এ টি এম শামসুজ্জামানের জন্মবার্ষিকী আজ
এ টি এম শামসুজ্জামান; পরিচিতির জন্য যেন নামটাই যথেষ্ট। আজ ১০ সেপ্টেম্বর নিভে যাওয়া এই অভিনয়ের বাতিঘরের জন্মদিন। বেঁচে থাকলে ৮৪ বছরে পা রাখতেন তিনি।
১৯৪১ সালের এইদিনে নোয়াখালীর দৌলতপুরে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন এ টি এম শামসুজ্জামান। পড়াশোনা করেছেন ঢাকার পোগোজ স্কুল, কলেজিয়েট স্কুল ও রাজশাহীর লোকনাথ হাইস্কুলে। তার বাবা নূরুজ্জামান ছিলেন নামকরা উকিল, তিনি শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হকের সঙ্গে রাজনীতি করতেন। মা নুরুন্নেসা বেগম। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে এ টি এম শামসুজ্জামান ছিলেন সবার বড়।
অভিনয় দিয়ে বাংলা সিনেমার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছিলেন এ টি এম শামসুজ্জামান। শুধু চলচ্চিত্রেই নয়, টিভি পর্দায়ও সমানভাবে জনপ্রিয় তিনি। এছাড়া একাধারে তিনি নির্মাতা, চিত্রনাট্যকার, কাহিনিকার, সংলাপ রচয়িতা ও গল্পকার।
১৯৬১ সালে উদয়ন চৌধুরীর বিষকন্যা চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার সুযোগ পান এ টি এম শামসুজ্জামান। এরপর ১৯৬৫ সালে চলচ্চিত্রের জন্য প্রথমবার চিত্রনাট্য লিখেন। সিনেমার নাম ‘জলছবি’। একই বছরে অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। তার প্রথম অভিনীত সিনেমা ‘নয়া জিন্দগানী’ যদিও তা মুক্তি পয়নি। প্রথমবার তাকে পর্দায় দেখা যায় ১৯৬৮ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত ‘এতটুকু আশা’ সিনেমায়। এক খবরের কাগজ বিক্রেতার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তিনি।
প্রায় চার শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন এ টি এম শামসুজ্জামান। তার অভিনীত সিনেমার মধ্যে ‘ওরা ১১ জন’, ‘লাঠিয়াল’, ‘নয়নমণি’, ‘অশিক্ষিত’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘অনন্ত প্রেম’, ‘দোলনা’, ‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী’, ‘ম্যাডাম ফুলি’, ‘চুড়িওয়ালা’, ‘হাজার বছর ধরে’, ‘মোল্লা বাড়ির বউ’, ‘মন বসে না পড়ার টেবিলে’, ‘গেরিলা’, ‘চোরাবালি’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
তবে শুধু সিনেমা নয়, অসংখ্য নাটকে অভিনয় করে মানুষকে হাসিয়েছেন এ টি এম শামসুজ্জামান। এর মধ্যে ‘রঙের মানুষ’, ‘ঘর কুটুম’, ‘ভবের হাট’, ‘বউ চুরি’, ‘নোয়াশাল’, ‘শীল বাড়ি’, ‘নৈব নৈব চ’, ‘ভীমরতি’, ‘গরু চুরি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
এ টি এম শামসুজ্জামান স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন কোটি দর্শকের ভালোবাসা, একুশে পদকসহ ছয় বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ২০২১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান গুণী এ অভিনেতা।
আরটিভি/আইএম-টি
মন্তব্য করুন