এন্ড্রু কিশোরকে হারানোর ৪ বছর
বাংলা গানের কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোরকে হারানোর ৪ বছর পূর্ণ হলো আজ (৬ জুলাই)। ২০২০ সালের আজকের এই দিনে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি।
চার দশকেরও বেশি সময় ধরে সুরের জাদুতে সংগীত প্রেমীদের মাতিয়ে রেখেছিলেন এন্ড্রু কিশোর। তিনি সবার মাঝে না থাকলেও তার গায়কী আজও গেঁথে আছে শ্রোতা-দর্শকদের মনে।
১৯৫৫ সালের ৪ নভেম্বর রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন এন্ড্রু কিশোর। বাংলাদেশের আধুনিক ও চলচ্চিত্র জগতের কালজয়ী অনেক গান তার কণ্ঠে সমৃদ্ধ হয়েছে। তার বাবা ক্ষীতিশ চন্দ্র বাড়ৈ এবং মা মিনু বাড়ৈ রাজশাহীর একটি হাসপাতালে চাকরি করতেন। মায়ের কাছে পড়াশোনায় হাতেখড়ি হয়েছিল এই গায়কের। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগে পড়াশোনা করেছেন তিনি।
এন্ড্রু কিশোরের শৈশব-কৈশোর ও যৌবনকাল কেটেছে রাজশাহীতেই। তার মা ছিলেন সংগীত অনুরাগী। তার প্রিয় শিল্পী ছিলেন কিশোর কুমার। প্রিয় শিল্পীর নামানুসারে তার সন্তানের নাম রাখেন ‘কিশোর’। মূলত মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতেই সংগীত জগতে পা রাখেন তিনি।
আব্দুল আজিজ বাচ্চুর অধীনে প্রাথমিকভাবে সংগীত পাঠ গ্রহণ শুরু করেন এন্ড্রু কিশোর। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর নজরুল, রবীন্দ্রনাথ, আধুনিক, লোক ও দেশাত্মবোধক গান শ্রেণিতে রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী ছিলেন তিনি।
১৯৭৭ সালে আলম খান ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই’ গানের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে সংগীতশিল্পী হিসেবে যাত্রা শুরু হয় এন্ড্রু কিশোরের। সংগীত ক্যারিয়ারে শ্রেষ্ঠ গায়ক বিভাগে আটটি ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ জিতেছেন প্রয়াত এই গায়ক। এ ছাড়া তার ঝুলিতে রয়েছে অসংখ্য নামীদামি সম্মাননা।
মরণব্যাধি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান এন্ড্রু কিশোর। ২০২০ সালে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে টানা কয়েক মাস চিকিৎসা হয় তার। পরে চিকিৎসকরা হাল ছেড়ে দিলে জুনে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় এন্ড্রু কিশোরকে। ২০ জুন রাজশাহী নগরীর মহিষবাথানে বোন ডা. শিখা বিশ্বাসের বাসায় নেওয়া হয় তাকে। সেখানেই ৬ জুলাই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
মন্তব্য করুন