নতুন উপদেষ্টা নিয়োগ নিয়ে এতো বিভেদ কেন: খিজির হায়াত
জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে উচ্ছেদ করতে সক্রিয় ছিলেন নির্মাতা ও অভিনেতা খিজির হায়াত খান। নবগঠিত ১৫ সদস্যবিশিষ্ট চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডে তিনি জায়গা পেয়েছেন।
খিজির হায়াত খানকে বরাবরই নানান ইস্যুতে প্রতিবাদের সুরে কথা বলতে দেখা যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। কখনও নিজের মতামত প্রকাশ করেন, কখনও বা সমাজের মানুষের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন রাখেন। সরকার পতনের পরেও নানা ইস্যু নিয়ে প্রায়ই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথা বলছেন তিনি। সেই ধারাবাহিকয়ায় নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) একটি পোস্ট করেন এই নির্মাতা।
ফেসবুকে দেওয়া দেই পোস্টে ‘ওরা সাত জন’ খ্যাত নির্মাতা লেখেন, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা আপনি নিজ মুখে বললেন ছাত্ররা আপনাদের নিয়োগ দিয়েছেন তাহলে নতুন উপদেষ্টা নিয়োগ নিয়ে এতো বিভেদ কেন ? এ বিষয়ে ওদের নেতাদের সাথে আলোচনা করা হয় নাই কেন? অভ্যুত্থানের ৩ মাস যেতে না যেতেই কেন এতো বিভাজন? এ দায় কার?
এদিকে দেশের বেশির ভাগ নির্মাতা, প্রযোজক ও শিল্পীর দীর্ঘদিনের চাওয়া ছিল সেন্সর বোর্ড বাতিল হওয়া। তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী সেন্সর বোর্ড বাতিল করে বিগত সরকারের আমলে সার্টিফিকেশন বোর্ড আইন পাস করা হয়। যদিও অন্তর্বর্তী সরকার কেবল সদস্য বদলের মাধ্যমে গত ১৫ সেপ্টেম্বর ফের পুরনো সেন্সর বোর্ডকেই পুনর্গঠন করে।
মূলত, এরপর চলচ্চিত্র সমাজ থেকে তুমুল প্রতিক্রিয়া আসতে থাকে। বোর্ড থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেন নির্মাতা আশফাক নিপুণ ও সদস্য মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন।
নতুন চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ডে সদস্য হিসেবে আছেন নির্মাতা ও অভিনেতা খিজির হায়াত খান। আরটিভির সঙ্গে সম্প্রতি আলাপকালে নতুন চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড নিয়ে তিনি বলেন, ৫৪ বছরে আসলে যা হয়নি এখন, সেটি হয়েছে। আমরা এত বছর পর নাম পরিবর্তন করে শুরু করেছি। আর এই নাম করনের সার্থকতা যদি ধরে রাখতে পারি মানে ২০২৪ সালে হলিউড, বলিউড যেভাবে কাজ করে সেইভাবে যদি আমরা সার্টিফিকেশনের বিধিগুলো তৈরি করে। সেগুলো সবাই মিলে গবেষণার মাধ্যমে তৈরি করতে হবে। আর আমরা যদি আইন পরিবর্তন করে বিধিগুলো বদলে কাজ করতে পারি তাহলে আমাদের ওপার সম্ভাবনা আছে। আমরা চাই আমাদের সিনেমা বাংলাদেশের গল্পের সিনেমা বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াক। আমার প্রত্যাশা অনেক। আমি চাই আমার দেশের নির্মাতারা সারা পৃথিবী কাঁপিয়ে বেড়াবে। এত এত বাঁধার পরেও বাংলাদেশের নির্মাতারা কোথায় যায়নি? মস্কো, বার্লিন, টরেন্টো কোথায় না গিয়েছে? আর আমাদের যদি বাঁধা খুলে দেওয়া হয় তাহলে আমরা কি না করতে পারব!
এদিকে, সিনেমা সংকটে ভুগছে প্রেক্ষাগৃহগুলো। গেল বছর থেকে আমদানি করা হচ্ছিল হিন্দি ছবি। শুরু থেকে এর ঘোর বিরোধিতায় ছিলেন খিজির হায়াত খান। সেন্সর সদস্য পদ পেয়েও কি তিনি পূর্বের অবস্থানে অনড় থাকবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি ভারতীয় ছবি আমদানির বিপক্ষে। তবে সিনেমা সংকটে আমাদের পরিবেশক এবং হল মালিকরা চাচ্ছেন, তাই হিন্দি ছবি এলে যেন দেশের ছবি অবহেলিত না হয় সেইদিকে প্রাধান্য দিতে হবে। যেমন সিনেপ্লেক্সে দেশের সিনেমাগুলোকে বেশি শো এবং পিক টাইমে শো দিতে হবে, পরে হিন্দি ছবি চলবে।
আরটিভি/এএ
মন্তব্য করুন