ঢাকাসোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২

ব্যক্তিগত সম্পর্কে ফাটল, ভেঙে গেল ‘লালন’ ব্যান্ড

বিনোদন ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

বুধবার, ০৮ মে ২০২৪ , ০৬:২০ পিএম


loading/img
ছবি : সংগৃহীত

২০০১ সালে গড়ে ওঠে দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ডদল ‘লালন’।  এই ব্যান্ডের দলনেতা ও ড্রামার থেইন হান মং তিতি। সম্প্রতি দীর্ঘ পথচলার ইতি টেনেছেন তিনি। ভোকালিস্ট নিগার সুলতানা সুমির সঙ্গে মতবিরোধের জেরেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান তিতি।

বিজ্ঞাপন

ব্যান্ড লালনের ভোকালিস্ট সুমির সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কে রয়েছেন তিতি। যে কারণে ব্যান্ড ছাড়ার ঘটনায় তাদের দাম্পত্য সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়েও কথা উঠছে সংগীতাঙ্গনে।

অনেকের মতে- সংসার জীবনে ভালো নেই ব্যান্ডের এই দুই তারকা! তবে তিতি জানান, ব্যান্ড আর সম্পর্ক দুটি আলাদা বিষয়। তবে কিছুটা প্রভাব যে ব্যক্তিজীবনে পড়েনি, অস্বীকার করছেন না তিনি।

বিজ্ঞাপন

তিতি কথায়, সুমির জীবনদর্শনের সঙ্গে দ্বান্দ্বিক অবস্থানের কারণেই আজকের এই পরিস্থিতি। হয়তো এর প্রভাব পারিবারিক জীবনেও কিছুটা পড়ছে।

তিনি বলেন, একজন মানুষ যখন মুক্তি চায়, তখন তাকে মুক্তি দিতে হয়। আমার কাছে মনে হয়েছে, সুমি আমার সঙ্গে ব্যান্ড করতে চায় না। এ বিষয়টা যখনই মনে হয়েছে, তখনই আমি ব্যান্ড ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিই। সমস্যা যেহেতু আমাকে নিয়ে, তাই আমিই ছেড়ে এসেছি। আসলে কোভিড মহামারির সময়ে আমাদের সংগীতাঙ্গন ও ব্যক্তিজীবনে যে অস্থিরতা নেমে এসেছিল, এটা হয়তো তারই একটা ফল। কেউ স্থির নয়! যদি পারিবারিক জীবনেও কিছু হয়, তবে এখানেও আমি কিছুই বলব না। কোনো কিছু চাপিয়ে দিতে চাই না।

বিজ্ঞাপন

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্যান্ডের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো একদিনের নয়। বিগত কয়েক বছর ধরেই এমনটা চলছিল। তবে তা প্রকট আকার ধারণ করে গেল পাঁচ-ছয় মাসে। ব্যান্ডের সব ব্যবস্থাপনা তিতির হাতেই হতো। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় শো বুকিংয়ের পর তা বাতিল করতেন সুমি। তার স্বেচ্ছাচারিতায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানেও অংশ নেয়নি ব্যান্ড লালন। এতে শো আয়োজকদের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হয় তিতির।

বিজ্ঞাপন

শুধু তাই নয়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সুমির জীবনদর্শনেও পরিবর্তন দেখেন তিতি। এটি তাকে আরও হতাশায় ডুবিয়ে দিয়েছে। তিনি চেয়েছিলেন, ফকির লালন সাঁইয়ের দর্শনে বিশ্বাসী ব্যান্ডটির কাছে অর্থ কখনও বড় হয়ে উঠবে না। তারকাখ্যাতি ও অহমিকা সুমিকে কখনও স্পর্শ করবে না।

তিতির ভাষ্য অনুযায়ী, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সে ভুল ভেঙেছে- তারকাখ্যাতি, অহংকার, লোভ ঘিরে ধরেছে সুমিকে! ফকির লালনের সঙ্গে লোভ যায় না। আমরা যেহেতু তার জীবনদর্শনে বিশ্বাসী, তাই আমাদের অনেক কিছুই হিসাব করতে হয়। আমাদের জিবে যদি লোভ জন্মায়, তাহলে আমরা কেন তার গান করছি? দেখেন, সুমি আমাদের জাতীয় সম্পদ। তার মতো গলা খুবই দুষ্প্রাপ্য। তার কাছে সবসময় গাড়ি-বাড়ির অফার আসত। আর যেহেতু সে মিউজিক করে অন্যদের মতো সম্পদের মালিক হতে পারেনি, তাই তার মধ্যে বিষয়গুলো কাজ করছিল। আসলে শেষ কয়েক বছর তার মধ্যে অর্থনৈতিক বিষয়গুলো ভর করে। এগুলো কেউ তাকে বুঝিয়েছে কি না তা-ও আমার জানা নেই।

সুমি ও তিতির বিয়ে হয় ২০১০ সালে। তবে বিষয়টি সেভাবে কখনো জানাজানি হয়নি। এখন এই অবস্থায় এসে দাম্পত্য সম্পর্ক কোন পর্যায়ে বা কেমন রয়েছে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকে তিতি বলেন, আমার জানা নেই। তবে এতটুকু বলে রাখি, ব্যান্ডের যেকোনো বিষয়ের মতো সম্পর্কের ক্ষেত্রেও সুমির সিদ্ধান্ত সুপ্রিম। তাই যা বলার তা হয়তো সময়ই বলে দেবে।

সঙ্গে তিনি এ-ও বলেন, আমি কোনোভাবেই চাই না আমার ও সুমির এই সম্পর্কের জটিলতার কারণে ব্যান্ডের কোনো ক্ষতি হোক। দরকার হলে নতুন কোনো ড্রামার নিয়ে হলেও যেন ব্যান্ডটি চলে।

প্রসঙ্গত, গত ৯ মার্চ খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে লালন ব্যান্ডের সর্বশেষ শো অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে গিয়ে তিতি আলাদা একটি হোটেলে ছিলেন। এর আগে সিলেটের একটি শো শেষ করে গাড়িতে ঢাকায় ফেরার পথে সুমির সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে বাগবিতণ্ডা হয় তিতির। তখন সুমি তাকে বিভিন্ন বিষয়ে দোষারোপের পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে তোলেন অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও। পরে নরসিংদীতে গাড়ি থেকে নেমে যান তিতি। ঢাকায় আসেন ভাড়া করা বাইকে। এরপর ১০ মার্চ শিল্পকলা একাডেমিতে শো থাকলেও সুমি তা একক সিদ্ধান্তে বাতিল করেন। মূলত তখনই তিতি নেন ব্যান্ড ছাড়ার সিদ্ধান্ত।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...

Advertisement


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |