‘ওরে নীল দরিয়া’ দর্শক জরিপে স্বর্ণযুগের সেরা বাংলা নাগরিক গান
পঞ্চকবি পরবর্তী বিশ শতকের ৪০ থেকে ৭০ দশক সময়কাল বাংলা নাগরিক গানের স্বর্ণযুগ। এই স্বর্ণযুগের বাছাই করা কিছু গান সঠিক তথ্য ও অবিকৃত সুরে নবীন ও প্রবীণ উভয় প্রজন্মের কাছে নতুন করে উপস্থাপনা এবং স্বর্ণযুগের সেরা গান বাছাইয়ের লক্ষ্যে “দর্শক জরিপে স্বর্ণযুগের সেরা বাংলা নাগরিক গানের সন্ধানে”শিরোনাম নিয়ে আরটিভির সংগীত বিষয়ক অনুষ্ঠান ‘এই রাত তোমার আমার’ প্রচার করা হয়।
প্রথম পর্বে ৪০ দশকের ৪০টি, ৫০ দশকের ৬০টি, ৬০ ও ৭০ দশকের ১০০টি করে মোট ৩০০টি গান প্রচারিত হয় দেশের প্রতিষ্ঠিত ও প্রতিশ্রুতিশীল বিভিন্ন শিল্পীর কণ্ঠে। এরপর দ্বিতীয় পর্বে দর্শকদের এসএমএস থেকে প্রাপ্ত প্রতিটি দশকের ১০টি করে মোট ৪০টি গান প্রচারিত হয়।
এরপর গত ২৭ অক্টোবর আরটিভির বেঙ্গল মাল্টিমিডিয়া স্টুডিওতে আয়োজন করা হয় স্বর্ণযুগের সেরা ১০টি গান নিয়ে গ্র্যান্ড ফিনালে। এতে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী ফাহিম হোসেন চৌধুরী, খায়রুল আনাম শাকিল, মৌটুসী, আতিক হাসান, প্রিয়াংকা গোপ, সাব্বির জামান, সমরজিৎ রায়, নন্দিতা, হৈমন্তী রক্ষিত ও বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী।
দর্শকদের এসএমএস এর ভিত্তিতে চূড়ান্তভাবে যে ১০টি গান নির্বাচিত হয় ১. ওরে নীল দরিয়া (গীতিকার: মুকুল চৌধুরী, সুরকার: আলম খান, প্রথম শিল্পী: আব্দুল জব্বার)। ২. একি সোনার আলোয় (গীতিকার: খান আতাউর রহমান, সুরকার: খান আতাউর রহমান, প্রথম শিল্পী: সাবিনা ইয়াসমিন)। ৩. আমার স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা (গীতিকার: গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার, সুরকার: রবীন চট্টোপাধ্যায়, প্রথম শিল্পী: শ্যামল মিত্র)। ৪. দুঃখ আমার বাসর রাতের পালংক (গীতিকার: মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান, সুরকার: সত্য সাহা, প্রথম শিল্পী: সাবিনা ইয়াসমিন)। ৫. আমি বনফুল গো (গীতিকার: প্রণব রায়, সুরকার: কমল দাশগুপ্ত, প্রথম শিল্পী: কানন দেবী)। ৬. কতদিন দেখিনি তোমায় (গীতিকার: প্রণব রায়, সুরকার: কমল দাশগুপ্ত, প্রথম শিল্পী: কমল দাশগুপ্ত)। ৭. তোমারে লেগেছে এত যে ভালো (গীতিকার: কে জি মোস্তফা, সুরকার: রবীন ঘোষ, প্রথম শিল্পী: তালাত মাহমুদ)। ৮. এনেছি আমার শত জনমের প্রেম (গীতিকার: মোহিনী চৌধুরী, সুরকার: শৈলেশ দত্তগুপ্ত, প্রথম শিল্পী: গৌরীকেদার ভট্টাচার্য)। ৯. মধুমালতি ডাকে আয় (গীতিকার: প্রণব রায়, সুরকার: রবীন চট্টোপাধ্যায়, প্রথম শিল্পী: সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়)। ১০. মুছে যাওয়া দিনগুলি (গীতিকার: গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার, সুরকার: হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, প্রথম শিল্পী: হেমন্ত মুখোপাধ্যায়)।
এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দেশের সংগীত ও চলচ্চিত্র মাধ্যমের স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গ যাদের মধ্যে অন্যতম চিত্রনায়ক ফারুক, সংগীত ব্যক্তিত্ব আজাদ রহমান, আলম খান, শেখ সাদী খান, গীতিকার কে জি মোস্তফা, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, সংগীতশিল্পী মিতালী মুখার্জী, ফাতেমা তুজ জোহরা, সাদিয়া আফরিন মল্লিক প্রমুখ।
উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত এই গ্র্যান্ড ফিনালেতে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন আরটিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সৈয়দ আশিক রহমান। এছাড়া সর্বোচ্চ এসএমএস প্রেরণকারীদের মধ্য থেকে তিনজনকে পুরস্কৃত করা হয়। ধারণকৃত অনুষ্ঠানটি গত ৩০ অক্টোবর আরটিভিতে প্রচারিত হয়। আজ (৯ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টায় অনুষ্ঠানটি আরটিভিতে পুনঃপ্রচার করা হয়।
এই অনুষ্ঠানে প্রচারিত মোট ৩০০ গানের ভিডিও চিত্র পাওয়া যাবে www.facebook.com/eiraattomar/ যা সমৃদ্ধ বাংলা গানের একটি আর্কাইভ হিসেবে বিবেচিত হবে। এই অনুষ্ঠানটির মধ্য দিয়ে একদিকে যেমন স্বর্ণযুগের কালজয়ী বাংলা গানগুলোকে নতুনভাবে পাদপ্রদীপের আলোয় নিয়ে আসার চেষ্টা করা হয়েছে, তেমনি আবার পঞ্চকবি পরবর্তী কালজয়ী সংগীত স্রষ্টাদের নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার মধ্য দিয়ে তাদের প্রতি নিবেদন করা হয়েছে শ্রদ্ধার্ঘ্য।
আরও পড়ুন :
এম/পি
মন্তব্য করুন