আলোচিত ও সমালচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমের পালক বাবা (আশ্রয়দাতা) আবদুর রাজ্জাক মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ঢাকার একটি সরকারি হাসপাতালে রাত ৯টায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
মুমূর্ষু অবস্থায় বাবার পাশে না-থাকায় এবার স্ত্রী রিয়া মনিকে ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন হিরো আলম। বুধবার (১৬ এপ্রিল) নিজের ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানান তিনি।
সোমবার (২১ এপ্রিল) হিরো আলম এক সংবাদ সম্মেলন করেন। যেখানে তিনি জানিয়েছেন, খুব দ্রুতই রিয়া মনিকে তালাক পাঠানো হবে। এ সময় সাংবাদিকরা অভিনেতাকে জিজ্ঞাসা করেন, রিয়া যদি তার ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চেয়ে ফিরে আসতে চাই তাহলে তাকে গ্রহণ করবেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে অভিনেতার সরল উত্তর, আমার পরিবার তাকে মেনে নেবে না।
স্ত্রীর সঙ্গে হিরো আলমের এই কলহকে ‘পুরুষতান্ত্রিকতা’ অ্যাখ্যা দিয়ে কটাক্ষ করেছেন প্রবাসী লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
সোমবার (২১ এপ্রিল) এক পোস্টে তিনি লেখেন, মাঝে মাঝে ভাবি রিয়া মনির মতো স্মার্ট মেয়ে কী কারণে হিরো আলমের মতো একটা লোককে বিয়ে করেছিল! হিরো আলমের টাকা আছে বলে? ভেবেছিলাম অন্য কোনো গুণ না থাকলেও একটি গুণ হিরো আলমের হয়তো আছে, মেয়েদের হয়তো ব্যক্তি হিসেবে সম্মান করে সে। প্রচুর মানুষের সঙ্গে মিশেছে সে, তার নাম হয়েছে, তার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
তিনি যোগ করেন, হয়তো জীবন সম্পর্কে ধারণা এখন আগের চেয়ে স্পষ্ট হয়েছে, হয়তো যতটা উদার ছিল, সংবেদনশীল ছিল, তার চেয়ে আরও বেশি হয়েছে।
স্ত্রীর প্রতি আলমের আচরণকে কটাক্ষ করে তিনি লিখেছেন, আমি ভুল ভেবেছিলাম। রিয়া মনির বিরুদ্ধে যেভাবে সে নোংরা ভাষায় কথা বলছে। যেভাবে তাকে হেয় করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। যেভাবে তাকে হিংস্র আক্রমণ করছে। কট্টর পুরুষতান্ত্রিক না হলে করা যায় না।
নারীদের সামাজিক অবস্থা ও তাদের পরিণতি কথাও তুলে ধরেছেন। নারীবিদ্বেষী চরিত্রের লোকদের সবাই বাহবা দেবে। তিনি লিখেছেন, রিয়া মনি যেহেতু স্বামীর অনুমতি ছাড়া ঘরের বাইরে গিয়েছে, যেহেতু স্বামীর অনুমতি ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে ভিডিও বানিয়েছে, যেহেতু হাসপাতালে গিয়ে স্বামীর বাবার সেবাযত্ন করেনি, যেহেতু তার বাবার পাশে বসে থাকেনি রাত-দিন, যেহেতু বাবার মৃত্যু হলে শিয়রে বসে অঝোরে কাঁদেনি, সেহেতু হিরো আলম জানিয়ে দিয়েছে রিয়া মনির মতো স্ত্রী সে চায় না। এমন চরম নারীবিদ্বেষী চরিত্রকে লোকে বাহবা দেবে।
তসলিমা আরও লিখেছেন, সমাজের মানুষ তার কাছে শিখবে স্ত্রী মানেই চাকরানী, স্ত্রী মানেই দাসী। শিখবে, স্ত্রীর দায়িত্ব স্বামী এবং স্বামীর আত্মীয়স্বজনকে সেবা করা। স্বামীর অনুমতি ছাড়া ঘরের বাইরে না বেরোনো। নিজের ইচ্ছে ছুড়ে ফেলা, নিজের কাজ পণ্ড করা, নিজের জীবন বিসর্জন দেওয়া।
হিরো আলম ওপর অভিযোগ করেন প্রবাসী লেখিকা। তার ভাষ্য, জনগণকে হিরো আলম শেখাচ্ছেন , স্বামী পরকীয়া করলেও স্ত্রীকে পতিব্রতা স্ত্রী হিসেবে স্বামীর আদেশ নির্দেশ পালন করতে হবে, কারণ স্বামী হলো প্রভু! আর স্ত্রী জিনিসটি শুধু দাসী নয়, ক্রীতদাসী।
সবশেষ তিনি লিখেছেন, রিয়া মনি, আমার বিশ্বাস, এই নোংরা নারীবিদ্বেষী সমাজে পাছে লোকে কিছু বলের তোয়াক্কা না করে নিজের পরিচয় নিয়ে, নিজের যোগ্যতায় মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।
আরটিভি/এএ/এস