আমার বোন অবশ্যই ‘বিশেষ’, তাকে আলাদা তকমা দিতে হবে কেন: বিক্রম
পূজা-দীপাবলির মতো হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আরেকটি রীতি হলো ‘ভাইফোঁটা’। রোববার (৩ নভেম্বর) বছর ঘুরে আবারও এলো দিনটি। প্রতি বছর এ দিন সব ভাইদের ‘ফোঁটা’ দিয়ে বোনরা বরণ করেন। বোনদের কাছেও নানান কারণে কৃতজ্ঞ প্রকাশ করে ভাইরা। অন্যান্যদের মতো দিনটির জন্য অপেক্ষা করেন পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ও।
অভিনেতার ছোট বোন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন। জন্ম থেকেই তার মুখের একটি অংশ বিকলঙ্গ। মূলত সে কারণেই বিক্রমের বোনকে নিয়ে অনেকেরই কৌতূহল। তবে যে যাই বলুক না কেন, অভিনেতা তার বোনকে ভীষণ ভালোবাসেন। আর তাই বরাবরের মতো চলতি বছরও বোনকে নিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন এই অভিনেতা।
ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারে এবার ‘ভাইফোঁটা’র অনুভূতি শেয়ার করেছেন বিক্রম। অভিনেতা বলেন, প্রত্যেক বছর এই দিনটার জন্যই অপেক্ষা করি। বোন ফোঁটা দেবে, সেটা অবশ্যই বড় ব্যাপার। ওর হাতের রান্না খাওয়ার জন্যও দিনটির প্রতীক্ষায় থাকি। বড় হওয়ার পর গুছিয়ে দারুণ রাঁধতে শিখেছে আমার বোন। প্রত্যেক বছর রান্নায় নিত্যনতুন চমক থাকে। তাই প্রতি বছর এই দিনে ডায়েট ভুলে ভরপেট খাওয়া চলে আমার। সঙ্গে উপহার দেওয়া-নেওয়া থাকে।
তিনি আরও বলেন, আমি সবসময় বোনরে কাজে এমন কিছু উপহার দিই। কখনও ব্যাগ দিয়েছি। কখনও বেড়াতে যাবে বোন, তার যাবতীয় ব্যবস্থা করে দিয়েছি। বোনও উপহার দেওয়ার ব্যাপারে আমার মতোই। কখনও রোদচশমা, কখনও মানিব্যাগ, আর চকোলেট তো থাকবেই।
শুধু তাই নয়, প্রতি বছর ‘ভাইফোঁটা’র জন্য আমার বোন সকাল থেকে উপোস করে থাকে। সে কারণে আমিও এ দিন তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে পড়ি। যাতে ওকে বেশিক্ষণ না খেয়ে থাকতে না হয়।
অভিনেতা বলেন, আমার বোন অন্যের চোখে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন। ওকে ঘিরে তাই অনেকেরই কৌতূহল। তাই মনে হলো, এ বছরের ভাইফোঁটায় ওকে নিয়ে কিছু বলি। আমার বোন তার অনুভূতির কারণে সত্যিই ‘বিশেষ’। ছোট থেকে দেখেছি, চড়ুই পাখি থেকে শুরু করে যে কোনো পশু— প্রত্যেকের জন্য ওর মনে ভালোবাসা রয়েছে। এমনকি গাছের প্রতিও। নিজে হাতে গাছের যত্ন নেয়। বলতে পারেন, ও খুব মায়াবতী। পশুপাখির প্রতি আমারও যে অনুভূতি তৈরি হয়েছে, তা ওর কাছ থেকেই শিখেছি আমি।
তাই যারা আমার বোনের সঙ্গে ‘বিশেষ’ তকমা লাগিয়ে দেন আজ তাদের কিছু বলার দিন। পরিবারের যে কোনো সদস্যই খুব প্রিয়, কাছের, বিশেষ। আমার বোনও তাই। ও না থাকলে ভালো-মন্দে গড়া এই বিক্রম চট্টোপাধ্যায়কেই হয়তো পেতেন না আপনারা। দাদা হিসেবে বোনকে নিয়ে তাই খুব গর্ব আমার হয়।
আরটিভি/এইচএসকে
মন্তব্য করুন