন না, কবীর তো নয়ই। তিনি অবিরাম সুমন সুমন করে যান। এদিকে সকলেই নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার, ব্যক্তিগত অধিকার বলতে গদগদ। আর একদল আছে, যারা আমায় গানওলা বলে ডাকে।

যা বুঝেছি, আমায় নির্দ্বিধায় আমাকে প্রাপ্য সম্মানটুকু দেন যারা, তারা বাংলাদেশের নাগরিক। পশ্চিমবঙ্গের সনাতনধর্মীয় বঙ্গজদের মতো বাংলাদেশের কেউ আমাকে যে কোনো উপায়ে অপমান করে যান না।

আর মাসখানেক পরে আমি ৭৫ পুরো করে ৭৬-এ পড়ব। কলকাতা আমার প্রথম প্রেম। কলকাতা নামটা আমার গানে যতবার এসেছে আর কারও কবিতায় গানে সেটা আসেনি। আমায় যারা বাঁচিয়ে রেখেছেন তারা সকলেই কলকাতার সনাতনধর্মীয় বঙ্গজ। তাদের ছেড়ে থাকতে পারব না। কিন্তু, কারও কোনো ক্ষতি না করা সত্ত্বেও সমানে অপমানিত হতে হতে এবারে আমি চাইছি এই দেশটা, মায় এই শহরটাও ছেড়ে চলে যেতে। এখানকার সনাতনধর্মীয় বঙ্গজদের মধ্যে অন্তত দুজন ফেসবুকে ঘোষণাও করেছেন— ‘হাসপাতাল থেকে ফিরে না এলেই ভালো হত’। তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু লেখেনি।

আমার শেষ জীবন আমি যদি বাংলাদেশে থেকে আমার মাতৃভাষার সেবা করতে পারতাম, বাংলা খেয়াল শেখাতে পারতাম আমার আজকের স্বাস্থ্য যতটা অনুমতি দেবে ততটা অন্তত। আমি এগনোস্টিক (অজ্ঞেয়বাদী)। মরে যাবার পর কোনো ধর্মীয় শেষকৃত্যের প্রশ্নই উঠবে না। আমার দেহ দান করা আছে। বাংলাদেশে মরলে সেখানকার কোনো হাসপাতালে আমার শরীর কাজে লাগানো যেতে পারে।

আজও আমি ফেসবুকে আমার সম্পর্কে সনাতনধর্মীয় বঙ্গজদের খিস্তি পড়েছি। এতে আমার মধ্যে কোনো উত্তেজনা জাগেনি। এই ‘বিদেশটা’ ত্যাগ করে ভাষা মতিনের দেশে গিয়ে আশ্রয় নেওয়া, সেই দেশের কাজে লাগার ইচ্ছে জেগেছে। প্রকাশ্যে সাহায্যও আশ্রয় চাইছি।

এই রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী আমার আবেদনে সাড়া দিয়ে বাংলা খেয়ালকে স্বীকৃতি দিয়েছেন, রাজ্য ক্লাসিক্যাল মিউজিক কনফারেন্সে আমাকে বাংলা খেয়াল গাইতে দিয়েছেন। এ রাজ্যের একজন শিল্পীও কিন্তু সংহতি জানাননি আমার সঙ্গে। যতদিন বেঁচে থাকব শ্রীমতি মমতা বন্দ্যোধ্যায়ের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব, তার পক্ষে থাকব। কেউ যদি পারেন আমাকে সাহায্য করুন। জয় বাংলা, জয় বাংলা খেয়াল!

মন্তব্য করুন

rtv Drama
Radhuni
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার (৬ নভেম্বর)
ট্রাম্প-হ্যারিস লড়াই: কার জয়ে বাংলাদেশের কী হবে
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যত ষড়যন্ত্র হোক টিকবে না: ডা. জাহিদ
এ বছর ১২৪ জন বাংলাদেশিকে বৃত্তি দেবে রাশিয়া