চেয়েছিলেন আমাকে আয়নাঘরে রাখুক বা গুলি করুক, অরুণাকে এলিনার প্রশ্ন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় দুটি দলে ভাগ হয়ে যান শোবিজ তারকারা। যাদের মধ্যে কেউ ছিলেন শিক্ষার্থীদের পক্ষে, কেউ বিপক্ষে। নেটমাধ্যমে সরব ছিল দুটি দলই।
এদের মধ্যে একটি দলের নেতৃত্বে ছিলেন ঢাকা-১০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত ও চিত্রনায়ক রিয়াজ। ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে ‘আলো আসবেই’ নামক একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলেছিলেন তারা।
যেখানে আন্দোলনকালীন সময়ে তাদের মধ্যে নানান বিষয় নিয়ে চলতো কথোপকথন। ওই গ্রুপের বাকি সদস্যদের মধ্যে ছিলেন অভিনেত্রী শামীমা তুষ্টি, তানভীন সুইটি, সোহানা সাবা, অরুণা বিশ্বাস, অভিনেতা সাজু খাদেমসহ আরও অনেকে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের বেশ কিছু স্ক্রিনশট ফাঁস হয়েছে। যেখানে শোবিজেরই কয়েকজনের কিছু চাঞ্চল্যকর কথোপকথনও রয়েছে, যা শিউরে ওঠার মতো।
শুধু তাই নয়, ভয়ংকর তথ্যের পাশাপাশি বেশ কিছু তারকাদের কালো চেহারাও সুপষ্টভাবে ভেসে ওঠে। যেমন— ওই গ্রুপে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর ‘গরম পানি ঢালার’ পরামর্শ দেন অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস।
সেই গ্রুপের একটি স্ক্রিনশটে দেখা যায়, ছাত্র আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে আসা অভিনেত্রী এলিনা শাম্মীর একটি পোস্ট তুলে ধরেছেন অরুণা বিশ্বাস। যাতে এলিনার ভাষ্য ছিল, অর্থের বিনিময়ে বাবা-মা’কে সন্তান হারানোর শোক ভোলানো যায়? তবে এতকিছু পেয়েও আজ আপনি কাঁদেন কেন?
সম্ভবত শেখ হাসিনাকে নিয়ে পোস্টটি করেছিলেন এলিনা। কারণ, স্বজন হারানোর বেদনার কথা তুলে ধরে জাতির সামনে কান্নার ভঙ্গি করেছেন তিনি। আর সেটিই হয়তো পরোক্ষভাবে বোঝাতে চেয়েছিলেন এলিনা।
এলিনার সেই পোস্টটি ‘আলো আসবেই’ গ্রুপে অরুণা শেয়ার করা মাত্রই রাগ ও ক্ষোভে ফেটে পড়তে দেখা যায় গ্রুপের সদস্যদের। ফাঁস হওয়া কথোপকথনের ওই অংশ নজরে আসে এলিনার।
তাই বিষয়টি নিয়ে এবার নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন তিনি। যেখানে এলিনা লিখেছেন, যদি ৫ আগস্ট না আসতো, যদি দেশ স্বাধীন না হতো, আজ আমার অথবা আমাদের কী পরিণতি হতো জানি না। হায়রে অরুণা বিশ্বাস আপনি আমার পছন্দের শিল্পী ছিলেন, আমিও আপনার স্নেহভাজন ছিলাম। কল দিলে কত মনের কথা বলতেন, আমিও সমানভাবে মন খুলে গল্প করতাম। অথচ ছাত্র আন্দোলনের সময় দেওয়া স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট নিয়ে আপনাদের গ্রুপের মধ্যে দিয়ে দিলেন। কি চাচ্ছিলেন? আমাকে ধরে নিয়ে আয়নাঘরে রাখুক, নাকি সরাসরি গুলি করে দিক?’
সবশেষে অভিনেত্রী লেখেন, অন্যের জন্য কুয়া খুঁড়লে সেখানে নিজেকেই পড়তে হয়। এত নিষ্ঠুর কেন আপনি-আপনারা? শুধু ছাত্রদের পক্ষেই তো থাকতে চেয়েছি, তাদের গুলি করে পাখির মতো মেরে ফেলছিল আপনাদের ফ্যাসিস্ট সরকার, সেই প্রতিবাদই তো করেছি, তাই স্বৈরাচারের দোসরেরা মিলে স্ক্রিনশট জোগাড় করে জমা করছিলেন শাস্তি দেবেন বলে? শাস্তি কাদের ভাগ্যে জোটে সেটাই এখন দেখার পালা।
মন্তব্য করুন