• ঢাকা রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
logo

যে অভিমানে মাইলস ছেড়েছিলেন শাফিন আহমেদ

বিনোদন ডেস্ক, আরটিভি

  ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:০৫
প্রয়াত সংগীতশিল্পী শাফিন আহমেদ
প্রয়াত সংগীতশিল্পী শাফিন আহমেদ

শাফিন আহমেদের ভালোবাসার জায়গা ছিল দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘মাইলস’। ব্যান্ডটির পেছনে বহু শ্রম আর অবদান রয়েছে এই সংগীতশিল্পীর। প্রতিষ্ঠার প্রায় শুরু থেকেই ‘মাইলস’র সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন তিনি। ব্যান্ডটির সঙ্গে বহু স্মৃতিবিজড়িত গল্প রয়েছে তার। ছিল অদ্ভুত এক মায়ার টান। তবে সেই ভালোবাসার জায়গা থেকেও এক বুক অভিমান নিয়ে সরে এসেছিলেন শাফিন আহমেদ।

‘মাইলস’ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ায় ভীষণ মন খারাপ হয়েছিল তার ভক্তদেরও। দলের সঙ্গে বেশ কয়েকবার সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা দেয়। অভিমান করে ২০১০ সালে একবার ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ব্যান্ড থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন শাফিন আহমেদ। কিন্তু কোথাও যেন মায়ার টান থেকেই যায়।

তাই কয়েক মাস পর দ্বন্দ্ব ভুলে আবারও দলে ফেরেন এই গায়ক। তবে বেশিদিন থাকতে পারেননি দলের সঙ্গে। ২০১৭ সালের অক্টোবরে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে পুনরায় ‘মাইলস’ ছেড়ে দেন শাফিন আহমেদ। সবশেষ ২০২১ সালের নভেম্বরে মাইলস ছেড়ে একেবারেই বেরিয়ে আসেন তিনি।

সেবার চূড়ান্তভাবে দল ছেড়ে নতুন করে যাত্রা শুরু করেন এই গায়ক। গড়ে তোলেন নিজের ব্যান্ড দল ‘ভয়েস অব মাইলস।’ জীবনের শেষ দিনগুলোয় নিজের মতো সংগীতচর্চা করেন। ‘মাইলস’ ছাড়াই দেশ-বিদেশে কনসার্টে অংশ নেন।

তবে ২০২১ সালের নভেম্বরে দেশের একটি গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজের লাইভ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে হাজির হয়ে ‘মাইলস’ ছাড়ার কারণ জানিয়েছিলেন শাফিন আহমেদ। ভিডিওটি নিজের ফেসবুকেও শেয়ার করেছিলেন তিনি।

সেই ফেসবুক লাইভে শাফিন আহমেদ বলেছিলেন, ‘মাইলস’ ছেড়ে দিয়েছি এমন কথা কখনও বলিনি। আমি বলেছি এখনকার মাইলসের সদস্যদের সঙ্গে আমার মিউজিক করার ইচ্ছে নেই। ছেড়ে দেওয়া অন্য অর্থ বহন করে। আমার বহু শ্রমের পর আজকের এই অবস্থানে এসেছে ‘মাইলস’। তাই এটি ছেড়ে দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু সবার সঙ্গে মিউজিক করা যায় না। একটি দলে যুক্ত হয়ে কাজ করতে গেলে একসঙ্গে অনেক সময় কাটাতে হয়। কিন্তু কোথাও মনের মিল না থাকলে সেখানে সংগীত করা সম্ভব নয়। আমি সরে থাকতে চাই, কিন্তু আমার সংগীতকর্ম থেমে থাকবে না।

তিনি আরও বলেছিলেন, ‘মাইলস’র সুনাম ও ব্র্যান্ড ভ্যালু আমার তৈরি। অনেক শ্রম দিয়েছি এর পেছনে। তাই আমার সঙ্গে মীমাংসা না করে সেই সুবিধাগুলো তারা ব্যবহার করবে, সেটা ভালো দেখায় না।

শাফিন আহমেদ বলেছিলেন, দীর্ঘদিন ধরেই নানা বিষয় নিয়ে ব্যান্ডের সদস্যদের মধ্যে বিভক্তি চলছিল। এত দিনে সেসবের সমাধান হওয়া উচিত ছিল। অনেকবার চেষ্টা করেও কোনো সমাধান হয়নি। ছিল না কোনো অগ্রগতিও। সেসবের মধ্যে কিছু বিষয় আইনি, কিছু আর্থিক।

এ ছাড়া দলের সদস্যদের মধ্যে আচার-ব্যবহার দুর্ব্যবহারের পর্যায়ে চলে গিয়েছিল, যা খুলে বলা সম্ভব না। নিজের মূল্যবোধ বিসর্জন দিয়ে, সবকিছু ঠিক আছে, এ রকম অভিনয় করে তাদের সঙ্গে মিউজিক করে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই ‘মাইলস’র সঙ্গে শুধু পথ চলাটা থামিয়ে দিয়েছি।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ জুলাই বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টা ৫০ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আমেরিকার ভার্জিনিয়ার একটি হাসপাতালে মারা যান শাফিন আহমেদ। গায়কের এভাবে চলে যাওয়ার খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশের সংগীতাঙ্গনে।

মন্তব্য করুন

Radhuni
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
শাফিনকে নিয়ে হামিনের আবেগঘন বার্তা
যাদের চোখের জলে শাফিনের শেষবিদায়
বাবাকে কবরে শোয়াতে দেখে জ্ঞান হারান শাফিনপুত্র
বাবা-মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন শাফিন আহমেদ